নির্বাচন সামনে রেখে অপশক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে: ডিসি
যুগান্তর প্রতিবেদন
২৮ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪১:২৬ | অনলাইন সংস্করণ
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দেশের জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো অপশক্তি যাতে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য এনজিওদের (বেসরকারি সেবা সংস্থা) সজাগ থাকতে হবে। এছাড়াও এনজিওদের টাকা কোথায় যায়, কারা সুবিধাভোগী সে ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
মঙ্গলবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ঢাকা জেলায় কার্যক্রম পরিচালনাকারী এনজিওদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়’ ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি দেশের দুস্থ মানুষকে ঈদবাজার করে দেওয়া এবং পরিবেশের উন্নয়নে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে এনজিওদের উৎসাহিত করেন। পাশাপাশি ঢাকায় পরিচালিত এনজিওদের সম্ভাব্য যে কোনো সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ঢাকা জেলা এনজিও পরিষদ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সংগঠনের সমন্বয়ক বজলুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী হাফিজুল আমিন এবং আরবান পুওরের সমন্বয়ক খোন্দকার রেবেকা সামিয়াসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা।
ডিসি মমিনুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সবগুলো সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় দেশ এবং সংস্থা আমাদের প্রশংসা করছে।
তিনি বলেন, চলতি বছরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সময়ে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এক্ষেত্রে তাদের কার্যক্রমে এনজিওরা যাতে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
ডিসি বলেন, আমরা প্রত্যেকেই বিবেকবান এবং শিক্ষিত। তাই আমরা সবাই মিলে চাই, বাংলাদেশে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। ‘কোনো উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তি যাতে আপনাদের (এনজিও) ব্যবহার করতে না পারে বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি’।
তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে আমরা আগুন সন্ত্রাস দেখেছি। রাস্তাঘাট রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো হয়েছে। ওই সময়ে পুরো দেশটাই অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব দেখেছি। আমরা বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি আর চাই না। জেলা প্রশাসক বলেন, কোনো অপপ্রচার যাতে উন্নয়ন ব্যাহত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এনজিওদের মানবিক সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। অনেকে খারাপ অবস্থায় আছে। রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকা জেলা প্রশাসনের আওতায় ৩২৬টি এনজিও কাজ করছে। আপনারা প্রতি এনজিও থেকে একজনের ঈদ করে দিতে পারেন। এতে ৩২৬ জনের বাজার হয়ে যাবে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন থেকে ১শ লোককে আমরা বাজার করে দেব। এভাবে সহায়তা নিয়ে সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে সবাই ঈদের আনন্দ করতে পারবে।
মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আপনারা প্রতিটি এনজিও থেকে জেলাপ্রশাসনকে ৩ জন করে স্বেচ্ছাসেবক দেবেন। তাতে ৯শ স্বেচ্ছাসেবক হয়। জেলা প্রশাসন থেকে তাদের ড্রেস দেওয়া হবে। এরপর সবাই মিলে মানুষকে সাহায্য করা, পরিবেশ উন্নয়নে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে।
এ সময়ে এনজিওদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান ডিসি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৩ মাসে এনজিওদের কাজে গতি এসেছে। তবে আরও গতি বাড়ানো দরকার। এ সময় এনজিওদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। আর এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক। এছাড়াও উপস্থিতি এনজিওদের নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী হাফিজুল আমিন বলেন, দেশে বর্তমানে ৭৮ হাজার এনজিও কাজ করছে। প্রতি বর্গকিলোমিটারে একটি এনজিও। সংখ্যায় এটি অনেক। এসব সংস্থাগুলো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত সহাস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে এনজিওদের ভূমিকা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এনজিওদের কাজে গতি আনতে আমরা জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সেতুবন্ধনের চেষ্টা করছি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
নির্বাচন সামনে রেখে অপশক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে: ডিসি
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দেশের জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো অপশক্তি যাতে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য এনজিওদের (বেসরকারি সেবা সংস্থা) সজাগ থাকতে হবে। এছাড়াও এনজিওদের টাকা কোথায় যায়, কারা সুবিধাভোগী সে ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
মঙ্গলবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ঢাকা জেলায় কার্যক্রম পরিচালনাকারী এনজিওদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়’ ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি দেশের দুস্থ মানুষকে ঈদবাজার করে দেওয়া এবং পরিবেশের উন্নয়নে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে এনজিওদের উৎসাহিত করেন। পাশাপাশি ঢাকায় পরিচালিত এনজিওদের সম্ভাব্য যে কোনো সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ঢাকা জেলা এনজিও পরিষদ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সংগঠনের সমন্বয়ক বজলুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী হাফিজুল আমিন এবং আরবান পুওরের সমন্বয়ক খোন্দকার রেবেকা সামিয়াসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা।
ডিসি মমিনুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সবগুলো সূচকে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় দেশ এবং সংস্থা আমাদের প্রশংসা করছে।
তিনি বলেন, চলতি বছরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন সময়ে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এক্ষেত্রে তাদের কার্যক্রমে এনজিওরা যাতে ব্যবহৃত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
ডিসি বলেন, আমরা প্রত্যেকেই বিবেকবান এবং শিক্ষিত। তাই আমরা সবাই মিলে চাই, বাংলাদেশে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক। ‘কোনো উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক শক্তি যাতে আপনাদের (এনজিও) ব্যবহার করতে না পারে বিষয়টি আমি গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি’।
তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালে আমরা আগুন সন্ত্রাস দেখেছি। রাস্তাঘাট রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানো হয়েছে। ওই সময়ে পুরো দেশটাই অগ্নিগর্ভে পরিণত হয়েছিল। এরপর ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব দেখেছি। আমরা বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি আর চাই না। জেলা প্রশাসক বলেন, কোনো অপপ্রচার যাতে উন্নয়ন ব্যাহত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
এনজিওদের মানবিক সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। অনেকে খারাপ অবস্থায় আছে। রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ঢাকা জেলা প্রশাসনের আওতায় ৩২৬টি এনজিও কাজ করছে। আপনারা প্রতি এনজিও থেকে একজনের ঈদ করে দিতে পারেন। এতে ৩২৬ জনের বাজার হয়ে যাবে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন থেকে ১শ লোককে আমরা বাজার করে দেব। এভাবে সহায়তা নিয়ে সামর্থ্যবানরা এগিয়ে এলে সবাই ঈদের আনন্দ করতে পারবে।
মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আপনারা প্রতিটি এনজিও থেকে জেলাপ্রশাসনকে ৩ জন করে স্বেচ্ছাসেবক দেবেন। তাতে ৯শ স্বেচ্ছাসেবক হয়। জেলা প্রশাসন থেকে তাদের ড্রেস দেওয়া হবে। এরপর সবাই মিলে মানুষকে সাহায্য করা, পরিবেশ উন্নয়নে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা যাবে।
এ সময়ে এনজিওদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান ডিসি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৩ মাসে এনজিওদের কাজে গতি এসেছে। তবে আরও গতি বাড়ানো দরকার। এ সময় এনজিওদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। আর এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক। এছাড়াও উপস্থিতি এনজিওদের নিয়ে অনুষ্ঠানে একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাজী হাফিজুল আমিন বলেন, দেশে বর্তমানে ৭৮ হাজার এনজিও কাজ করছে। প্রতি বর্গকিলোমিটারে একটি এনজিও। সংখ্যায় এটি অনেক। এসব সংস্থাগুলো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত সহাস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে এনজিওদের ভূমিকা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এনজিওদের কাজে গতি আনতে আমরা জেলাপ্রশাসনের সঙ্গে সেতুবন্ধনের চেষ্টা করছি।