jugantor
একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি

  ফকির আলমগীর  

২২ জানুয়ারি ২০১৫, ০০:০০:০০  | 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র আর গোবিন্দ হালদার নামটি যেন সমার্থক। গোবিন্দ হালদার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জনপ্রিয় গীতিকার। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় আসে বাংলাদেশে। বিজয়ের এ বাঁধভাঙা আনন্দের মূল্য ছিল মহান আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম আর অসম সাহসের এক অনুপম সমাবেশ। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে চলা মুক্তিযুদ্ধের পেছনে দেশের অগণিত মানুষের ভূমিকাকে যেমন খাটো করে দেখা যাবে না, তেমনি খাটো করা যাবে না এ দেশে জন্ম নয় এমন কিছু মানুষের অবদানও। আজ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সতীর্থ বন্ধু শব্দসৈনিক গোবিন্দ হালদারের বিয়োগ বেদনায় বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই লাল সবুজের সেসব অকৃত্রিম বন্ধুদের। একই সঙ্গে গোবিন্দ হালদারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কথা মনে হতেই মনে পড়বে বালাগঞ্জের সার্কুলার রোডের সেই বাড়িটির কথা। ১৯৭১-এর ২৫ মে, ১১ জ্যৈষ্ঠ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু হল কারণ দিনটি ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জন্মদিন। এ দিনটিকেই উদ্বোধনের জন্য স্থির করেছিল নবগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। যা হোক স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর স্মৃতি কথা থেকে প্রিয় গীতিকার গোবিন্দ হালদারের আবিষ্কারের কথা যেভাবে জানা যায়, লোহানী ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কামাল আহমেদের বন্ধু কবি গোবিন্দ হালদারের সঙ্গে পরিচয়। এমনিতেই ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে স্কুল টেপে লুকিয়ে আনা বাণীবদ্ধ অনুষ্ঠান প্রথম থেকেই প্রচারিত হয়ে আসছিল। কিছু দিন যেতে থাকল, নানা ধরনের অনুষ্ঠান উদ্ভাবন করতে হচ্ছিল, ফলে ভাণ্ডার যখন ফুরিয়ে এলো, নতুন এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গানের প্রয়োজন হল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তখন, শহীদুল ইসলাম, টিএইচ সিকদার, সরদার আলাউদ্দিন, মোশাদ আলী, গণি বোখারী, মোকসেদ আলী সাঁই, শফি বাঙালি প্রমুখ গান বাঁধতে থাকেন। সেই সময় এগিয়ে এলেন লোহানী ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কামাল আহমেদ (বর্তমানে কানাডা প্রবাসী) তার কবি বন্ধু গোবিন্দ হালদারকে লোহানী ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। গোবিন্দ হালদার প্রচুর গান লেখা তার দুটি খাতা লোহানী ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করেন। কামাল লোহানী গানের খাতা দুটির একটি সমর দাসকে অন্যটি আপেল মাহমুদকে দেন গান বাছাই করে সুর করার জন্য। ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানটি সমর দাস সুর করেন। আর ‘একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গান দুটি সুর করেন আপেল মাহমুদ। আপেল মাহমুদের সুরে স্বপ্না রায় কণ্ঠ দেন কালজয়ী ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গানটিতে। আর আপেল মাহমুদ কণ্ঠ দেন ‘একটি ফুলকে’ গানটিতে।

গীতিকার গোবিন্দ হালদার বাঙালিকে কাঁদিয়ে ১৭ জানুয়ারি সকালে কলকাতায় পরোলোকগমন করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বহুদিন শারীরিকভাবে ভুগেছেন কিডনি, লিভার, নিউরো, চর্ম ও চোখের সমস্যায়। বাকশক্তিও প্রায় রহিত ছিল। নিজ ঘর ছেড়ে পরবাসী হয়ে জীবনযাপন করেছেন হাওড়া জেলার বকুলতলার নজিরগঞ্জে সেখানে গোবিন্দ হালদারের স্ত্রী পারুল হালদারের বাবার বাড়ি। গোবিন্দ হালদারের মেয়ে পত্রপত্রিকায় বারবার অভিযোগ করেছেন তার চিকিৎসা এবং আর্থিক অসচ্ছলতার ব্যাপারে।

তবে বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু গোবিন্দ হালদারকে মুক্তিযুদ্ধে অনান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করেছে। এর আগে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ত্রাণ তহবিল থেকে গোবিন্দ হালদারকে ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বাংলাদেশ সরকার বহন করবে বলেও প্রতিশ্র“তি দেন।

