কুষ্টিয়া, ৭ জানুয়ারি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অধিক সন্ত্রাস কবলিত কুষ্টিয়া জেলায় চরমপন্থী-সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবাণতি ঘটছে। রক্তাক্ত এই জনপদে গত এক বছরে ১১৭টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে খুনের শিকার হয়েছেন ৩৬ জন নারী। ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ২০ জন নারী। কুষ্টিয়ার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবণতি ঘটলেও এ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ হত্যা এবং অপরাধ কর্মকান্ডের আসামিরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
যৌতুকের কারণে, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে, নির্যাতনের পর হত্যা, কিম্বা ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকান্ড থেকে বাদ পড়েনি নিস্পাপ শিশু, বৃদ্ধা কিংবা যুবতী কেউ। আবার এসব নারীদের মধ্যে কেউ কেউ হয়েছেন অপরাধীদের লালসার শিকার। হত্যাকান্ডের পর শরীরের বিভিন্ন অংশ খন্ড বিখন্ডের ঘটনাও রয়েছে।
গেল বছর জুড়ে চলেছে হত্যা-খুন এবং অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনা। খুনের হিংস্রতা, বর্বরতা, নৃশংসতা ও পৈশাচিকতায় হত বিহবল হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষ। মায়ের হাতে সন্তান খুন, ছেলের হাতে পিতা খুন, ভাইয়ের হাতে ভাই এমনকি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা খুনের মতো ঘটনা হরহামেশায় ঘটছে এ জেলায়। একের পর এক লোমহর্ষক ও নৃশংস হত্যাকান্ডের কারণে সমগ্র জেলা আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়। পুলিশ প্রশাসন খুন ঠেকাতে অনেকটা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শ্রমিক, চালক-মালিক, অজ্ঞাত ব্যক্তি, শিশু ও নারীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত হত্যা কান্ডের শিকার হচ্ছেন। এসব হত্যাকান্ডের মধ্যে একাধিক আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনাও রয়েছে। তবে এসব হত্যকান্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ। কুষ্টিয়ার আইন-শৃৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল দাবি করে পুলিশ সুপার জানান, সন্ত্রাসী-চরমপন্থীদের দমনে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।
বছরের শুরুতে পুলিশের হাতকড়া লাগানো অবস্থায় এক বিএনপি নেতা খুনের বিষয়টি যেমন দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত তেমনি বছরের শেষ দিকে জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়ায় জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালকে গুলি করে হত্যা আলোচিত হয়েছে। তবে অবাক করার বিষয় বছর জুড়ে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলেও হত্যাকারীদের বেশির ভাগ রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত১২ মাসে জেলায় ১১৭টি খুনে ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৯, ফেব্র“য়ারি মাসে ৯, মার্চ মাসে ১২, এপ্রিল মাসে ৭, মে মাসে ১১, জুন মাসে ১১, জুলাই মাসে ১৩, আগস্ট মাসে ১০, সেপ্টেম্বর মাসে ৯, অক্টোবর মাসে ১০, নভেম্বর মাসে ৯ এবং ডিসেম্বর মাসে ৭টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কুষ্টিয়ায় গেল বছর ১১৭ হত্যাকান্ড
কুষ্টিয়া, ৭ জানুয়ারি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অধিক সন্ত্রাস কবলিত কুষ্টিয়া জেলায় চরমপন্থী-সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। যে কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবাণতি ঘটছে। রক্তাক্ত এই জনপদে গত এক বছরে ১১৭টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে খুনের শিকার হয়েছেন ৩৬ জন নারী। ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ২০ জন নারী। কুষ্টিয়ার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবণতি ঘটলেও এ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তেমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। বেশিরভাগ হত্যা এবং অপরাধ কর্মকান্ডের আসামিরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে।
যৌতুকের কারণে, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে, নির্যাতনের পর হত্যা, কিম্বা ধর্ষণের পর হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকান্ড থেকে বাদ পড়েনি নিস্পাপ শিশু, বৃদ্ধা কিংবা যুবতী কেউ। আবার এসব নারীদের মধ্যে কেউ কেউ হয়েছেন অপরাধীদের লালসার শিকার। হত্যাকান্ডের পর শরীরের বিভিন্ন অংশ খন্ড বিখন্ডের ঘটনাও রয়েছে।
গেল বছর জুড়ে চলেছে হত্যা-খুন এবং অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের ঘটনা। খুনের হিংস্রতা, বর্বরতা, নৃশংসতা ও পৈশাচিকতায় হত বিহবল হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষ। মায়ের হাতে সন্তান খুন, ছেলের হাতে পিতা খুন, ভাইয়ের হাতে ভাই এমনকি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা খুনের মতো ঘটনা হরহামেশায় ঘটছে এ জেলায়। একের পর এক লোমহর্ষক ও নৃশংস হত্যাকান্ডের কারণে সমগ্র জেলা আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়। পুলিশ প্রশাসন খুন ঠেকাতে অনেকটা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শ্রমিক, চালক-মালিক, অজ্ঞাত ব্যক্তি, শিশু ও নারীসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত হত্যা কান্ডের শিকার হচ্ছেন। এসব হত্যাকান্ডের মধ্যে একাধিক আলোচিত হত্যাকান্ডের ঘটনাও রয়েছে। তবে এসব হত্যকান্ড বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ। কুষ্টিয়ার আইন-শৃৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল দাবি করে পুলিশ সুপার জানান, সন্ত্রাসী-চরমপন্থীদের দমনে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট তৎপর রয়েছে।
বছরের শুরুতে পুলিশের হাতকড়া লাগানো অবস্থায় এক বিএনপি নেতা খুনের বিষয়টি যেমন দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত তেমনি বছরের শেষ দিকে জগন্নাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়ায় জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বার অব কর্মাস ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালকে গুলি করে হত্যা আলোচিত হয়েছে। তবে অবাক করার বিষয় বছর জুড়ে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলেও হত্যাকারীদের বেশির ভাগ রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত১২ মাসে জেলায় ১১৭টি খুনে ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৯, ফেব্র“য়ারি মাসে ৯, মার্চ মাসে ১২, এপ্রিল মাসে ৭, মে মাসে ১১, জুন মাসে ১১, জুলাই মাসে ১৩, আগস্ট মাসে ১০, সেপ্টেম্বর মাসে ৯, অক্টোবর মাসে ১০, নভেম্বর মাসে ৯ এবং ডিসেম্বর মাসে ৭টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে।