ভাসানচর সম্পূর্ণ নিরাপদ, স্থানান্তর জোরপূর্বক নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
যুগান্তর রিপোর্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:৫৬:০০ | অনলাইন সংস্করণ
ভাসানচর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্বেগের পর এ বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সরকার পুনরায় গুরুত্বারোপ করছে যে, ভাসানচর সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং বসবাসের উপযোগী। ৩০ বছর বয়সী এই দ্বীপে স্বাস্থ্যসেবা, পানি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রভৃতি রয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয়নি। দ্বীপটিতে বসবাসের উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের আরেকটি দলকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পর বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বার বার বলে আসছি, সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারেই। এ কারণে বাংলাদেশের ওপর অযৌক্তিক ও অন্যায্য চাপ প্রয়োগ না করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক এনজিও, মানবিক সহায়তা প্রদানকারী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উচিত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে ভয়ানক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে, তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। জাতিসংঘের উচিত মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং সেখানে প্রত্যাবাসন প্রস্তুতি দেখার জন্য একটি কারিগরি ও সুরক্ষা দল পাঠানো।
এতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার পর অসংখ্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুসারে, কক্সবাজার থেকে প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ এবং দ্বিতীয় দফায় গত ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, যদিও ভাসানচরকে কেন্দ্র করে এবং স্থানান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে বানোয়াট ও ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে হতাশ সরকার। এটা মনোবেদনার যে, বাংলাদেশের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত না জানিয়ে একটি অংশ মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করছে। বাংলাদেশ সরকার এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে এবং এক্ষেত্রে জাতিসংঘের অংশগ্রহণ বিষয়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
এতে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের নির্বাচন এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িত নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃশ্যমান কর্মতৎপরতার প্রত্যাশায় রয়েছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা মনে রাখতে হবে যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। বাংলাদেশ কেবলমাত্র মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য যে কার্যক্রমই নেয়া হোক, তা পুরোপুরি অস্থায়ী। রোহিঙ্গারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় এবং সবার উচিত হবে সেদিকে লক্ষ্য করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ভাসানচর সম্পূর্ণ নিরাপদ, স্থানান্তর জোরপূর্বক নয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ভাসানচর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্বেগের পর এ বিষয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সরকার পুনরায় গুরুত্বারোপ করছে যে, ভাসানচর সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং বসবাসের উপযোগী। ৩০ বছর বয়সী এই দ্বীপে স্বাস্থ্যসেবা, পানি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রভৃতি রয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয়নি। দ্বীপটিতে বসবাসের উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের আরেকটি দলকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পর বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব কথা জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা বার বার বলে আসছি, সমস্যা মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং এর সমাধানও মিয়ানমারেই। এ কারণে বাংলাদেশের ওপর অযৌক্তিক ও অন্যায্য চাপ প্রয়োগ না করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক এনজিও, মানবিক সহায়তা প্রদানকারী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উচিত, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যে ভয়ানক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে, তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। জাতিসংঘের উচিত মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং সেখানে প্রত্যাবাসন প্রস্তুতি দেখার জন্য একটি কারিগরি ও সুরক্ষা দল পাঠানো।
এতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার পর অসংখ্য সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসনচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। পরিকল্পনা অনুসারে, কক্সবাজার থেকে প্রথম দফায় গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ এবং দ্বিতীয় দফায় গত ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, যদিও ভাসানচরকে কেন্দ্র করে এবং স্থানান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে বানোয়াট ও ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে হতাশ সরকার। এটা মনোবেদনার যে, বাংলাদেশের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত না জানিয়ে একটি অংশ মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করছে। বাংলাদেশ সরকার এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে পূর্বের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে এবং এক্ষেত্রে জাতিসংঘের অংশগ্রহণ বিষয়ে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
এতে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের নির্বাচন এখন শেষ হয়ে গেছে। আমরা মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ও নিপীড়িত নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃশ্যমান কর্মতৎপরতার প্রত্যাশায় রয়েছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটা মনে রাখতে হবে যে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। বাংলাদেশ কেবলমাত্র মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তাদেরকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য যে কার্যক্রমই নেয়া হোক, তা পুরোপুরি অস্থায়ী। রোহিঙ্গারা তাদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় এবং সবার উচিত হবে সেদিকে লক্ষ্য করে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।