jugantor
চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে হত্যা
দু’দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো  

০৯ মে ২০১৫, ০০:০০:০০  | 

নগরীর সদরঘাটের দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যার দু’দিন পরও হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কসাই কাজে ব্যবহৃত ধারালো একটি ছোরা ব্যবহার করা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ প্রাথমিকভাবে মাংস বিক্রেতা শাহ আলম এবং গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছে। খুনিরা নিহতের পরিবারের পূর্বপরিচিত হতে পারে বলেও ধারণা করছে পুলিশ। এদিকে, বৃহস্পতিবার মা-মেয়েকে খুনের ঘটনায় নিহত নাসিমার স্বামী ও মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম এবং গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিকে আটক করে পুলিশ। রাত ২টা পর্যন্ত তাদের দু’জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের একাধিক টিম। সন্দেহভাজন হিসেবে শাহ আলমের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে কোনো ক্লু না পাওয়ায় রাতে তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে তাকে বাদী করে রাত ৩টার দিকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সদরঘাট থানায় দায়ের করা এ মামলায় কাউকে সুনির্দিষ্ট আসামি করা হয়নি। তবে গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খোঁজা হচ্ছে নিহত নাসিমার স্বামী শাহ আলমের বন্ধু কমল ও ভাই আলালের বন্ধু আইয়ুবকে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে ‘মাল্টিওয়ে পন্থা’ অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি জোনের এসি শাহ মো. আবদুর রউফ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই বাসায় নিয়মিত অনেকের যাতায়াত ছিল। শাহ আলম দম্পতির ছেলে রিয়াদ, তাদের ঘনিষ্ঠ পরিচিত বা প্রায়ই আসা-যাওয়া আছে, এমন তিনজনের কথা বলেছে পুলিশকে। এদের মধ্যে তাদের গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিও রয়েছে। এছাড়া বাকি দু’জন হল নিহত নাসিমার স্বামী শাহ আলমের বন্ধু কমল দাশ ও শাহ আলমের শ্যালক আলালের বন্ধু আইয়ুব। ঘটনার পর থেকে এই দু’জনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পুলিশের সন্দেহ আরও বেড়েছে।

কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, ‘মামলাটির আইও সদরঘাট থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ নিজেই। তবে তিনি ছাড়াও সিআইডি ও ডিবির একাধিক টিম তদন্তে সহায়তা করছে। ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

মায়ের লাশ ঘিরে কেটেছে হৃদয়ের দিন : ‘আম্মু বলেছিল ছুটির দিনে শুক্রবার সবাইকে নিয়ে কাজির দেউড়ি শিশুপার্কে ঘুরতে যাবে। রাতে বাসায় বিরিয়ানি রান্না করবে। এ জন্য রাতে ভালো করে ক্লাসের পড়া শিখে নিতেও বলেছিল। আমি পড়েছিও। আম্মুকে নিয়ে আর শিশুপার্কে ঘুরতে যেতে পারব না।’ এ কথা বলতেই নিহত নাসিমা আক্তারের বড় ছেলে হৃদয়ের চোখে অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়তে থাকে পানি। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে কথা হয় মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয় হোসেনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার যখন বাসায় তার মা নাসিমা আকতার ও ছোট বোন রিয়া দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হচ্ছিল তখন হৃদয় ছিল স্কুলে। তার ছোট ভাই রিয়াদও। কিন্তু সেই স্নেহ-মমতা ও স্কুল ব্যাগ গুছিয়ে দেয়াটাই যে শেষবারের মতো হবে তা কল্পনাই করতে পারেনি হৃদয় কিংবা তার ছোট ভাই রিয়াদ।



সাবমিট
চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে হত্যা

দু’দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ

 চট্টগ্রাম ব্যুরো 
০৯ মে ২০১৫, ১২:০০ এএম  | 
নগরীর সদরঘাটের দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে হত্যার দু’দিন পরও হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কসাই কাজে ব্যবহৃত ধারালো একটি ছোরা ব্যবহার করা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ প্রাথমিকভাবে মাংস বিক্রেতা শাহ আলম এবং গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছে। খুনিরা নিহতের পরিবারের পূর্বপরিচিত হতে পারে বলেও ধারণা করছে পুলিশ। এদিকে, বৃহস্পতিবার মা-মেয়েকে খুনের ঘটনায় নিহত নাসিমার স্বামী ও মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম এবং গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিকে আটক করে পুলিশ। রাত ২টা পর্যন্ত তাদের দু’জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশের একাধিক টিম। সন্দেহভাজন হিসেবে শাহ আলমের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে কোনো ক্লু না পাওয়ায় রাতে তাকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে তাকে বাদী করে রাত ৩টার দিকে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সদরঘাট থানায় দায়ের করা এ মামলায় কাউকে সুনির্দিষ্ট আসামি করা হয়নি। তবে গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খোঁজা হচ্ছে নিহত নাসিমার স্বামী শাহ আলমের বন্ধু কমল ও ভাই আলালের বন্ধু আইয়ুবকে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে ‘মাল্টিওয়ে পন্থা’ অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি জোনের এসি শাহ মো. আবদুর রউফ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই বাসায় নিয়মিত অনেকের যাতায়াত ছিল। শাহ আলম দম্পতির ছেলে রিয়াদ, তাদের ঘনিষ্ঠ পরিচিত বা প্রায়ই আসা-যাওয়া আছে, এমন তিনজনের কথা বলেছে পুলিশকে। এদের মধ্যে তাদের গৃহশিক্ষক আমিনুল ইসলাম রকিও রয়েছে। এছাড়া বাকি দু’জন হল নিহত নাসিমার স্বামী শাহ আলমের বন্ধু কমল দাশ ও শাহ আলমের শ্যালক আলালের বন্ধু আইয়ুব। ঘটনার পর থেকে এই দু’জনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পুলিশের সন্দেহ আরও বেড়েছে।

কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, ‘মামলাটির আইও সদরঘাট থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ নিজেই। তবে তিনি ছাড়াও সিআইডি ও ডিবির একাধিক টিম তদন্তে সহায়তা করছে। ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

মায়ের লাশ ঘিরে কেটেছে হৃদয়ের দিন : ‘আম্মু বলেছিল ছুটির দিনে শুক্রবার সবাইকে নিয়ে কাজির দেউড়ি শিশুপার্কে ঘুরতে যাবে। রাতে বাসায় বিরিয়ানি রান্না করবে। এ জন্য রাতে ভালো করে ক্লাসের পড়া শিখে নিতেও বলেছিল। আমি পড়েছিও। আম্মুকে নিয়ে আর শিশুপার্কে ঘুরতে যেতে পারব না।’ এ কথা বলতেই নিহত নাসিমা আক্তারের বড় ছেলে হৃদয়ের চোখে অঝোর ধারায় গড়িয়ে পড়তে থাকে পানি। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে কথা হয় মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয় হোসেনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার যখন বাসায় তার মা নাসিমা আকতার ও ছোট বোন রিয়া দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হচ্ছিল তখন হৃদয় ছিল স্কুলে। তার ছোট ভাই রিয়াদও। কিন্তু সেই স্নেহ-মমতা ও স্কুল ব্যাগ গুছিয়ে দেয়াটাই যে শেষবারের মতো হবে তা কল্পনাই করতে পারেনি হৃদয় কিংবা তার ছোট ভাই রিয়াদ।



 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র