Logo
Logo
×

বাতায়ন

এ অঞ্চলের অস্থিরতা এবং আমাদের করণীয়

Icon

জিয়া আহমদ

প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এ অঞ্চলের অস্থিরতা এবং আমাদের করণীয়

বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেওয়ার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক কোনোদিনই তেমন ভালো ছিল না। এটিকে এমনকি অম্লমধুর সম্পর্কও বলা যাবে না; বরং আদা-কাঁচকলায় সম্পর্ক বলাটা অধিক যুক্তিযুক্ত হবে। ৭৫ বছর আগে আলোচনার টেবিলে এ দুই দেশ স্বাধীনতা পাওয়ার পর এ পর্যন্ত তিনবার বড়সড় যুদ্ধে এবং অন্তত তিনবার ছোটখাটো যুদ্ধে জড়িয়েছে। কিন্তু যুদ্ধের মূল কারণ, অর্থাৎ পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস দূর করার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ কখনো লক্ষ করা যায়নি। এমনকি সেদিন, গত ৭ মে এ দুই দেশ একটা বড়সড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল। কিন্তু শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ায় এ যাত্রা বড় যুদ্ধটাকে এড়ানো গেছে। কিন্তু এর পরবর্তী সংঘাতটাই যে বড় কোনো যুদ্ধে (এমনকি পারমাণবিক যুদ্ধে) রূপলাভ করবে না, তা বলা মুশকিল। যুদ্ধ আপাতত শেষ; কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের ভীতি ও আতঙ্ক শেষ হতে বহু বাকি।

গত ২২ এপ্রিল ভারতের দখলকৃত জম্মু-কাশ্মীরে একদল সন্ত্রাসী কাশ্মীরের ‘পেহেলগাম’ নামক স্থানে একটি জঙ্গি হামলা করে। এ জঙ্গি হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হয়। প্রথম থেকেই এ বিষয়ে ভারতের মনোভাব ও বক্তব্য ছিল এটি পাকিস্তানসমর্থিত ইসলামি জঙ্গিদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এর পক্ষে তারা The Resistance Front (TRF) নামক সংগঠনের দায়িত্ব স্বীকারের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসে, যারা ‘লস্কর ই তাইয়েবার’ অনুসারী বলে প্রচারিত। যদিও পাকিস্তান এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছিল; কিন্তু ভারত এর পেছনে পাকিস্তানের মদদের বিষয়টিকে সামনে এনে প্রচারণা চালাতে থাকে। তারা তাদের প্রচারমাধ্যমগুলোয় প্রচার করে, জঙ্গিরা আক্রান্ত পর্যটকদের হিন্দু পরিচয় নিশ্চিত করার পর হত্যা করে। এটি যে সর্বৈব মিথ্যা, তা পরবর্তীকালে ভারতের মিডিয়ায়ই প্রকাশিত হয়েছে। পরিসংখ্যান দেখা যায়, নিহত পর্যটকদের মধ্যে ১৫ মুসলিম এবং ১১ হিন্দু। পরবর্তীকালে আরও বেরিয়ে আসে স্থানীয় মুসলিম গাইড/ড্রাইভারদের বীরত্বগাথা। একজন গাড়িচালক তার গাড়ির যাত্রীদের রক্ষা করতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দেন।

ঘটনার পরপরই ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ এলাকা ঘিরে ফেলে এবং জঙ্গিদের ধরার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। কিন্তু তাদের ধরা সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে ভারত সরকার এবং ‘ভারতীয় মিডিয়া’ এ হামলার পেছনে পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে বক্তব্য দিতে থাকে। ভারতের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই ৯৩ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীরের জনগণ এ অধিভুক্তিকরণের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ দেখিয়ে আসছিল। ভারতের সংবিধানে প্রদত্ত ভারতের অধিকৃত কাশ্মীর রাজ্যটির বিশেষ অবস্থান নির্দেশক ‘আর্টিকেল-৩৭০’ বাতিল করার পর কাশ্মীরিদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। তাছাড়া ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরি জনগণের স্বাধীনতার দাবিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য এমন কোনো কাজ নেই, যা গত ৭৫ বছরে করেনি। ভূস্বর্গ বলে পরিচিত কাশ্মীরকে তারা একটি অবরুদ্ধ জনপদে পরিণত করেছে। গত পৌনে এক শতকে তাদের নিবর্তনমূলক আচরণের কারণে কাশ্মীরের জনগণ শিক্ষা-দীক্ষায় যেমন পিছিয়ে পড়েছে, তেমনই তাদের আর্থিক অবস্থাও সঙ্গিন হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে, যখন সারা ভারতেই পরিকল্পিতভাবে মুসলিমবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে ‘হিন্দুত্ববাদ’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। তার ওপর ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরিদের ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আয়োজিত যে কোনো মিটিং/শোভাযাত্রাকে ‘পেলেট গান’ ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে। এতে হাজার হাজার কাশ্মীরি তরুণ-যুবকের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে গেছে চিরতরে। আর অঙ্গহানি ঘটেছে অগণিত কাশ্মীরি তরুণ-যুবকের।

