রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়াসহ পাঁচটি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার লোটে প্যালেস হোটেলে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
৫ প্রস্তাবগুলো হলো-
১. রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান।
২. আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়াকে সমর্থন করাসহ আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং জাতীয় আদালতের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
৩. জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত দমন-পীড়ন বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
৪. আসিয়ানের পাঁচ-দফা ঐক্যমত মেনে চলার অঙ্গীকার পূরণে মিয়ানমারকে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানানো।
৫. মিয়ানমার যাতে বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকারে রাজি হয় সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গত মাসে আমরা দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছি। তাদের (রোহিঙ্গা) একজনকেও তাদের ঘরে ফিরে যেতে দেখিনি।’
এ সময় মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আরাকানে, বর্তমানে যা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য হিসেবে পরিচিত, অষ্টম শতক থেকেই রোহিঙ্গারা বসবাস করে আসছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জনের পর সেখানে নতুন সরকার রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে এবং তাদের ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে। এরপর ১৯৮২ সালে সেখানে নতুন নাগরিকত্ব আইন পাস হয় এবং জাতিগোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গাদেরকে তাতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৫২ সালে যখন ইউ নু প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখনও তার মন্ত্রিসভায় দুইজন রোহিঙ্গা মন্ত্রী এবং তখনকার পার্লামেন্টে ছয়জন রোহিঙ্গা এমপি ছিলেন।’
মিয়ানমারের ওইসব রোহিঙ্গা মন্ত্রী ও এমপিদের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ থেকে প্রমাণ হয় রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক।’
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়া এবং প্রতিবছর শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নবজাতকের জন্ম নেওয়ার তথ্যও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয়ভাবে তাদের শক্তিশালী মানবিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ। নিজ দেশে একটি ভালো এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষায় থাকার এই সময়ে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সংহতি প্রয়োজন।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব
যুগান্তর প্রতিবেদন
২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২:১৪:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে তাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়াসহ পাঁচটি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার লোটে প্যালেস হোটেলে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
৫ প্রস্তাবগুলো হলো-
১. রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান।
২. আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়াকে সমর্থন করাসহ আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং জাতীয় আদালতের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
৩. জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত দমন-পীড়ন বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
৪. আসিয়ানের পাঁচ-দফা ঐক্যমত মেনে চলার অঙ্গীকার পূরণে মিয়ানমারকে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানানো।
৫. মিয়ানমার যাতে বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকারে রাজি হয় সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গত মাসে আমরা দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছি। তাদের (রোহিঙ্গা) একজনকেও তাদের ঘরে ফিরে যেতে দেখিনি।’
এ সময় মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আরাকানে, বর্তমানে যা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য হিসেবে পরিচিত, অষ্টম শতক থেকেই রোহিঙ্গারা বসবাস করে আসছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জনের পর সেখানে নতুন সরকার রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে এবং তাদের ভিন্ন জাতিগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে। এরপর ১৯৮২ সালে সেখানে নতুন নাগরিকত্ব আইন পাস হয় এবং জাতিগোষ্ঠী হিসেবে রোহিঙ্গাদেরকে তাতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অথচ ১৯৫২ সালে যখন ইউ নু প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখনও তার মন্ত্রিসভায় দুইজন রোহিঙ্গা মন্ত্রী এবং তখনকার পার্লামেন্টে ছয়জন রোহিঙ্গা এমপি ছিলেন।’
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়া এবং প্রতিবছর শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নবজাতকের জন্ম নেওয়ার তথ্যও তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয়ভাবে তাদের শক্তিশালী মানবিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ। নিজ দেশে একটি ভালো এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষায় থাকার এই সময়ে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সংহতি প্রয়োজন।’
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023