মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় পুলিশি তল্লাশি
যুগান্তর রিপোর্ট
০৯ নভেম্বর ২০১৩, ০০:০০:০০ |
সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। শুক্রবার রাতে হোটেল সোনারগাঁও থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার এবং ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। আটকের পর তাদের রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেয়া হয়। সূত্র জানায়, সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্র্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ তিন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার আগে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা। এদিকে মওদুদকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রাতে গ্রেফতারের আগে সকালে অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দুই সপ্তাহে ছয় দিন হরতালের শেষে শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুশিয়ারি জানান। ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন। ওই আলোচনায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার যদি সমঝোতার পথে না আসে তাহলে আন্দোলনের কর্মসূচি তীব্রতর করা হবে। কেবল লাগাতার হরতাল কর্মসূচিতে তা সীমাবদ্ধ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৪-৯৫ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই সময় আপনাদের লাগাতার হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ আন্দোলনের কথা আমরা ভুলে যাইনি। আমরাও তা দেব। প্রয়োজনে গণকারফিউ কর্মসূচি দেয়া হবে। সরকারকে সমঝোতায় বাধ্য করতে হরতালের পর অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির হুমকির পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ মওদুদকে গ্রেফতার করে। অবশ্য এরই মধ্যে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডাকে দলটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সমঝোতা না হলে অভিযানে নামবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা- সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো পুলিশকে এমন নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিচের সারির কর্মকর্তাদের অভিযানের প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়। নির্দেশনা মোতাবেক, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর প্রস্তুতিও নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
রাত সোয়া আটটার দিকে প্রথম আলোর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যান মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়া। অনুষ্ঠান শেষে হোটেল থেকে বেরিয়ে নিজ নিজ গাড়িতে করে যাওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আলাদাভাবে গ্রেফতার করে। তবে কোন মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষে তা নিশ্চিত করা হয়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মোঃ মাসুদুর রহমান বিএনপির এই তিন নেতাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, আগের ৬০ ঘণ্টার হরতালে গাড়ি পোড়ানো মামলার নির্দেশদাতা হিসেবে তাদের আসামি করা হতে পারে। এদিকে, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মওদুদসহ ৩ শীর্ষ নেতা গ্রেফতার
মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় পুলিশি তল্লাশি
সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা। শুক্রবার রাতে হোটেল সোনারগাঁও থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার এবং ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। আটকের পর তাদের রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেয়া হয়। সূত্র জানায়, সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্র্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ তিন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার আগে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা। এদিকে মওদুদকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আজ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে স্থানীয় বিএনপি।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রাতে গ্রেফতারের আগে সকালে অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দুই সপ্তাহে ছয় দিন হরতালের শেষে শুক্রবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুশিয়ারি জানান। ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন। ওই আলোচনায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার যদি সমঝোতার পথে না আসে তাহলে আন্দোলনের কর্মসূচি তীব্রতর করা হবে। কেবল লাগাতার হরতাল কর্মসূচিতে তা সীমাবদ্ধ থাকবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৪-৯৫ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওই সময় আপনাদের লাগাতার হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ আন্দোলনের কথা আমরা ভুলে যাইনি। আমরাও তা দেব। প্রয়োজনে গণকারফিউ কর্মসূচি দেয়া হবে। সরকারকে সমঝোতায় বাধ্য করতে হরতালের পর অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচির হুমকির পর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ মওদুদকে গ্রেফতার করে। অবশ্য এরই মধ্যে ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডাকে দলটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সমঝোতা না হলে অভিযানে নামবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা- সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো পুলিশকে এমন নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নিচের সারির কর্মকর্তাদের অভিযানের প্রস্তুতি নিতেও বলা হয়। নির্দেশনা মোতাবেক, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর প্রস্তুতিও নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
রাত সোয়া আটটার দিকে প্রথম আলোর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে যান মওদুদ আহমদ, এমকে আনোয়ার ও রফিকুল ইসলাম মিয়া। অনুষ্ঠান শেষে হোটেল থেকে বেরিয়ে নিজ নিজ গাড়িতে করে যাওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ তাদের আলাদাভাবে গ্রেফতার করে। তবে কোন মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষে তা নিশ্চিত করা হয়নি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মোঃ মাসুদুর রহমান বিএনপির এই তিন নেতাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, আগের ৬০ ঘণ্টার হরতালে গাড়ি পোড়ানো মামলার নির্দেশদাতা হিসেবে তাদের আসামি করা হতে পারে। এদিকে, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে বলে জানা গেছে।