অষ্টম পে-স্কেল নিয়ে ক্ষোভ
যুগান্তর রিপোর্ট
২৩ ডিসেম্বর ২০১৫, ০০:০০:০০ |
নতুন পে-স্কেল নিয়ে অসন্তুষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক এবং বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি নতুন নতুন সংগঠন আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ছে। সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসকরা আজ সারা দেশে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বিসিএস ২৬ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার কৌশল নিয়েছেন। এতদিন আন্দোলন ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নিয়ন্ত্রণে। সংগঠনটি কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি দিত। মঙ্গলবার বৈঠক করে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিকে সাধারণ সংবাদ সম্মেলন ও সভা করা এবং আলাদা কর্মসূচি পালনের ভার দেয়া হয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা মঙ্গলবার ঢাকায় মানববন্ধন করেছেন। আজ ও কাল তারা সারা দেশে মানববন্ধন করবেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সরকারি কর্মকর্তা পরিষদ (বাসসকপ) আজ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
প্রকৃচি ও ২৬ ক্যাডার : আজ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মানববন্ধন আহ্বান করেছে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি এবং বিসিএস ২৬ ক্যাডার। স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ সাত দাবিতে তাদের এ আন্দোলন। ৭ দফার বাকিগুলো হচ্ছে- বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাতিল; প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার বৈষম্য নিরসন; সব ক্যাডার সার্ভিসে পদোন্নতির সমান সুযোগ সৃষ্টি; নিজস্ব ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিস বহির্ভূত প্রেষণ বাতিল; কৃত পেশাভিত্তিক প্রশাসন বা অন্য ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার পদায়ন বন্ধ করা।
প্রকৃচি (প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক) কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির চার নেতার স্বাক্ষরে মঙ্গলবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে মানববন্ধনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পালন করা হবে। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জমায়েত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য যাত্রা করা হবে। ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায় না হলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রকৃচি কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার বলেন, উল্লিখিত কর্মসূচির বাইরে সমন্বয় কমিটি ঘোষিত কালো ব্যাজ পরে অফিস করার কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে। ২০ ডিসেম্বর এটি শুরু হয়। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। তিনি জানান, সচিবালয়সহ বিভিন্ন অধিদফতর, প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় দফতরের কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন : এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ। মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বৈঠক পরিচালনা করেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এতে যোগ দেন। বৈঠক শেষে মহাসচিব বলেন, বৈঠকে জাতীয় পে-স্কেলের প্রজ্ঞাপন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব কর্তৃক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো কিছু সুপারিশ সমন্বিত পত্রের ওপর বিশদ আলোচনা হয়। শিক্ষক নেতারা মনে করেন, বর্তমান অবস্থায় অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল বাস্তবায়িত হলে সপ্তম পে-স্কেলের তুলনায় গ্রেড-১ প্রাপ্ত শিক্ষকদের সংখ্যা অর্ধেক কিংবা তারও নিচে নেমে আসবে। উপরন্তু, গ্রেড-১ প্রাপ্ত শিক্ষকদের থেকে সুপার গ্রেডের ২য় ধাপে (সিনিয়র সচিব) যাওয়ার কোনোও সুযোগ ও নির্দেশনা এ গেজেটে কিংবা অন্য কোনো পরিপত্রে এ পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।
সভাপতি বলেন, ৬ ডিসেম্বর শিক্ষক নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি পূরণের সুস্পষ্ট আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকাশিত গেজেটে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এ কারণে ফেডারেশন তিন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এগুলো হচ্ছে- আগামী ২৭ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে সংবাদ সম্মেলন। আগামী ২ জানুয়ারির পূর্বেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। ওইসব কর্মসূচি এবং সাধারণ শিক্ষকদের মতামত নিয়ে ফেডারেশন আগামী ২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় মিলিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবভবনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভার পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষিত হবে।
সরকারি কলেজ শিক্ষক : এদিকে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের পক্ষে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে সভাপতি অধ্যাপক নাসরীন বেগম, মহাসচিব আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার, সিনিয়র সহসভাপতি ফজলে রাব্বী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে তারা ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
এসব দাবি আদায়ে ৪ ও ৫ জানুয়ারি সব সরকারি কলেজে পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। পরে ২২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মসূচি : ৮ম জাতীয় পে-স্কেলে অবমূল্যায়ন ও বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। পরে তারা অর্থমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন। এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)। মানববন্ধনে আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ, সহসভাপতি একেএম আবদুল মোতালেব, সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বক্তারা বলেন, পে-স্কেলে বৈষম্যের প্রেক্ষাপটে আমরা সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি তুলে ধরছি।
বাসসকপ : অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে ক্যাডার ও ননক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ৮ম ও ৯ম গ্রেড প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল আগের মতো বহাল রাখাসহ বিভিন্ন দাবিতে সংগঠনটি আন্দোলনে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আজ তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। তাদের অন্য দাবির মধ্যে আছে- উপজেলা পরিষদের ক্ষমতায়নের নামে ইউএনওর কর্তৃত্ব সৃষ্টির অফিস স্মারক বাতিল; সব ননক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে সমগ্র চাকরি জীবনে কমপক্ষে ৪টি উচ্চতর বেতন ধাপ পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি; গৃহনির্মাণ লোন ৫০ লাখ টাকা করা; নিজস্ব সার্ভিস/বিভাগ বহির্ভূত সব ধরনের প্রেষণ প্রথা বাতিল।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
