jugantor
অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায়ে ভুল তথ্য

  খুলনা ব্যুরো  

২৬ জানুয়ারি ২০১৫, ০০:০০:০০  | 

‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ নামক অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ে যশোর-খুলনা মুক্ত দিবস ও এ অঞ্চলের বধ্যভূমি সম্পর্কে বিবরণ স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বইটিতে দুটি ছবির পরিচিতিতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যম অধ্যায়ে পত্রিকার নাম নেই। এমন তথ্যসংবলিত বইটি ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে দেশের ৬৪ জেলায় ১৮ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে।

জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নসিম উদ্দিন বলেন, আলোচ্য বইটিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তারিখ ও সেক্টর কমান্ডারদের নাম উল্লেখ না থাকায় সঠিক তথ্য থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে।

বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর ভারত সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। পরদিন যশোর বিমানবন্দর পতনের পর যৌথ বাহিনী যশোরে প্রবেশ করে। একই পাতায় উল্লেখ করা হয় ১১-১২ ডিসেম্বরের মধ্যে খুলনা মুক্ত হয়। এ অধ্যায়ে খুলনার খালিশপুরকে বধ্যভূমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুদ্ধের দলিলপত্রের অষ্টম খণ্ডের ভাষ্য : ২৩১ পৃষ্ঠায় বিডিআর সদস্য কবির আহমদ সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ১৭ ডিসেম্বর খুলনা মুক্ত হয়। দলিলপত্রের একই খণ্ডের ২৩৯ পৃষ্ঠায় খুলনার খালিশপুর এলাকার ডিএসপি আক্তার হোসেন চৌধুরী সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ৬ ডিসেম্বর যশোর ক্যান্টনম্যান্ট ফল করে, ৭ ডিসেম্বর জেলগেট খুলে দেয়া হয়। সংস্থাপন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত যশোর গেজেটিয়ারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা হতে না হতেই পাক বাহিনী সেখানকার সেনানিবাস ত্যাগ করে। ৭ ডিসেম্বর ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর মনজুর ও মিত্র বাহিনীর নবম ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল দলবীর সিং যশোরে প্রবেশ করেন।

ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি : পাঠ্যপুস্তকের ১১ পাতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ে ৩ জানুয়ারি ’৭১ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ছবি দেয়া হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের বাঙালি’ নামক ফটো অ্যালবামে এই একই নামের ছবির পরিচিতিতে বলা হয়েছে ১৯৫৩ সালে মহান ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে নগ্নপায়ে ভাসানী-মুজিব। পাঠ্যপুস্তকের ১২ পাতায় অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাপ্তি অধ্যায়ে একটি ছবির পরিচিতিতে বলা হয়েছে ‘১৫ ফেব্র“য়ারি ১৯৭১ জয় বাংলা বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব ওনার দেয় এক নতুন পতাকা তুলে, যাতে সবুজের ভিতর লাল সূর্য মাঝখানে হলুদ রঙের মানচিত্র। বাংলা একাডেমির প্রকাশনা ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ জামান রচিত ‘মুজিবনগর সরকার ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ নামক ইতিহাসের ৯০ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ জয় বাংলা বাহিনী শেখ মুজিবকে গার্ড অব ওনার প্রদান করে পতাকা তার হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ জামান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।

এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ দেশব্যাপী সরকারি-বেসরকারি সব দফতরে (সেনানিবাস ছাড়া) মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব ওনার প্রদান করা হয়। ১৫ ফেব্র“য়ারির ঘটনাটি তিনি সুনির্দিষ্টভাবে জানেন না



সাবমিট

অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায়ে ভুল তথ্য

 খুলনা ব্যুরো 
২৬ জানুয়ারি ২০১৫, ১২:০০ এএম  | 
‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ নামক অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ের মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ে যশোর-খুলনা মুক্ত দিবস ও এ অঞ্চলের বধ্যভূমি সম্পর্কে বিবরণ স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বইটিতে দুটি ছবির পরিচিতিতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যম অধ্যায়ে পত্রিকার নাম নেই। এমন তথ্যসংবলিত বইটি ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে দেশের ৬৪ জেলায় ১৮ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে।

জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নসিম উদ্দিন বলেন, আলোচ্য বইটিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তারিখ ও সেক্টর কমান্ডারদের নাম উল্লেখ না থাকায় সঠিক তথ্য থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে।

বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর ভারত সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। পরদিন যশোর বিমানবন্দর পতনের পর যৌথ বাহিনী যশোরে প্রবেশ করে। একই পাতায় উল্লেখ করা হয় ১১-১২ ডিসেম্বরের মধ্যে খুলনা মুক্ত হয়। এ অধ্যায়ে খুলনার খালিশপুরকে বধ্যভূমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুদ্ধের দলিলপত্রের অষ্টম খণ্ডের ভাষ্য : ২৩১ পৃষ্ঠায় বিডিআর সদস্য কবির আহমদ সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ১৭ ডিসেম্বর খুলনা মুক্ত হয়। দলিলপত্রের একই খণ্ডের ২৩৯ পৃষ্ঠায় খুলনার খালিশপুর এলাকার ডিএসপি আক্তার হোসেন চৌধুরী সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ৬ ডিসেম্বর যশোর ক্যান্টনম্যান্ট ফল করে, ৭ ডিসেম্বর জেলগেট খুলে দেয়া হয়। সংস্থাপন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত যশোর গেজেটিয়ারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা হতে না হতেই পাক বাহিনী সেখানকার সেনানিবাস ত্যাগ করে। ৭ ডিসেম্বর ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর মনজুর ও মিত্র বাহিনীর নবম ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল দলবীর সিং যশোরে প্রবেশ করেন।

ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি : পাঠ্যপুস্তকের ১১ পাতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ে ৩ জানুয়ারি ’৭১ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ছবি দেয়া হয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের বাঙালি’ নামক ফটো অ্যালবামে এই একই নামের ছবির পরিচিতিতে বলা হয়েছে ১৯৫৩ সালে মহান ২১ ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরিতে নগ্নপায়ে ভাসানী-মুজিব। পাঠ্যপুস্তকের ১২ পাতায় অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাপ্তি অধ্যায়ে একটি ছবির পরিচিতিতে বলা হয়েছে ‘১৫ ফেব্র“য়ারি ১৯৭১ জয় বাংলা বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব ওনার দেয় এক নতুন পতাকা তুলে, যাতে সবুজের ভিতর লাল সূর্য মাঝখানে হলুদ রঙের মানচিত্র। বাংলা একাডেমির প্রকাশনা ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ জামান রচিত ‘মুজিবনগর সরকার ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ নামক ইতিহাসের ৯০ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ জয় বাংলা বাহিনী শেখ মুজিবকে গার্ড অব ওনার প্রদান করে পতাকা তার হাতে তুলে দেয়। বর্তমানে ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ জামান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।

এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ দেশব্যাপী সরকারি-বেসরকারি সব দফতরে (সেনানিবাস ছাড়া) মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব ওনার প্রদান করা হয়। ১৫ ফেব্র“য়ারির ঘটনাটি তিনি সুনির্দিষ্টভাবে জানেন না



 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র