jugantor
জাতিসংঘের মধ্যস্থতা মানবে না সরকার
সরকারের অনুরোধেই কেবল জাতিসংঘ দূত পাঠাতে পারে * সহিংসতা বন্ধে স্থায়ী সমাধান চান পশ্চিমা কূটনীতিকরা

  মাসুদ করিম  

১৮ জানুয়ারি ২০১৫, ০০:০০:০০  | 

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মধ্যস্থতার কোনো উদ্যোগ নিলে সরকার তা মেনে নেবে না। এই লক্ষ্যে অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোর মতো কোনো বিশেষ দূত পাঠালে তাকেও গ্রহণ করা হবে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একে আবদুল মোমেন শনিবার যুগান্তরকে এ কথা বলেছেন।

বাংলাদেশের সহিংস পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে শুক্রবার। এ ধরনের বিবৃতির পর দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এ ধরনের আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন সংস্থাটির স্থায়ী প্রতিনিধি।

রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে জাতিসংঘের রাজনীতি সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে সংলাপে মধ্যস্থতার জন্য বিশেষ দূত হিসেবে পাঠিয়েছিলেন সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন।

বর্তমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বেশ আগেই। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে সহিংসতা বৃদ্ধি পেলে জঙ্গিবাদ উত্থানের আশংকায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা দুশ্চিন্তায় আছেন। পাশাপাশি দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহল তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তারা এ ধরনের সহিংসতার স্থায়ী সমাধান চান।

কোনো সদস্য দেশে হানাহানির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজের উদ্যোগে এ ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের ম্যান্ডেট রয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ মহাসচিবের সবচেয়ে বড় ভূমিকা হতে পারে তার ‘গুড অফিসেস’ প্রয়োগ করা। আন্তর্জাতিক বিরোধ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মহাসচিব তার নিরপেক্ষ ভূমিকাকে ধরে রেখে জনসমক্ষে কিংবা গোপনীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের ম্যান্ডেটকেই ‘গুড অফিসেস’ বলা হয়। সেই ম্যান্ডেটের আলোকেই তিনি গত বছরের ৫ জানুয়ারির আগে দুই রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে তারানকোকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন। মধ্যস্থতায় আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার পর এই সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান রেখে তারানকো বিদায় হন। তারপর ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের মধ্যস্থতায় ফের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংলাপ হলেও তা ব্যর্থ হওয়ার পর ৫ জানুয়ারি একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেলে র্নিবাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো হতাশা ব্যক্ত করলেও গত এক বছর দেশের পরিস্থিতি শান্ত ছিল। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীকে ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে সহিংসতায় অনেক প্রাণহানি ও বহু আহত হন। প্রচুর সম্পদহানি হয়। এখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ অব্যাহত আছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কোনো বিবৃতি দেয়নি। মানবাধিকার কমিশনের একজন কর্মচারী জেনেভা থেকে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে উভয়পক্ষকে সংযত হয়ে কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে। সহিংসতায় যারা মারা গেছেন তাদের জন্য দোষীদের বিচার চাওয়া হয়। এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের কোনো উদ্যোগের বিষয়ে জাতিসংঘে কোনো আলোচনা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন যখন হয় ওই সময়ে একটা অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিব একজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখন নির্বাচন হয়ে গেছে। দেশে আইনসম্মত একটা সরকার আছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যস্থতায় কোনো দূত পাঠাতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার তা গ্রহণ করবে না। এ রকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ করলেই শুধু জাতিসংঘ মহাসচিব কোনো দূত পাঠাতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এমন কোনো অনুরোধ করবে বলে মনে হয় না।’

জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি আবদুল মোমেন বলেন, ‘সংঘাত আমরা কেউই চাই না। ফলে এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের একজন কর্মচারী একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এতে সব পক্ষকে সংযত হতে বলেছেন। প্রাণহানির পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতায় দায়ীদের বিচার চেয়েছেন। এটা তাদের দায়িত্ব।’

জানা গেছে, ঢাকায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা বরাবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের পক্ষে কথা বললেও এবার তারা শুধু দুই দলের মধ্যে সংলাপের পরিবর্তে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজসহ সব অংশীদারের মধ্যে সংলাপ চান। এক্ষেত্রে জাতিসংঘই মধ্যস্থতার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। কেননা বাংলাদেশ সরকার রাজনীতি নিয়ে বিদেশীদের নাক গলানো পছন্দ করে না। বিদেশীদের এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হওয়াকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু জাতিসংঘ কোনো দেশ নয়, বরং বহুজাতিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই সংস্থার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে এবং জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে থাকে।

সূত্র মতে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন সহিংস পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেও মানবাধিকার কাউন্সিলে তা উত্থাপন করা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। ফলে এ ইস্যু সেখানে উত্থাপন করলে বাংলাদেশ তার বিরোধিতা করবে। তবে বিদেশী কূটনীতিকরা অব্যাহতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা সরকার ও বিএনপির অবস্থান জেনেছেন। পশ্চিমা দেশগুলো তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি ঘনীভূত হওয়ায় বিদেশীদের উদ্বেগ বাড়ছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে নিরসনে সংলাপের পক্ষেই প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক মহল চাপ অব্যাহত রাখবে বলেই কূটনীতিক মহলের ধারণা।


 