যা হোক, গোবিন্দ হালদার আর আমাদের মাঝে নেই। নেই মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু জর্জ হ্যারিসন, রবিশংকর, ভূপেন হাজারিকা, দেব দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, গৌরি প্রসন্ন মজুমদারসহ অনেকে। পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সমর দাস, প্রবাল চৌধুরী, বিপুল ভট্টাচার্য, মোকসেদ আলী সাঁই, সর্দার আলাউদ্দিন, বাবুল আকতার, অবিনাশ চন্দ্র শীল, অজিত রায়, এমআর আকতার মুকুল, শেফালী ঘোষ, মান্না হক, মহসিন আলী, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ১০ জনের অনেকে আমাদের মধ্যে আর নেই। সম্প্রতি হারিয়েছি সুবল দত্তকে। তার অবদানই কি কম, অর্থ কষ্টে বিনা চিকিৎসায় তিনি সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কেউ এমনি অর্থ কষ্টে বিনা চিকিৎসায় মারা যাক তা কেউ কামনা করেন না। যেমনি আমরা কেউ গোবিন্দ হালদারের এমনি রোগে ভুগে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চাইনি। চাইনি তার মরণোত্তর মূল্যায়নের বিষয়।

গীতিকার, বাংলাদেশের পরম বন্ধু গোবিন্দ হালদার তার গানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন। আর আপেল মাহমুদ, সমর দাস, কালজয়ী সুর দিয়ে সেই গানকে জনপ্রিয় করেছিলেন। কেবল তাই নয় আপেল মাহমুদের মাধুর্যময় কণ্ঠে, স্বপ্না রায়ের অসাধারণ গায়কীতে সেদিন মুক্তিযুদ্ধে এসব গান প্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। আজ সমর দাস নেই গোবিন্দ হালদারও চলে গেলেন, স্বপ্না রায়য়ের খোঁজও কেউ নেয় না। কেবল আপেল মাহমুদ সেসব দিনের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন। আমরা স্বপ্না রায়ের সন্ধান চাই। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন?

লেখক: গণগঙ্গীতশিল্পী


 

সাবমিট

একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি

 ফকির আলমগীর 
২২ জানুয়ারি ২০১৫, ১২:০০ এএম  | 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র আর গোবিন্দ হালদার নামটি যেন সমার্থক। গোবিন্দ হালদার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জনপ্রিয় গীতিকার। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বিদেশী বন্ধু। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় আসে বাংলাদেশে। বিজয়ের এ বাঁধভাঙা আনন্দের মূল্য ছিল মহান আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম আর অসম সাহসের এক অনুপম সমাবেশ। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে চলা মুক্তিযুদ্ধের পেছনে দেশের অগণিত মানুষের ভূমিকাকে যেমন খাটো করে দেখা যাবে না, তেমনি খাটো করা যাবে না এ দেশে জন্ম নয় এমন কিছু মানুষের অবদানও। আজ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সতীর্থ বন্ধু শব্দসৈনিক গোবিন্দ হালদারের বিয়োগ বেদনায় বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই লাল সবুজের সেসব অকৃত্রিম বন্ধুদের। একই সঙ্গে গোবিন্দ হালদারের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কথা মনে হতেই মনে পড়বে বালাগঞ্জের সার্কুলার রোডের সেই বাড়িটির কথা। ১৯৭১-এর ২৫ মে, ১১ জ্যৈষ্ঠ, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু হল কারণ দিনটি ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের জন্মদিন। এ দিনটিকেই উদ্বোধনের জন্য স্থির করেছিল নবগঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। যা হোক স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর স্মৃতি কথা থেকে প্রিয় গীতিকার গোবিন্দ হালদারের আবিষ্কারের কথা যেভাবে জানা যায়, লোহানী ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কামাল আহমেদের বন্ধু কবি গোবিন্দ হালদারের সঙ্গে পরিচয়। এমনিতেই ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে স্কুল টেপে লুকিয়ে আনা বাণীবদ্ধ অনুষ্ঠান প্রথম থেকেই প্রচারিত হয়ে আসছিল। কিছু দিন যেতে থাকল, নানা ধরনের অনুষ্ঠান উদ্ভাবন করতে হচ্ছিল, ফলে ভাণ্ডার যখন ফুরিয়ে এলো, নতুন এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গানের প্রয়োজন হল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে তখন, শহীদুল ইসলাম, টিএইচ সিকদার, সরদার আলাউদ্দিন, মোশাদ আলী, গণি বোখারী, মোকসেদ আলী সাঁই, শফি বাঙালি প্রমুখ গান বাঁধতে থাকেন। সেই সময় এগিয়ে এলেন লোহানী ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কামাল আহমেদ (বর্তমানে কানাডা প্রবাসী) তার কবি বন্ধু গোবিন্দ হালদারকে লোহানী ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। গোবিন্দ হালদার প্রচুর গান লেখা তার দুটি খাতা লোহানী ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করেন। কামাল লোহানী গানের খাতা দুটির একটি সমর দাসকে অন্যটি আপেল মাহমুদকে দেন গান বাছাই করে সুর করার জন্য। ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানটি সমর দাস সুর করেন। আর ‘একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গান দুটি সুর করেন আপেল মাহমুদ। আপেল মাহমুদের সুরে স্বপ্না রায় কণ্ঠ দেন কালজয়ী ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গানটিতে। আর আপেল মাহমুদ কণ্ঠ দেন ‘একটি ফুলকে’ গানটিতে।

