বিপুল অঙ্কের টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টাকা পাচারের এমন খবর আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। তবে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উচ্চ পর্যায় থেকে সংকেত পেয়েছি। মুদ্রা পাচারকারীদের ব্যাপারে অনুসন্ধানও শুরু হয়েছে। অনেকের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি মনে করেন, সুসমন্বিতভাবে এক সঙ্গে সকলে কাজ করতে পারলে টাকা পাচার রোধ করা সম্ভব।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন বলা হয়, গত দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। যা দেশের বর্তমান মোট জাতীয় বাজেটের দেড়গুণ।
বেলা ১১টায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই উঠে আসে টাকা পাচারের প্রসঙ্গ।
সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, মানিল্ডারিং বিষয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এমন পদক্ষেপ নেয়া হবে যাতে কেউ মুদ্রা পাচার করার সুযোগ না পায়।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট, পুলিশ ও এনবিআরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচার রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে কাজ করছে। এ নিয়ে সর্বশেষ বুধবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে একটি বৈঠক করা হয়। সেখানে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে কিভাবে কাজ করা যায় তার একটি কর্মকৌশল ঠিক করা হয়েছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্তরালে মুদ্রা পাচারের একটি ঘটনা ইতিমধ্যে আমরা ধরতে পেরেছি। অত্যন্ত গোপনে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এটি মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- গত দশ বছরে দেশ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাচার হয়েছে। এ অবস্থায় আপনার পর্যবেক্ষণ কি এবং কারা এ অর্থ পাচার করেছে। জবাবে তিনি বলেন, টাকা পাচাররোধে আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু যত গভীরে যাচ্ছি ততই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা পিছপা হবো না।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসের রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য রয়েছে এনবিআরের। এর মধ্যে পাঁচ মাসে ৫৪ হাজার ৪০৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। নভেম্বরে রাজস্ব আদায়ে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা আমাদের উৎসাহিত করছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
টাকা পাচারের ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্বেগ
বিপুল অঙ্কের টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ উদ্বেগের কথা জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, টাকা পাচারের এমন খবর আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। তবে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উচ্চ পর্যায় থেকে সংকেত পেয়েছি। মুদ্রা পাচারকারীদের ব্যাপারে অনুসন্ধানও শুরু হয়েছে। অনেকের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি মনে করেন, সুসমন্বিতভাবে এক সঙ্গে সকলে কাজ করতে পারলে টাকা পাচার রোধ করা সম্ভব।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন বলা হয়, গত দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। যা দেশের বর্তমান মোট জাতীয় বাজেটের দেড়গুণ।
বেলা ১১টায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই উঠে আসে টাকা পাচারের প্রসঙ্গ।
সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, মানিল্ডারিং বিষয়ে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এমন পদক্ষেপ নেয়া হবে যাতে কেউ মুদ্রা পাচার করার সুযোগ না পায়।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট, পুলিশ ও এনবিআরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচার রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে কাজ করছে। এ নিয়ে সর্বশেষ বুধবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে একটি বৈঠক করা হয়। সেখানে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে কিভাবে কাজ করা যায় তার একটি কর্মকৌশল ঠিক করা হয়েছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্তরালে মুদ্রা পাচারের একটি ঘটনা ইতিমধ্যে আমরা ধরতে পেরেছি। অত্যন্ত গোপনে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি আমদানি করা হয়েছে। এটি মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- গত দশ বছরে দেশ থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাচার হয়েছে। এ অবস্থায় আপনার পর্যবেক্ষণ কি এবং কারা এ অর্থ পাচার করেছে। জবাবে তিনি বলেন, টাকা পাচাররোধে আমরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু যত গভীরে যাচ্ছি ততই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা পিছপা হবো না।
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসের রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য রয়েছে এনবিআরের। এর মধ্যে পাঁচ মাসে ৫৪ হাজার ৪০৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। নভেম্বরে রাজস্ব আদায়ে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটা আমাদের উৎসাহিত করছে।