বেশ কিছুদিন ধরে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে লক্ষ করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য শেষ হয়ে যাওয়া, আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর কথিত বন্ধু ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের’ কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়া, রাজ্যসভার নির্বাচনে ফলাফল আশানুরূপ না হওয়া-এসব মিলে মিস্টার নরেন্দ্র মোদি খুব চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাছাড়া তার সরকারের সঙ্গী মিস্টার নীতিশ কুমারের বিহার রাজ্যে নির্বাচন খুবই সন্নিকটে, যেখানে তাদের ফলাফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এসব কারণে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্যই কাশ্মীরের ‘পেহেলগামে’ এ রক্তাক্ত কাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। আর সে কারণেই ওই ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের যুক্ত থাকার কোনো প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও মোদির ভারত গত ৭ মে অকস্মাৎ পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়ে বসে।

হামলা অকস্মাৎ হলেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। সে কারণে হামলা চালানোর সময়েই পাকিস্তানের বাহিনীগুলো সক্রিয় হয়ে উঠে এবং হামলা প্রতিহত করতে সচেষ্ট হয়। ২৫ মিনিটের ওই হামলা চালানোর সময়েই ভারতের গর্ব অন্তত দুটি রাফাল যুদ্ধবিমানসহ পাঁচটি (পরবর্তীকালে দাবিকৃত আরও একটি) যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে সক্ষম হয় পাকিস্তানের দেশরক্ষা বাহিনীগুলো। রাফালের মতো আধুনিকতম যুদ্ধবিমান ধ্বংস হওয়া যেমন বিস্ময়কর, তেমনই এ ঘটনা ভারতের মনোবলকে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ঘটনায় ভারতের তো বটেই, সারা বিশ্বেরই তাক লেগে যায়। ফলে ভারত দ্বিতীয়বার আর আক্রমণ করেনি। অপরদিকে পাকিস্তান ১০ মে পালটা আক্রমণ করে। সে আক্রমণকালে আকাশযুদ্ধে লিপ্ত হয় উভয় দেশের যুদ্ধবিমান ও ড্রোনবহর। সে যুদ্ধেও ভারতের সাফল্যের কথা তেমনভাবে উচ্চারিত হয়নি। পরবর্তীকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চার দিনব্যাপী এ যুদ্ধের আপাত সমাপ্তি ঘটে।

বর্তমান সময়ে যুদ্ধটা হয়ে গেছে প্রযুক্তি, অর্থ, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা এবং মিডিয়ার ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। সে কারণে ভারত বহু অর্থ ব্যয় করে রাফালের মতো যুদ্ধবিমান কিনেছে। অপরদিকে পাকিস্তান আস্থা রেখেছিল তার পুরোনো মিত্র চায়নার বিমান ও মিসাইলের ওপরই। বস্তুত এ যুদ্ধটা পশ্চিমা প্রযুক্তির বিপরীতে চীনা প্রযুক্তির উল্লম্ফনের একটা প্রদর্শনী হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এ যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে রাফালের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান দাসাউ এভিয়েশনের (Dassault Aviation) শেয়ারের বাজারদর ইতোমধ্যেই ৭ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে, অপরদিকে পাকিস্তানের ব্যবহৃত চায়নার তৈরি জে-১০সি বিমানটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের (Chengdu Aircraft Industry group) শেয়ারের বাজার মূল্য ১৮ শতাংশ মতো বেড়ে গেছে। যুদ্ধবিমান ছাড়াও ভারতের আরেক গর্ব রাশিয়ার তৈরি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’ও তেমন কার্যকর প্রমাণিত হয়নি। ফলে ইতোমধ্যে ভারত রাশিয়া থেকে পরবর্তী প্রজন্মের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘এস-৫০০’ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ যুদ্ধে ভারত ব্যবহার করেছে তার নিজের দেশের তৈরি ড্রোনসহ ইসরাইলের তৈরি উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন। বিপরীতে পাকিস্তান ব্যবহার করেছে মূলত তুরস্কের তৈরি ড্রোন। কিন্তু এক্ষেত্রেও ভারত এগিয়ে থাকতে পারেনি। যদিও ইসরাইলের তৈরি ড্রোন খুবই উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন, কিন্তু সংখ্যাস্বল্পতার কারণে ভারত এক্ষেত্রে তেমন সফল হতে পারেনি। ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো, অন্যান্য দেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক। ভারতের কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নেই। ফলে যুদ্ধকালে পাকিস্তান যেমন চীন ও তুরস্কের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছে, ভারতের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। তবে মিডিয়াকে যদি গণ্য করতে হয়, তাহলে ভারতের মিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান একেবারে ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ‘গুজব ছড়ানো’ মিডিয়া হিসাবে পরিচিত ভারতের মিডিয়ার কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকার কারণে এমনকি ভারতেও তাদের প্রচারিত সংবাদকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আর সংঘাতকালে ভারতীয় মিডিয়া তাদের দেশের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টিকে আড়াল করে রাখার চেষ্টার কারণে বিশ্ববাসীকে রয়টার্স বা সিএনএনের মতো মিডিয়ার দ্বারস্থ হতে হয়েছে প্রকৃত তথ্য জানার জন্য।