সাবমিট

জাতিসংঘের মধ্যস্থতা মানবে না সরকার

সরকারের অনুরোধেই কেবল জাতিসংঘ দূত পাঠাতে পারে * সহিংসতা বন্ধে স্থায়ী সমাধান চান পশ্চিমা কূটনীতিকরা
 মাসুদ করিম 
১৮ জানুয়ারি ২০১৫, ১২:০০ এএম  | 

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মধ্যস্থতার কোনো উদ্যোগ নিলে সরকার তা মেনে নেবে না। এই লক্ষ্যে অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোর মতো কোনো বিশেষ দূত পাঠালে তাকেও গ্রহণ করা হবে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একে আবদুল মোমেন শনিবার যুগান্তরকে এ কথা বলেছেন।

বাংলাদেশের সহিংস পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে শুক্রবার। এ ধরনের বিবৃতির পর দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এ ধরনের আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করেন সংস্থাটির স্থায়ী প্রতিনিধি।

রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে জাতিসংঘের রাজনীতি সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেস তারানকোকে সংলাপে মধ্যস্থতার জন্য বিশেষ দূত হিসেবে পাঠিয়েছিলেন সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন।

বর্তমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বেশ আগেই। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে সহিংসতা বৃদ্ধি পেলে জঙ্গিবাদ উত্থানের আশংকায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা দুশ্চিন্তায় আছেন। পাশাপাশি দেশটিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহল তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তারা এ ধরনের সহিংসতার স্থায়ী সমাধান চান।

কোনো সদস্য দেশে হানাহানির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজের উদ্যোগে এ ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের ম্যান্ডেট রয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘ মহাসচিবের সবচেয়ে বড় ভূমিকা হতে পারে তার ‘গুড অফিসেস’ প্রয়োগ করা। আন্তর্জাতিক বিরোধ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে মহাসচিব তার নিরপেক্ষ ভূমিকাকে ধরে রেখে জনসমক্ষে কিংবা গোপনীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের ম্যান্ডেটকেই ‘গুড অফিসেস’ বলা হয়। সেই ম্যান্ডেটের আলোকেই তিনি গত বছরের ৫ জানুয়ারির আগে দুই রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে তারানকোকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছিলেন। মধ্যস্থতায় আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ার পর এই সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান রেখে তারানকো বিদায় হন। তারপর ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের মধ্যস্থতায় ফের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংলাপ হলেও তা ব্যর্থ হওয়ার পর ৫ জানুয়ারি একতরফাভাবে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেলে র্নিবাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো হতাশা ব্যক্ত করলেও গত এক বছর দেশের পরিস্থিতি শান্ত ছিল। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীকে ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে সহিংসতায় অনেক প্রাণহানি ও বহু আহত হন। প্রচুর সম্পদহানি হয়। এখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের অবরোধ অব্যাহত আছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কোনো বিবৃতি দেয়নি। মানবাধিকার কমিশনের একজন কর্মচারী জেনেভা থেকে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে উভয়পক্ষকে সংযত হয়ে কাজ করার আহবান জানানো হয়েছে। সহিংসতায় যারা মারা গেছেন তাদের জন্য দোষীদের বিচার চাওয়া হয়। এটা আমরা সবাই চাই। কিন্তু সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের কোনো উদ্যোগের বিষয়ে জাতিসংঘে কোনো আলোচনা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন যখন হয় ওই সময়ে একটা অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিব একজন প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখন নির্বাচন হয়ে গেছে। দেশে আইনসম্মত একটা সরকার আছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যস্থতায় কোনো দূত পাঠাতে চাইলে বাংলাদেশ সরকার তা গ্রহণ করবে না। এ রকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ করলেই শুধু জাতিসংঘ মহাসচিব কোনো দূত পাঠাতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এমন কোনো অনুরোধ করবে বলে মনে হয় না।’

জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি আবদুল মোমেন বলেন, ‘সংঘাত আমরা কেউই চাই না। ফলে এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের একজন কর্মচারী একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এতে সব পক্ষকে সংযত হতে বলেছেন। প্রাণহানির পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতায় দায়ীদের বিচার চেয়েছেন। এটা তাদের দায়িত্ব।’

জানা গেছে, ঢাকায় পশ্চিমা কূটনীতিকরা বরাবর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের পক্ষে কথা বললেও এবার তারা শুধু দুই দলের মধ্যে সংলাপের পরিবর্তে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজসহ সব অংশীদারের মধ্যে সংলাপ চান। এক্ষেত্রে জাতিসংঘই মধ্যস্থতার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। কেননা বাংলাদেশ সরকার রাজনীতি নিয়ে বিদেশীদের নাক গলানো পছন্দ করে না। বিদেশীদের এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হওয়াকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু জাতিসংঘ কোনো দেশ নয়, বরং বহুজাতিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই সংস্থার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার রয়েছে এবং জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী পাঠিয়ে থাকে।

সূত্র মতে, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন সহিংস পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেও মানবাধিকার কাউন্সিলে তা উত্থাপন করা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে। কারণ বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। ফলে এ ইস্যু সেখানে উত্থাপন করলে বাংলাদেশ তার বিরোধিতা করবে। তবে বিদেশী কূটনীতিকরা অব্যাহতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা সরকার ও বিএনপির অবস্থান জেনেছেন। পশ্চিমা দেশগুলো তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন। বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি ঘনীভূত হওয়ায় বিদেশীদের উদ্বেগ বাড়ছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে নিরসনে সংলাপের পক্ষেই প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক মহল চাপ অব্যাহত রাখবে বলেই কূটনীতিক মহলের ধারণা।


 

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র