বিধিমালা সংশোধন ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ
যুগান্তর রিপোর্ট | প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০১৫
একবার শাস্তি হলে যুগ্ম সচিব থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ে পদোন্নতি না দেয়ার বিষয়ে এসএসবির (পদোন্নতি প্রদান সংক্রান্ত সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) সিদ্ধান্তে প্রশাসনে নতুন ক্ষোভের মাত্রা যুক্ত হয়েছে। বুধবার এ বিষয়ে যুগান্তরে রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনেকে কঠোর সমালোচনা করেন। তারা বলেন, এতে করে সিনিয়র কর্মকর্তার রোষানলে পড়ে অনেক মেধাবী কর্মকর্তার চাকরি জীবনে চরম ক্ষতি হওয়ার আশংকা থেকে যাবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, এসএসবি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তিনি বলেন, এসএসবির ক্ষমতা আছে, তবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বিধিমালা সংশোধনের মাধ্যমে করতে হবে।
প্রশাসনবিষয়ক কলামিস্ট সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান বদিউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদটি প্রথমে তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছিল না। কিন্তু পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, এসএসবির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান পদোন্নতি বিধিমালা সংশোধন ছাড়া এসএসবি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করতে পারে না। সংক্ষুব্ধ কেউ বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে পুরো পদোন্নতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠতে পারে। সাবেক এ কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময় তেমন কোনো অপরাধ ছাড়াই সিনিয়র কর্মকর্তার কথা না শোনা কিংবা তিনি যেভাবে চান সেভাবে সাড়া না দেয়ায় অধস্তন কর্মকর্তাদের ঝামেলায় পড়তে হয়। এতে করে কারো শাস্তি হলে এবং এ কারণে তার পদোন্নতির পথ রুদ্ধ হলে তিনি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বরং দুর্নীতির দায়ে কারো শাস্তি হলে তাকে পদোন্নতির বাইরে রাখা যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়া উচিত।
এদিকে ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের কয়েকজন যুগান্তরকে জানিয়েছেন, প্রশাসনে প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কখনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় না। বরং প্রাইজপোস্টিংসহ দ্রুত পদোন্নতি হয়ে যায়। গায়ে সরকারি দলের সাইন বোর্ড থাকলে তো কথা নেই। অথচ অনেক সময় নানা কারণে নিরীহ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিভাগীয় মামলা ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। আর এতে করে যদি প্রাপ্য পদোন্নতি না হয় তাহলে প্রকাশ্যেও ক্ষোভ-অসন্তোষ দেখা দিতে পারে।