শিক্ষা হবে ‘মেগা প্রকল্প’
jugantor
শিক্ষা হবে ‘মেগা প্রকল্প’

  সংসদ রিপোর্টার  

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৫৪:১৬  |  অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, মেগা প্র্রকল্পগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে শিক্ষা মেগা প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। এ খাতে আর্থিক বরাদ্দ বেশি পাওয়া যাবে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাশের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

নওগাঁ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাশ হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যের সমালোচনার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র‌্যাংকিংয়ের কথা তো চিন্তাই করা হতো না। গত কয়েক বছর ধরে র‌্যাংকিংয়ের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। যেসব ফ্যাক্টরের ওপর র‌্যাংকিং নির্ভর করে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন সেদিকে মনোযোগী হয়েছে।

তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে দেখছি, আমাদের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও র‌্যাংকিংয়ে আগের তুলনায় উপরের দিকে উঠে আসছে; কিন্তু আমাদের যেতে হবে অনেক অনেক দূর। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি-টেন্ডারবাজির কথা বলা হয়েছে। আগে অন্য সরকারের সময় কী অবস্থা ছিল, তা আমরা জানি। নিত্যদিন হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সময়ে এসেই শিক্ষাঙ্গন শান্ত, সেশনজট নেই। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দিয়ে কোনো কারিকুলাম তৈরি হয় না। কারিকুলাম নিয়ে যদি কেউ মিথ্যাচার, অপপ্রচার করে, সেই দায় কিন্তু সেই অপশক্তির, সেই দায় নিশ্চয়ই কারিকুলামের নয়।

তিনি বলেন, বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যাই বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়- এসব বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের সময়েই হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে যেগুলো প্রয়োজন হবে অবশ্যই সেগুলো স্থাপিত হবে।

ডা. দীপু মনি বলেন, আর্থিক বরাদ্দ কমের কথা বলেছেন, আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্যেও যতদূর সম্ভব আমরা দিচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর হাতেই আজ যেমন মেগা প্রকল্প হচ্ছে, এগুলো জরুরি। এগুলো যখন হয়ে যাবে তারপর শিক্ষা আমাদের মেগা প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। আরও অনেক বেশি বরাদ্দ আমরা পাব।

তিনি আরও বলেন, শ্রীলংকার চেয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে খারাপ বলা হয়েছে। বহুদিন আগে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন সেই সময় তাদের শিক্ষিতের হার শতভাগ ছিল। সেই শ্রীলংকা আজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আর বাংলাদেশকে এক সময় অন্যায়ভাবে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। পার্থক্যটা এখানেই।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে যারা কান্নাকাটি করেন, তাদের সবাইকে একটু বলতে চাই, আমাদেরই সন্তানেরা একেবারে গ্রাম-গঞ্জ থেকে উঠে গিয়ে বিশ্বের নানান জায়গায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার নিয়ে আসছে। তা যেন আমরা মনে রাখি। একটু খোঁজ-খবর নিয়ে যদি আমরা বলি, তাহলে ভালো হয়। সনদ বিক্রির তথ্য এলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে বিলের সমালোচনা করে সংসদে কথা বলেন বিরোধী দলের সদস্যরা। জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় দেওয়া হচ্ছে। এসব যায়গায় লেখাপড়া হয় না, এরা উচ্চমূল্যে সার্টিফিকেট বিক্রি করছে। তিনি বলেন, শিক্ষা কারো কাছে একটি ব্যবসা কেন্দ্র। যেমন ধনী লোকেরা ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন, তেমনি অনেকে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে মুনাফা করছে। এতে শিক্ষার মান বাড়ছে না। বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

একই দলের ব্যারিস্টার শামিম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশে; কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান বাড়ছে না। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষা।

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা গঠনমূলক সমালোচনায় ভয় পায়। অথচ তারা বিরোধী দলের সমালোচনা আমলে নিলে দেশের ও সরকারের জন্যই মঙ্গল হবে।

শিক্ষা হবে ‘মেগা প্রকল্প’