তবে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে ভারতেই। ভারতের পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা মোদি সরকারকে তুলাধুনা করছে তার এ অ্যাডভেঞ্চারের জন্য। ভারতীয়রা আরও বেশি ক্ষুব্ধ তাদের দেশের সামরিক বাহিনীর এ বিজয়বিহীন প্রত্যাবর্তনের কারণে; যখন নরেন্দ্র মোদি তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিজয় শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ নিয়ে ভারতের বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও চলছে বিজেপি সরকার তথা মোদিবিরোধী প্রচারণা, যা তার দল ও সহযোগীদের সামনের নির্বাচনে পরাজয়কে ত্বরান্বিত করতে পারে।

চারদিনের এ যুদ্ধে পাকিস্তান যেমন ভারতের অহংকারকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে, তেমনি পশ্চিমা দুনিয়াকেও নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছে। বর্তমান চীনা যুদ্ধপ্রযুক্তিকে মোকাবিলা করতে হলে তাদের সামনে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। অপরদিকে ভারতের সরকারের পক্ষে আর মিথ্যা দিয়ে এ পরাজয়কে ঢেকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শিগ্গিরই ভারত তার হৃতগৌরব (?) ফিরিয়ে আনার জন্য আবারও যে কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে যেতে পারে, যার লক্ষণ ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। ভারত তার প্রতিরক্ষা বাজেট ৫০,০০০ কোটি রুপি বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর বের হয়েছে। তবে এ মুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া অসুবিধাজনক হওয়ায় তারা অন্য কোনো দুর্বল প্রতিবেশীর ওপর চড়াও হতে পারে। আমাদের সংকটটা ঐখানেই। ভারত ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ থেকে বহুদূরের গুজরাট রাজ্যসহ সে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাংলাভাষীদের ধরে এনে বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করা শুরু করেছে। তারা এমনকি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদেরও বাংলাদেশে ‘পুশ-ইন’ করছে। এসবই যদিও খুব উসকানিমূলক, তবুও বাংলাদেশের উচিত হবে কোনো ধরনের উসকানিতে সাড়া না দিয়ে বিষয়টিকে বিশ্বসভায় তুলে ধরা।

বর্তমানে ভীষণ উত্তপ্ত এ উপমহাদেশে একাধিক যুদ্ধ চলমান রয়েছে বা নতুন করে শুরুর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সঙ্গে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাত চলমান। আমাদের একদম সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন অবরুদ্ধ ওই অঞ্চলে ওষুধ ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের প্রস্তাবে (বা চাপে) বাংলাদেশ সরকার একটি ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু মিয়ানমার জান্তার সুহৃদ চীনের এ বিষয়ে আপত্তি রয়েছে, যা বাংলাদেশের চীনা রাষ্ট্রদূত পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া ওই করিডরের বিনিময়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সে অঞ্চলে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা থাকলেও এ কাজের পেছনে একটা যুক্তি থাকত। দুর্ভাগ্যবশত তা না হয়ে গত কয়েক মাসে আরও সোয়া লাখেরও বেশি নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ফলে বাংলাদেশের ‘মানবিক করিডর’ দিতে গিয়ে নিজ দেশের কোনো উপকার না হলেও একটি পরাশক্তির বিরাগভাজন হতে যাচ্ছে, যা কোনোভাবেই দেশের জন্য মঙ্গলজনক না। আর ইতিহাসের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, মানবিক করিডর প্রায়ই যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায় দেশকে, যা আমাদের মতো দরিদ্র দেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়।

এ মুহূর্তে বাংলাদেশকে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে, পূর্বাপর বিবেচনা করে, যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত দেশের অস্তিত্বকেই হুমকির সম্মুখীন করে তুলতে পারে।

জিয়া আহমদ, এনডিসি : সাবেক সরকারি কর্মচারী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক

মানচিত্র

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম