jugantor
নারায়ণগঞ্জে নজিরবিহীন হরতাল

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি  

০৫ মে ২০১৪, ০০:০০:০০  | 

নূর হোসেনের আস্তানায় হামলাসহ দু-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাইে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। সাত খুনের প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতি এ হরতালের ডাক দেয়। হরতালের এ কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়ায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ হরতালকে নজিরবিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন।

রোববার হরতালের সময় নারায়ণগঞ্জ শহর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার বেশির ভাগ এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেন চলাচলও ছিল বন্ধ। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। এদিকে হরতালের সমর্থনে এক পথসভায় সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেছে, ‘একদিন আসবে নিহতদের সন্তানদের মতো আপনার সন্তানরাও কাঁদবে।’

এছাড়াও প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাত খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এমনকি শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে রিকশাও চলাচল করেনি। শহরের প্রায় সব মার্কেট, বিপণিবিতানসহ প্রধান সড়কের পাশে দোকানপাটও বন্ধ ছিল। রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রেস ক্লাবের সামনে একটি সমাবেশ হয়। এতে আইনজীবী সমিতির নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাত দিন পার হলেও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যার রহস্য উšে§াচিত হয়নি। দোষীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। সকাল সাতটায় শহরের চাষাঢ়া এলাকায় নূর মসজিদের সামনে একটি বাস (নারায়ণগঞ্জ-ব ০২-০০৭৩) ভাংচুর করেন হরতাল সমর্থকরা। জেলার ১৯ দলীয় জোট, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, সাংস্কৃতিক জোট, গণসংহতি আন্দোলন, ত্বকী মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও হরতালের সমর্থনে বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে। মহাসড়কের মৌচাক থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকাজুড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সমর্থকরা রাস্তায় থাকলেও কোনো ভাংচুর

করেননি। চাষাঢ়া এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন হরতাল সমর্থকরা। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় রেল যোগাযোগও। নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন সকাল ৭টার দিকে ফতুল্লা রেলস্টেশনে পৌঁছলে পিকেটাররা সেটি আটকে দেয়। এরপর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, জেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শহরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।

কাউন্সিলরদের ধর্মঘট : এদিকে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাত খুনে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা এ কর্মসূচির বাইরে আছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না বলেন, ‘এখনও খুনিরা ধরা না পড়ায় আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২২ জন একত্রিত হয়ে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গতকাল হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। বেলা ১১টার দিকে সংগঠনের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে মিছিলটি শহরের ২নং রেইলগেট এলাকায় গিয়ে এক পথসভা করেন তারা। সেখানে বক্তব্য রাখেন ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। বক্তারা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, জনগণের সঙ্গে মশকরা করে কেউ টিকতে পারেন না। ইয়াহিয়া, এরশাদ, বিএনপি টিকতে পারেনি, আপনিও পারবে না। তাই আপনি সতর্ক হয়ে যান। আজ চন্দন সরকারের সন্তানরা কাঁদছে, একদিন আসবে যেদিন আপনার সন্তানরাও কাঁদবে। এদিকে ত্বকী মঞ্চের এই বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ত্বকী মঞ্চের এমন বক্তব্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আমলে নেয়া উচিত। কারণ পরোক্ষভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়েছে।

নূর হোসেনের আস্তানায় ভাংচুর : নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনের অবৈধ দখলকৃত দোকানপাট এবং অফিস ভাংচুর করেছে নজরুল সমর্থকরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। বদরউদ্দিন সুপার মার্কেটের মালিক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক এমপি ও ‘শীতলক্ষ্যা নদীখেকো’খ্যাত গিয়াসউদ্দিন। ১/১১-পরবর্তী সময়ে নূর হোসেন ওই মার্কেটের দখল নিয়ে নেয়। এছাড়াও শিমরাইল মোড়ের ডিএনডি খালের ওপর সরকারি জমি দখল করে নূর হোসেনের অবৈধভাবে গড়ে তোলা বেশ কয়েকটি দোকানও ভাংচুর হয়। এ সময় শিমরাইল মোড়ে কাসসাফ মার্কেটে হাসিনা আক্তার ডলির মালিকানাধীন দুটি দোকান ফেলে পালিয়ে যায় নূর হোসেনের লোকেরা। এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইল মোড়ে নূর হোসেনের আস্তানাখ্যাত ট্রাকস্ট্যান্ডে অভিযান চালায় পুলিশ। পাশের একটি গ্লাস কোম্পানি থেকে নূর হোসেনের ভাইয়ের প্রাইভেট কার জব্দ করে আইন-শৃংখলা বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহিদুল ইসলাম অভিযানের সত্যতা স্বীকার করেছেন।


 

সাবমিট

নারায়ণগঞ্জে নজিরবিহীন হরতাল

 নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি 
০৫ মে ২০১৪, ১২:০০ এএম  | 

নূর হোসেনের আস্তানায় হামলাসহ দু-একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া স্বতঃস্ফূর্ত ও শান্তিপূর্ণভাইে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। সাত খুনের প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতি এ হরতালের ডাক দেয়। হরতালের এ কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়ায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকা। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ হরতালকে নজিরবিহীন বলে আখ্যায়িত করেছেন।

রোববার হরতালের সময় নারায়ণগঞ্জ শহর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার বেশির ভাগ এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেন চলাচলও ছিল বন্ধ। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। এদিকে হরতালের সমর্থনে এক পথসভায় সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেছে, ‘একদিন আসবে নিহতদের সন্তানদের মতো আপনার সন্তানরাও কাঁদবে।’

এছাড়াও প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাত খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে গতকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এমনকি শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে রিকশাও চলাচল করেনি। শহরের প্রায় সব মার্কেট, বিপণিবিতানসহ প্রধান সড়কের পাশে দোকানপাটও বন্ধ ছিল। রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেন জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রেস ক্লাবের সামনে একটি সমাবেশ হয়। এতে আইনজীবী সমিতির নেতারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাত দিন পার হলেও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যার রহস্য উšে§াচিত হয়নি। দোষীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা হয়নি। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের ব্যর্থতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। সকাল সাতটায় শহরের চাষাঢ়া এলাকায় নূর মসজিদের সামনে একটি বাস (নারায়ণগঞ্জ-ব ০২-০০৭৩) ভাংচুর করেন হরতাল সমর্থকরা। জেলার ১৯ দলীয় জোট, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি, সাংস্কৃতিক জোট, গণসংহতি আন্দোলন, ত্বকী মঞ্চসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ও হরতালের সমর্থনে বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে। মহাসড়কের মৌচাক থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এলাকাজুড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সমর্থকরা রাস্তায় থাকলেও কোনো ভাংচুর

করেননি। চাষাঢ়া এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন হরতাল সমর্থকরা। ফলে, বন্ধ হয়ে যায় রেল যোগাযোগও। নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানান, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন সকাল ৭টার দিকে ফতুল্লা রেলস্টেশনে পৌঁছলে পিকেটাররা সেটি আটকে দেয়। এরপর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, জেলায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শহরে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।

কাউন্সিলরদের ধর্মঘট : এদিকে ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুলসহ সাত খুনে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা এ কর্মসূচির বাইরে আছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না বলেন, ‘এখনও খুনিরা ধরা না পড়ায় আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সিটি কর্পোরেশনের ৩৬ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২২ জন একত্রিত হয়ে মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গতকাল হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। বেলা ১১টার দিকে সংগঠনের পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে মিছিলটি শহরের ২নং রেইলগেট এলাকায় গিয়ে এক পথসভা করেন তারা। সেখানে বক্তব্য রাখেন ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আওলাদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। বক্তারা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, জনগণের সঙ্গে মশকরা করে কেউ টিকতে পারেন না। ইয়াহিয়া, এরশাদ, বিএনপি টিকতে পারেনি, আপনিও পারবে না। তাই আপনি সতর্ক হয়ে যান। আজ চন্দন সরকারের সন্তানরা কাঁদছে, একদিন আসবে যেদিন আপনার সন্তানরাও কাঁদবে। এদিকে ত্বকী মঞ্চের এই বক্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকারি দলের নেতাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান, ত্বকী মঞ্চের এমন বক্তব্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আমলে নেয়া উচিত। কারণ পরোক্ষভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হয়েছে।

নূর হোসেনের আস্তানায় ভাংচুর : নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনের অবৈধ দখলকৃত দোকানপাট এবং অফিস ভাংচুর করেছে নজরুল সমর্থকরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। বদরউদ্দিন সুপার মার্কেটের মালিক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক এমপি ও ‘শীতলক্ষ্যা নদীখেকো’খ্যাত গিয়াসউদ্দিন। ১/১১-পরবর্তী সময়ে নূর হোসেন ওই মার্কেটের দখল নিয়ে নেয়। এছাড়াও শিমরাইল মোড়ের ডিএনডি খালের ওপর সরকারি জমি দখল করে নূর হোসেনের অবৈধভাবে গড়ে তোলা বেশ কয়েকটি দোকানও ভাংচুর হয়। এ সময় শিমরাইল মোড়ে কাসসাফ মার্কেটে হাসিনা আক্তার ডলির মালিকানাধীন দুটি দোকান ফেলে পালিয়ে যায় নূর হোসেনের লোকেরা। এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইল মোড়ে নূর হোসেনের আস্তানাখ্যাত ট্রাকস্ট্যান্ডে অভিযান চালায় পুলিশ। পাশের একটি গ্লাস কোম্পানি থেকে নূর হোসেনের ভাইয়ের প্রাইভেট কার জব্দ করে আইন-শৃংখলা বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শহিদুল ইসলাম অভিযানের সত্যতা স্বীকার করেছেন।


 

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র