ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটের ফেরি পারাপারে চলছে নৈরাজ্য, লুণ্ঠন আর চাঁদাবাজির খেলা। রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে থাকার ফলে স্বাভাবিক নিয়মের চেয়েও অস্বাভাবিক হারে যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ফলে দুই পারের শত শত যাত্রী ও যানবাহন প্রতিদিন চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের শিকার হচ্ছেন। জোর যার মুল্লুক তার এ নিয়মেই চলছে ভোলা-লক্ষীপুর নৌ রুটের ফেরি পারাপার। এলাকাবাসী জানায়, কিছুদিন আগেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হতো জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি চলাচল করতে হয়। কিন্তু এখন আর সেই কথা লেখা হয় না। এখন চাঁদাবাজদের নির্যাতনের কাহিনী লিখে শেষ করা যায় না। অনুসন্ধানকালে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট এলাকার নানা শ্রেণীপেশার মানুষ ঘাটের গডফাদারদের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর বহু কাহিনী তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, ফেরিঘাটের ফড়িয়ারা সাধারণ যাত্রীদের কাছে দানবের চেয়েও ভয়ংকর। এখানে কয়েকটি ভাগে চাঁদাবাজি হয়। ভোলা পারের ঘাটের চাঁদাবাজদের গডফাদার বসে থাকে জেলা সদরে। সেখান থেকে বসেই উত্তাল নদীর পারে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির নাটাই ঘোরানো হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেরিঘাটে প্রথম চাঁদাবাজিটি হয় পরিবহনের ওপর। বিআইডব্লিউটিএর নির্ধারিত ভাড়ার পরও প্রতিটি ট্রাক ও বাসে কমপক্ষে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে গডফাদারের নিয়োজিত ক্যাডারের হাতে তুলে দিতে হয়। স্থানীয়রা জানান, নিয়োজিত এ ক্যাডারের নাম হচ্ছে কামাল। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত কামাল প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্যার-চাঁদা লই এই কথা হাচানা একবারই মিথ্যা কথা। আমি শুধু মসজিদের জন্য দান খয়রাত তুলি। এবার আসা যাক চাঁদাবাজির দ্বিতীয় ধাপের কথায়। ফেরিঘাটে রাতের নিরাপত্তার নামে শুরু হয় আরেক চাঁদাবাজির মচ্ছব। রাতের শিপ্টে চাঁদা তোলার দায়িত্বে রয়েছে, মিন্টু। ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী শ্রমিক ও ট্রাক ড্রাইভাররা জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে নিরাপত্তা প্রহরীর নাম করে ওই মিন্টু বাস-ট্রাকে রীতিমতো ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। কেউ বাধা দিলে তার ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা অঞ্চলের কমার্শিয়াল এসিসট্যান্ট ম্যানেজার শিহাবউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনাটি এখন নিত্যদিনের। কিন্তু এখানে আমার কিংবা আমার দফতরের করার কিছুই নেই। পুলিশের উপ-পরিদর্শক বশির আহমেদ বলেন, এখন ইলিশা ফেরিঘাট চাঁদাবাজ মুক্ত।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা অঞ্চলের কমার্শিয়াল এসিসট্যান্ট ম্যানেজার শিহাবউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনাটি এখন নিত্যদিনের। কিন্তু এখানে আমার কিংবা আমার দফতরের করার কিছুই নেই। পুলিশের উপ-পরিদর্শক বশির আহমেদ বলেন, এখন ইলিশা ফেরিঘাট চাঁদাবাজ মুক্ত।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য
ভোলা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি
২৫ মে ২০১৫, ১২:০০ এএম |
ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটের ফেরি পারাপারে চলছে নৈরাজ্য, লুণ্ঠন আর চাঁদাবাজির খেলা। রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে থাকার ফলে স্বাভাবিক নিয়মের চেয়েও অস্বাভাবিক হারে যাত্রীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। ফলে দুই পারের শত শত যাত্রী ও যানবাহন প্রতিদিন চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের শিকার হচ্ছেন। জোর যার মুল্লুক তার এ নিয়মেই চলছে ভোলা-লক্ষীপুর নৌ রুটের ফেরি পারাপার। এলাকাবাসী জানায়, কিছুদিন আগেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হতো জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি চলাচল করতে হয়। কিন্তু এখন আর সেই কথা লেখা হয় না। এখন চাঁদাবাজদের নির্যাতনের কাহিনী লিখে শেষ করা যায় না। অনুসন্ধানকালে ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট এলাকার নানা শ্রেণীপেশার মানুষ ঘাটের গডফাদারদের ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর বহু কাহিনী তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, ফেরিঘাটের ফড়িয়ারা সাধারণ যাত্রীদের কাছে দানবের চেয়েও ভয়ংকর। এখানে কয়েকটি ভাগে চাঁদাবাজি হয়। ভোলা পারের ঘাটের চাঁদাবাজদের গডফাদার বসে থাকে জেলা সদরে। সেখান থেকে বসেই উত্তাল নদীর পারে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির নাটাই ঘোরানো হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফেরিঘাটে প্রথম চাঁদাবাজিটি হয় পরিবহনের ওপর। বিআইডব্লিউটিএর নির্ধারিত ভাড়ার পরও প্রতিটি ট্রাক ও বাসে কমপক্ষে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে গডফাদারের নিয়োজিত ক্যাডারের হাতে তুলে দিতে হয়। স্থানীয়রা জানান, নিয়োজিত এ ক্যাডারের নাম হচ্ছে কামাল। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত কামাল প্রতিবেদককে বলেন, ‘স্যার-চাঁদা লই এই কথা হাচানা একবারই মিথ্যা কথা। আমি শুধু মসজিদের জন্য দান খয়রাত তুলি। এবার আসা যাক চাঁদাবাজির দ্বিতীয় ধাপের কথায়। ফেরিঘাটে রাতের নিরাপত্তার নামে শুরু হয় আরেক চাঁদাবাজির মচ্ছব। রাতের শিপ্টে চাঁদা তোলার দায়িত্বে রয়েছে, মিন্টু। ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ও ভুক্তভোগী শ্রমিক ও ট্রাক ড্রাইভাররা জানিয়েছেন, রাতের আঁধারে নিরাপত্তা প্রহরীর নাম করে ওই মিন্টু বাস-ট্রাকে রীতিমতো ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। কেউ বাধা দিলে তার ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা অঞ্চলের কমার্শিয়াল এসিসট্যান্ট ম্যানেজার শিহাবউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনাটি এখন নিত্যদিনের। কিন্তু এখানে আমার কিংবা আমার দফতরের করার কিছুই নেই। পুলিশের উপ-পরিদর্শক বশির আহমেদ বলেন, এখন ইলিশা ফেরিঘাট চাঁদাবাজ মুক্ত।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি’র ভোলা অঞ্চলের কমার্শিয়াল এসিসট্যান্ট ম্যানেজার শিহাবউদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনাটি এখন নিত্যদিনের। কিন্তু এখানে আমার কিংবা আমার দফতরের করার কিছুই নেই। পুলিশের উপ-পরিদর্শক বশির আহমেদ বলেন, এখন ইলিশা ফেরিঘাট চাঁদাবাজ মুক্ত।