গীতিকার গোবিন্দ হালদার বাঙালিকে কাঁদিয়ে ১৭ জানুয়ারি সকালে কলকাতায় পরোলোকগমন করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বহুদিন শারীরিকভাবে ভুগেছেন কিডনি, লিভার, নিউরো, চর্ম ও চোখের সমস্যায়। বাকশক্তিও প্রায় রহিত ছিল। নিজ ঘর ছেড়ে পরবাসী হয়ে জীবনযাপন করেছেন হাওড়া জেলার বকুলতলার নজিরগঞ্জে সেখানে গোবিন্দ হালদারের স্ত্রী পারুল হালদারের বাবার বাড়ি। গোবিন্দ হালদারের মেয়ে পত্রপত্রিকায় বারবার অভিযোগ করেছেন তার চিকিৎসা এবং আর্থিক অসচ্ছলতার ব্যাপারে।

তবে বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু গোবিন্দ হালদারকে মুক্তিযুদ্ধে অনান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করেছে। এর আগে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ত্রাণ তহবিল থেকে গোবিন্দ হালদারকে ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেন। তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বাংলাদেশ সরকার বহন করবে বলেও প্রতিশ্র“তি দেন।

যা হোক, গোবিন্দ হালদার আর আমাদের মাঝে নেই। নেই মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু জর্জ হ্যারিসন, রবিশংকর, ভূপেন হাজারিকা, দেব দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল মিত্র, গৌরি প্রসন্ন মজুমদারসহ অনেকে। পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সমর দাস, প্রবাল চৌধুরী, বিপুল ভট্টাচার্য, মোকসেদ আলী সাঁই, সর্দার আলাউদ্দিন, বাবুল আকতার, অবিনাশ চন্দ্র শীল, অজিত রায়, এমআর আকতার মুকুল, শেফালী ঘোষ, মান্না হক, মহসিন আলী, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ১০ জনের অনেকে আমাদের মধ্যে আর নেই। সম্প্রতি হারিয়েছি সুবল দত্তকে। তার অবদানই কি কম, অর্থ কষ্টে বিনা চিকিৎসায় তিনি সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কেউ এমনি অর্থ কষ্টে বিনা চিকিৎসায় মারা যাক তা কেউ কামনা করেন না। যেমনি আমরা কেউ গোবিন্দ হালদারের এমনি রোগে ভুগে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে চাইনি। চাইনি তার মরণোত্তর মূল্যায়নের বিষয়।

গীতিকার, বাংলাদেশের পরম বন্ধু গোবিন্দ হালদার তার গানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছিলেন। আর আপেল মাহমুদ, সমর দাস, কালজয়ী সুর দিয়ে সেই গানকে জনপ্রিয় করেছিলেন। কেবল তাই নয় আপেল মাহমুদের মাধুর্যময় কণ্ঠে, স্বপ্না রায়ের অসাধারণ গায়কীতে সেদিন মুক্তিযুদ্ধে এসব গান প্রেরণা সৃষ্টি করেছিল। আজ সমর দাস নেই গোবিন্দ হালদারও চলে গেলেন, স্বপ্না রায়য়ের খোঁজও কেউ নেয় না। কেবল আপেল মাহমুদ সেসব দিনের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন। আমরা স্বপ্না রায়ের সন্ধান চাই। তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন?

লেখক: গণগঙ্গীতশিল্পী


 

 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র