অষ্টম পে-স্কেল নিয়ে ক্ষোভ
আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে
নতুন পে-স্কেল নিয়ে অসন্তুষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক এবং বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি নতুন নতুন সংগঠন আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ছে। সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসকরা আজ সারা দেশে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া বিসিএস ২৬ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার কৌশল নিয়েছেন। এতদিন আন্দোলন ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নিয়ন্ত্রণে। সংগঠনটি কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি দিত। মঙ্গলবার বৈঠক করে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিকে সাধারণ সংবাদ সম্মেলন ও সভা করা এবং আলাদা কর্মসূচি পালনের ভার দেয়া হয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা মঙ্গলবার ঢাকায় মানববন্ধন করেছেন। আজ ও কাল তারা সারা দেশে মানববন্ধন করবেন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সরকারি কর্মকর্তা পরিষদ (বাসসকপ) আজ সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
প্রকৃচি ও ২৬ ক্যাডার : আজ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার মানববন্ধন আহ্বান করেছে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি এবং বিসিএস ২৬ ক্যাডার। স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ সাত দাবিতে তাদের এ আন্দোলন। ৭ দফার বাকিগুলো হচ্ছে- বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাতিল; প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার বৈষম্য নিরসন; সব ক্যাডার সার্ভিসে পদোন্নতির সমান সুযোগ সৃষ্টি; নিজস্ব ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিস বহির্ভূত প্রেষণ বাতিল; কৃত পেশাভিত্তিক প্রশাসন বা অন্য ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার পদায়ন বন্ধ করা।
প্রকৃচি (প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক) কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির চার নেতার স্বাক্ষরে মঙ্গলবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে মানববন্ধনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পালন করা হবে। এছাড়া ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জমায়েত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদানের জন্য যাত্রা করা হবে। ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি আদায় না হলে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
প্রকৃচি কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার বলেন, উল্লিখিত কর্মসূচির বাইরে সমন্বয় কমিটি ঘোষিত কালো ব্যাজ পরে অফিস করার কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে। ২০ ডিসেম্বর এটি শুরু হয়। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। তিনি জানান, সচিবালয়সহ বিভিন্ন অধিদফতর, প্রতিটি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় দফতরের কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন : এদিকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ। মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বৈঠক পরিচালনা করেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এতে যোগ দেন। বৈঠক শেষে মহাসচিব বলেন, বৈঠকে জাতীয় পে-স্কেলের প্রজ্ঞাপন এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব কর্তৃক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো কিছু সুপারিশ সমন্বিত পত্রের ওপর বিশদ আলোচনা হয়। শিক্ষক নেতারা মনে করেন, বর্তমান অবস্থায় অষ্টম জাতীয় পে-স্কেল বাস্তবায়িত হলে সপ্তম পে-স্কেলের তুলনায় গ্রেড-১ প্রাপ্ত শিক্ষকদের সংখ্যা অর্ধেক কিংবা তারও নিচে নেমে আসবে। উপরন্তু, গ্রেড-১ প্রাপ্ত শিক্ষকদের থেকে সুপার গ্রেডের ২য় ধাপে (সিনিয়র সচিব) যাওয়ার কোনোও সুযোগ ও নির্দেশনা এ গেজেটে কিংবা অন্য কোনো পরিপত্রে এ পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।
সভাপতি বলেন, ৬ ডিসেম্বর শিক্ষক নেতারা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। তখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি পূরণের সুস্পষ্ট আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রকাশিত গেজেটে তার প্রতিফলন ঘটেনি। এ কারণে ফেডারেশন তিন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এগুলো হচ্ছে- আগামী ২৭ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে সংবাদ সম্মেলন। আগামী ২ জানুয়ারির পূর্বেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে। ওইসব কর্মসূচি এবং সাধারণ শিক্ষকদের মতামত নিয়ে ফেডারেশন আগামী ২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় মিলিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবভবনে ওই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভার পর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষিত হবে।
সরকারি কলেজ শিক্ষক : এদিকে সরকারি কলেজ শিক্ষকদের পক্ষে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এতে সভাপতি অধ্যাপক নাসরীন বেগম, মহাসচিব আইকে সেলিমউল্লাহ খোন্দকার, সিনিয়র সহসভাপতি ফজলে রাব্বী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে তারা ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
এসব দাবি আদায়ে ৪ ও ৫ জানুয়ারি সব সরকারি কলেজে পরীক্ষা বর্জনসহ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। পরে ২২ জানুয়ারি সাধারণ সভায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মসূচি : ৮ম জাতীয় পে-স্কেলে অবমূল্যায়ন ও বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা। পরে তারা অর্থমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন। এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)। মানববন্ধনে আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ, সহসভাপতি একেএম আবদুল মোতালেব, সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন। বক্তারা বলেন, পে-স্কেলে বৈষম্যের প্রেক্ষাপটে আমরা সরকারের কাছে ৬ দফা দাবি তুলে ধরছি।
বাসসকপ : অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে ক্যাডার ও ননক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ৮ম ও ৯ম গ্রেড প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল, সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল আগের মতো বহাল রাখাসহ বিভিন্ন দাবিতে সংগঠনটি আন্দোলনে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে আজ তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। তাদের অন্য দাবির মধ্যে আছে- উপজেলা পরিষদের ক্ষমতায়নের নামে ইউএনওর কর্তৃত্ব সৃষ্টির অফিস স্মারক বাতিল; সব ননক্যাডার কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে সমগ্র চাকরি জীবনে কমপক্ষে ৪টি উচ্চতর বেতন ধাপ পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি; গৃহনির্মাণ লোন ৫০ লাখ টাকা করা; নিজস্ব সার্ভিস/বিভাগ বহির্ভূত সব ধরনের প্রেষণ প্রথা বাতিল।