 সংসদ রিপোর্টার 
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৫৪ পিএম  |  অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, মেগা প্র্রকল্পগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে শিক্ষা মেগা প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। এ খাতে আর্থিক বরাদ্দ বেশি পাওয়া যাবে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাশের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

নওগাঁ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাশ হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি পাশের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়।  

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা। তাদের সেই প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। 

বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সদস্যের সমালোচনার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র‌্যাংকিংয়ের কথা তো চিন্তাই করা হতো না। গত কয়েক বছর ধরে র‌্যাংকিংয়ের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। যেসব ফ্যাক্টরের ওপর র‌্যাংকিং নির্ভর করে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন সেদিকে মনোযোগী হয়েছে।  

তিনি বলেন, গত দুই বছর ধরে দেখছি, আমাদের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও র‌্যাংকিংয়ে আগের তুলনায় উপরের দিকে উঠে আসছে; কিন্তু আমাদের যেতে হবে অনেক অনেক দূর। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি-টেন্ডারবাজির কথা বলা হয়েছে। আগে অন্য সরকারের সময় কী অবস্থা ছিল, তা আমরা জানি। নিত্যদিন হত্যাকাণ্ড আমরা দেখেছি।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সময়ে এসেই শিক্ষাঙ্গন শান্ত, সেশনজট নেই। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উসকানি দিয়ে কোনো কারিকুলাম তৈরি হয় না। কারিকুলাম নিয়ে যদি কেউ মিথ্যাচার, অপপ্রচার করে, সেই দায় কিন্তু সেই অপশক্তির, সেই দায় নিশ্চয়ই কারিকুলামের নয়।

তিনি বলেন, বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলছেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যাই বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়- এসব বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের সময়েই হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে যেগুলো প্রয়োজন হবে অবশ্যই সেগুলো স্থাপিত হবে।  

ডা. দীপু মনি বলেন, আর্থিক বরাদ্দ কমের কথা বলেছেন, আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্যেও যতদূর সম্ভব আমরা দিচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর হাতেই আজ যেমন মেগা প্রকল্প হচ্ছে, এগুলো জরুরি। এগুলো যখন হয়ে যাবে তারপর শিক্ষা আমাদের মেগা প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। আরও অনেক বেশি বরাদ্দ আমরা পাব।  

তিনি আরও বলেন, শ্রীলংকার চেয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে খারাপ বলা হয়েছে। বহুদিন আগে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, তখন সেই সময় তাদের শিক্ষিতের হার শতভাগ ছিল। সেই শ্রীলংকা আজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আর বাংলাদেশকে এক সময় অন্যায়ভাবে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। পার্থক্যটা এখানেই।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার মান নিয়ে যারা কান্নাকাটি করেন, তাদের সবাইকে একটু বলতে চাই, আমাদেরই সন্তানেরা একেবারে গ্রাম-গঞ্জ থেকে উঠে গিয়ে বিশ্বের নানান জায়গায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পুরস্কার নিয়ে আসছে। তা যেন আমরা মনে রাখি। একটু খোঁজ-খবর নিয়ে যদি আমরা বলি, তাহলে ভালো হয়। সনদ বিক্রির তথ্য এলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।  

এর আগে বিলের সমালোচনা করে সংসদে কথা বলেন বিরোধী দলের সদস্যরা। জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, দেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় দেওয়া হচ্ছে। এসব যায়গায় লেখাপড়া হয় না, এরা উচ্চমূল্যে সার্টিফিকেট বিক্রি করছে। তিনি বলেন, শিক্ষা কারো কাছে একটি ব্যবসা কেন্দ্র। যেমন ধনী লোকেরা ব্যাংকে বিনিয়োগ করেন, তেমনি অনেকে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে মুনাফা করছে। এতে শিক্ষার মান বাড়ছে না। বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। 

একই দলের ব্যারিস্টার শামিম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নতুন নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে দেশে; কিন্তু শিক্ষার গুণগত মান বাড়ছে না। দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষা। 

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা গঠনমূলক সমালোচনায় ভয় পায়। অথচ তারা বিরোধী দলের সমালোচনা আমলে নিলে দেশের ও সরকারের জন্যই মঙ্গল হবে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন