jugantor
পৌর নির্বাচন একটা বড় সুযোগ

  আমিনুজ্জামান  

২১ ডিসেম্বর ২০১৫, ০০:০০:০০  | 

আসন্ন পৌর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফিরে আসতে পারে গণতন্ত্র। রাজনীতিক, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা কথাবার্তায় এরই মধ্যে একটা স্বস্তির সুবাতাস বইছে রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ ছোট-বড় প্রায় সব দল, নানা সমাজশক্তি, এমনকি ব্যক্তিবিশেষ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশ সৃষ্টির যে ঐতিহাসিকতা আমাদের নাচায়, গৌরবান্বিত করে, অনুপ্রেরণা জোগায়- তার পেছনেও ছিল একটি নির্বাচন। বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্তের ফল হিসেবে সেই নির্বাচন আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় এনে দিয়েছিল। বিশেষ করে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তান অংশে (বর্তমান বাংলাদেশ) আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল ভূমিধস বিজয়। এ বিজয় রথে চড়ে ঐক্যের ভেতর ঐক্য গড়ে তোলা নানা সমীকরণের যোগফল আজকের বাংলাদেশ। সেই সময় প্রগতিশীল রাজনীতির একটি বড় অংশ নির্বাচন বর্জন করেছিল। ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন কর- তাদের এমন বিপ্লবী স্লোগান মানুষকে খুব একটা সম্পৃক্ত করতে পারেনি। এ দেশের মানুষ বরাবরই গণতন্ত্রমনা। মানুষের এ নাড়ির খবর বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধু সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেকে রাজনীতির উচ্চ মোকামে পৌঁছে দেন। জয় আসে গণতন্ত্রের। জয়ের সেই শক্তি সম্পৃক্ত করে সবাইকে, যা গড়ায় জনযুদ্ধে। আর সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ।

কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই গণতন্ত্র রং পাল্টাতে শুরু করে। খেয়াল-খুশিমতো একেক সময় একেক রঙের লেবেল এঁটে দেয়া হয় তার শরীরে। ফলে বিবর্ণ হয়ে পড়ে গণতন্ত্র। ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দলীয় স্বার্থে কখনও কখনও গণতন্ত্রকে নির্বাসনেও পাঠিয়ে দেয়া হয়। শাসকদের খেয়াল-খুশির ইচ্ছায় গণতন্ত্র আসে, গণতন্ত্র যায়।

৯০-এর ছাত্র-গণআন্দোলনের পর এরশাদ সরকারের পতন হলে অনেকদিন পর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। পালাক্রমে দেশ শাসন করে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ। কিন্তু দিনে দিনে পরস্পরের প্রতি হিংসার আগুনের শিখা বড় হতে থাকে। এরই মধ্যে প্রায় দুই বছর আগে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন হিংসা আর প্রতিহিংসার আগুনে যেন ঘি ঢেলে দেয়। এরপর থেকে একের পর এক হত্যা, গুম, খুন, নাশকতা, পেট্রল দিয়ে মানুষ হত্যা করা, হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, যত্রতত্র লাশ পড়ে থাকা, অরাজকতা আর নৈরাজ্যের এক অদ্ভুত আঁধার ঘিরে ফেলে বাংলাদেশকে। চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। ঠিক এমনই এক মুহূর্তে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করতেই পারি পৌরসভার এ নির্বাচন ’৭০ আর ’৯০-এর মতো গণতন্ত্রের নতুন ধারা তৈরি করবে।

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাস সুখের নয়। প্রভাব-প্রতিপত্তি, টাকা-পয়সা, হুন্ডা-গুণ্ডা, হুমকি-ধমকি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাইসহ নানা অনিয়ম নির্বাচনকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ পড়েছে। সেসব প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে বিজয়ী প্রতিনিধিরাও জনগণের তরফ থেকে যথাযথ সম্মান পাননি। দূরত্ব তৈরি হয় জনগণের সঙ্গে প্রতিনিধিদের। গত প্রায় ২ বছরে ছোট-বড় তিনটি নির্বাচন জনগণকে নানা বেদনা দিয়েছে। গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট যে আন্দোলন করল, জনগণের বেদনা তাতে আরও বেড়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আগামী পৌরসভার নির্বাচন। ঠিকঠাকভাবেই নির্বাচন উঠাতে পারলে জনগণের বেদনা কমবে বৈকি।

জনগণ হাঁপিয়ে উঠেছে। বর্তমান রাজনীতির যে সংস্কৃতি তা যেন জীবন-মরণের খেলা। ক্ষমতায় গেলে জীবন সুশোভিত হয়, গাড়ি-বাড়ি হয়ে যায় রাতারাতি। ফুলে-ফেঁপে উঠে ব্যাংক ব্যালেন্স। শত শত বিঘা জমি চলে আসে হাতের মুঠোয়। শান-মান বেড়ে যায়। কত নর্দন-কুর্দন, হাসাহাসি। এসব হাতের পাঁচ ছেড়ে দিতে আছে নাকি? সুতরাং উড়িয়ে গুঁড়িয়ে দাও যত সব ভিন্নমত, পথ, রাজনীতি।

বিরোধী দলে গেলে মহাসর্বনাশ। হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, ঘরছাড়া, কত নির্ঘুম রাত। ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হওয়া, এমনকি গুম, খুন, ক্রসফায়ার। সুতরাং কোনো অবস্থায়ই বিরোধী দলে বসা যাবে না। বিরোধী দলে যাওয়া মানে মরণফাঁদ। এই যে সর্বনাশা রাজনীতির সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে- এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এক সময় মানুষের অভাব-অনটন ছিল, খাদ্য ঘাটতি ছিল। না খেয়ে মানুষ মারা যেত। এখন একজন পথের ভিক্ষুকও তিনবেলা না হোক দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেতে পায়। পরনের কাপড়টিরও কোনো অনটন নেই। এমন সময়ে এসে শুধু বাড়তি বিলাসিতার জন্য যত সব অনাসৃষ্টি। তাই বলি, জেদাজেদি বাদ দিয়ে জনগণের মনে শান্তি ফিরিয়ে দিতে কাজ করুন। একটা সুযোগ এসেছে তাকে কাজে লাগান। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলুন। সঠিক নেতৃত্ব বেছে নিতে দিন তাদের। এটা কোনো সুযোগ নয়, অধিকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘এ দেশের সবাই আমার আত্মীয়।’ কথাটার ভেতর একটা শিহরণ আছে। রাষ্ট্রনায়কোচিত উচ্চতাও আছে। তার এই কথা যেন নিছক কথার কথা না হয়। এই যে শিহরণ জাগালেন, তাতে তার প্রতি একটা নিবেদন তৈরি হয়েছে। নিবেদনটা হল, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয় তার জন্য কাজ করে যাওয়া। এতে আখেরে তারই লাভ হবে। প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের একটি বক্তব্যও তুলে ধরা যায়। তিনি বলেছিলেন, আকাশ দিয়ে একঝাঁক পাখি উড়ে যাচ্ছিল। শিকারিও ওঁৎ পেতে বসেছিল। গুলি ছোড়ামাত্র পাখিগুলো দিগ্বিদিক হারিয়ে যার যার মতো ছুটে চলল। একটি সাহসী পাখি কুক করে ডেকে উঠল, অমনি ছন্নছাড়া পাখিগুলো তার পিছু নিল এবং পুনরায় ঝাঁক বেঁধে চলল। নেতা পাখিটির মতো আপনি ডাক দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা শোনান। দেখবেন আপনাকে অনুসরণ করছে সবাই। রাজনীতিও তার একটা বিপজ্জনক বাঁক অতিক্রম করে দেখবেন পুষ্পের হাসি হাসছে। গণতন্ত্রে প্রত্যেককে কিছু কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। দায়িত্বও নিতে হয়।

আমিনুজ্জামান : ঔপন্যাসিক ও প্রবন্ধকার




 

সাবমিট

পৌর নির্বাচন একটা বড় সুযোগ

 আমিনুজ্জামান 
২১ ডিসেম্বর ২০১৫, ১২:০০ এএম  | 

আসন্ন পৌর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফিরে আসতে পারে গণতন্ত্র। রাজনীতিক, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা কথাবার্তায় এরই মধ্যে একটা স্বস্তির সুবাতাস বইছে রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ ছোট-বড় প্রায় সব দল, নানা সমাজশক্তি, এমনকি ব্যক্তিবিশেষ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশ সৃষ্টির যে ঐতিহাসিকতা আমাদের নাচায়, গৌরবান্বিত করে, অনুপ্রেরণা জোগায়- তার পেছনেও ছিল একটি নির্বাচন। বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্তের ফল হিসেবে সেই নির্বাচন আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় এনে দিয়েছিল। বিশেষ করে সে সময়ের পূর্ব পাকিস্তান অংশে (বর্তমান বাংলাদেশ) আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল ভূমিধস বিজয়। এ বিজয় রথে চড়ে ঐক্যের ভেতর ঐক্য গড়ে তোলা নানা সমীকরণের যোগফল আজকের বাংলাদেশ। সেই সময় প্রগতিশীল রাজনীতির একটি বড় অংশ নির্বাচন বর্জন করেছিল। ভোটের বাক্সে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন কর- তাদের এমন বিপ্লবী স্লোগান মানুষকে খুব একটা সম্পৃক্ত করতে পারেনি। এ দেশের মানুষ বরাবরই গণতন্ত্রমনা। মানুষের এ নাড়ির খবর বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধু সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেকে রাজনীতির উচ্চ মোকামে পৌঁছে দেন। জয় আসে গণতন্ত্রের। জয়ের সেই শক্তি সম্পৃক্ত করে সবাইকে, যা গড়ায় জনযুদ্ধে। আর সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ।

কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই গণতন্ত্র রং পাল্টাতে শুরু করে। খেয়াল-খুশিমতো একেক সময় একেক রঙের লেবেল এঁটে দেয়া হয় তার শরীরে। ফলে বিবর্ণ হয়ে পড়ে গণতন্ত্র। ব্যক্তি, গোষ্ঠী কিংবা দলীয় স্বার্থে কখনও কখনও গণতন্ত্রকে নির্বাসনেও পাঠিয়ে দেয়া হয়। শাসকদের খেয়াল-খুশির ইচ্ছায় গণতন্ত্র আসে, গণতন্ত্র যায়।

৯০-এর ছাত্র-গণআন্দোলনের পর এরশাদ সরকারের পতন হলে অনেকদিন পর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। পালাক্রমে দেশ শাসন করে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ। কিন্তু দিনে দিনে পরস্পরের প্রতি হিংসার আগুনের শিখা বড় হতে থাকে। এরই মধ্যে প্রায় দুই বছর আগে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন হিংসা আর প্রতিহিংসার আগুনে যেন ঘি ঢেলে দেয়। এরপর থেকে একের পর এক হত্যা, গুম, খুন, নাশকতা, পেট্রল দিয়ে মানুষ হত্যা করা, হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, যত্রতত্র লাশ পড়ে থাকা, অরাজকতা আর নৈরাজ্যের এক অদ্ভুত আঁধার ঘিরে ফেলে বাংলাদেশকে। চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। ঠিক এমনই এক মুহূর্তে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করতেই পারি পৌরসভার এ নির্বাচন ’৭০ আর ’৯০-এর মতো গণতন্ত্রের নতুন ধারা তৈরি করবে।

বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাস সুখের নয়। প্রভাব-প্রতিপত্তি, টাকা-পয়সা, হুন্ডা-গুণ্ডা, হুমকি-ধমকি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাইসহ নানা অনিয়ম নির্বাচনকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ পড়েছে। সেসব প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে বিজয়ী প্রতিনিধিরাও জনগণের তরফ থেকে যথাযথ সম্মান পাননি। দূরত্ব তৈরি হয় জনগণের সঙ্গে প্রতিনিধিদের। গত প্রায় ২ বছরে ছোট-বড় তিনটি নির্বাচন জনগণকে নানা বেদনা দিয়েছে। গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট যে আন্দোলন করল, জনগণের বেদনা তাতে আরও বেড়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আগামী পৌরসভার নির্বাচন। ঠিকঠাকভাবেই নির্বাচন উঠাতে পারলে জনগণের বেদনা কমবে বৈকি।

জনগণ হাঁপিয়ে উঠেছে। বর্তমান রাজনীতির যে সংস্কৃতি তা যেন জীবন-মরণের খেলা। ক্ষমতায় গেলে জীবন সুশোভিত হয়, গাড়ি-বাড়ি হয়ে যায় রাতারাতি। ফুলে-ফেঁপে উঠে ব্যাংক ব্যালেন্স। শত শত বিঘা জমি চলে আসে হাতের মুঠোয়। শান-মান বেড়ে যায়। কত নর্দন-কুর্দন, হাসাহাসি। এসব হাতের পাঁচ ছেড়ে দিতে আছে নাকি? সুতরাং উড়িয়ে গুঁড়িয়ে দাও যত সব ভিন্নমত, পথ, রাজনীতি।

বিরোধী দলে গেলে মহাসর্বনাশ। হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, ঘরছাড়া, কত নির্ঘুম রাত। ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হওয়া, এমনকি গুম, খুন, ক্রসফায়ার। সুতরাং কোনো অবস্থায়ই বিরোধী দলে বসা যাবে না। বিরোধী দলে যাওয়া মানে মরণফাঁদ। এই যে সর্বনাশা রাজনীতির সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে- এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এক সময় মানুষের অভাব-অনটন ছিল, খাদ্য ঘাটতি ছিল। না খেয়ে মানুষ মারা যেত। এখন একজন পথের ভিক্ষুকও তিনবেলা না হোক দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খেতে পায়। পরনের কাপড়টিরও কোনো অনটন নেই। এমন সময়ে এসে শুধু বাড়তি বিলাসিতার জন্য যত সব অনাসৃষ্টি। তাই বলি, জেদাজেদি বাদ দিয়ে জনগণের মনে শান্তি ফিরিয়ে দিতে কাজ করুন। একটা সুযোগ এসেছে তাকে কাজে লাগান। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলুন। সঠিক নেতৃত্ব বেছে নিতে দিন তাদের। এটা কোনো সুযোগ নয়, অধিকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটা কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, ‘এ দেশের সবাই আমার আত্মীয়।’ কথাটার ভেতর একটা শিহরণ আছে। রাষ্ট্রনায়কোচিত উচ্চতাও আছে। তার এই কথা যেন নিছক কথার কথা না হয়। এই যে শিহরণ জাগালেন, তাতে তার প্রতি একটা নিবেদন তৈরি হয়েছে। নিবেদনটা হল, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয় তার জন্য কাজ করে যাওয়া। এতে আখেরে তারই লাভ হবে। প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের একটি বক্তব্যও তুলে ধরা যায়। তিনি বলেছিলেন, আকাশ দিয়ে একঝাঁক পাখি উড়ে যাচ্ছিল। শিকারিও ওঁৎ পেতে বসেছিল। গুলি ছোড়ামাত্র পাখিগুলো দিগ্বিদিক হারিয়ে যার যার মতো ছুটে চলল। একটি সাহসী পাখি কুক করে ডেকে উঠল, অমনি ছন্নছাড়া পাখিগুলো তার পিছু নিল এবং পুনরায় ঝাঁক বেঁধে চলল। নেতা পাখিটির মতো আপনি ডাক দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা শোনান। দেখবেন আপনাকে অনুসরণ করছে সবাই। রাজনীতিও তার একটা বিপজ্জনক বাঁক অতিক্রম করে দেখবেন পুষ্পের হাসি হাসছে। গণতন্ত্রে প্রত্যেককে কিছু কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। দায়িত্বও নিতে হয়।

আমিনুজ্জামান : ঔপন্যাসিক ও প্রবন্ধকার




 

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র