সাইফুল আলম (সাংবাদিক)

সাইফুল আলম
সাইফুল আলম। ছবি: যুগান্তর

সাইফুল আলম বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় পত্রিকা ‘দৈনিক যুগান্তর’-এর সম্পাদক। সাইফুল আলম সম্পর্কে আরও পড়ুন...

জন্ম ১৯৫৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর, ঢাকার ফরাশগঞ্জে। বাবা মোহাম্মদ আলী আরশাদ মিয়া এবং মা বেগম শামসুন নাহার। স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম, পেশায় ব্যাংকার। দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রেদোয়ানা তাবাসসুম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে স্বামীর কর্মক্ষেত্র সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন। নিজেও সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ছোট মেয়ে তানজিনা তাবাসসুম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

শিক্ষাজীবন

সাইফুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৭৭ সালে স্নাতক ও ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু। এরপর মতিঝিল কেন্দ্রীয় সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী এবং মতিঝিল কেন্দ্রীয় সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্ব দেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন।

কর্মজীবন ও সাংবাদিকতা

১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় সাপ্তাহিক ‘কিশোর বাংলা’য় খ-কালীন এবং ১৯৭৯ সালের শেষদিকে পূর্ণকালীন সহ-সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু। এরপর ধারাবাহিকভাবে কোনোরকম ছেদ ছাড়াই আজ পর্যন্ত (১১ এপ্রিল ২০১৯) সাংবাদিকতা পেশায় রয়েছেন। কিশোর বাংলার পর তিনি দৈনিক জনতায় সিনিয়র রিপোর্টার (১৯৮৩-৮৪), দৈনিক নব অভিযানে চিফ রিপোর্টার (১৯৮৫), দৈনিক ইনকিলাবে (১৯৮৬ থেকে ১৯৯৯ আগস্ট পর্যন্ত) সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে আজ অবধি দৈনিক যুগান্তরে চিফ রিপোর্টার, বিশেষ সংবাদদাতা, উপসম্পাদক, নির্বাহী সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন। তিনি সাপ্তাহিক চিত্রালী, মশাল, আগামী, সন্দ্বীপসহ বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাব

সাইফুল আলম সাংবাদিকদের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি, ২০১৭-২০১৮, দুই দফায় যুগ্ম সম্পাদক ১৯৯৫-১৯৯৬, ১৯৯৭-১৯৯৮ ও দু’বার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাইফুল আলম বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের দু’বার নির্বাচিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং কয়েক দফায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকাস্থ বৃহত্তর কুমিল্লা সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য।

সংগঠন

সাইফুল আলম বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘চাঁদের হাট’-এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হিসেবে এক যুগ (১৯৭৯-১৯৯০) দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি শিশু কল্যাণ পরিষদের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সদস্য হিসেবে কয়েক দফায় দায়িত্ব পালন করেন।

সদস্য

সাইফুল আলম বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের (পিআইবি) পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংবাদ সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা বোর্ডের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সম্পাদক পরিষদেরও সদস্য।

রচনা ও প্রকাশনা

প্রথম গ্রন্থ ‘ছেঁড়াপাতা’। শিশু-কিশোর গল্পগ্রন্থ। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত। এর দ্বিতীয় সংস্করণ ‘নিম ফুলের ঘ্রাণ’ নামে প্রকাশিত হয় ১৯৯৬ সালে। দ্বিতীয় গ্রন্থ ছড়া-কবিতা ‘হাত বাড়ালেই আকাশ’। তৃতীয় গ্রন্থ ‘কিছু ভাবনা কিছু কথা’। জাগৃতি থেকে ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়। চতুর্থ গ্রন্থ ‘গণতন্ত্র মাইনাস নয় প্লাসের প্রজ্ঞাই’। এটি দেশ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত। পঞ্চম গ্রন্থ ‘গণতন্ত্রের যাত্রা ও অন্যান্য’। পালল প্রকাশনী থেকে ২০১৯-এ প্রকাশিত হয়।

সম্মাননা

জাতীয় সমন্বিত উন্নয়ন সংস্থা ২০১৭ ও শেরেবাংলা একে ফজলুল হক সম্মাননা ২০১৮ লাভ।

ভ্রমণ

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, হল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড, চীন, সৌদি আরব, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, তুরস্ক, জর্ডান, ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপাল প্রভৃতি দেশ।

সংক্ষিপ্ত...