প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা: বিএনপির এমপি হারুন
যুগান্তর রিপোর্ট
১৯ নভেম্বর ২০২০, ২১:০৪:১৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা বলে মন্তব্য করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদে নিজের দেয়া তিনটি নোটিশ বাতিলের পর তিনি ওই মন্তব্য করেন।
বিএনপির এমপি হারুন বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা নিয়ে কিছু বলছি না। এখানে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। তিনি আমাদের সবার নেতা। বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা তিনি। আমি যে বিষয়গুলো এনেছি আপনি (স্পিকার) দয়া করে সেগুলো প্রধানমন্ত্রীকে দেবেন’।’
এর আগে নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কমিটিতে থাকতে না পেরে সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের নোটিশ দেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। একইসঙ্গে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদে নাম প্রস্তাব করতে না পারা এবং নির্বাচনী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে না পারার জন্যও বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের পৃথক দুটি নোটিশ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকের শুরুতেই নোটিশ তিনটি নাকচ করে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্পিকার বলেন, ‘নোটিশগুলো বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের অধিকারবিষয়ক নয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বিষয়টি সাম্প্রতিক নয়। তৃতীয়টিতে তারিখে গরমিল রয়েছে এবং সংসদের হস্তক্ষেপ করার মতো বিষয়ও নয়। নোটিশ গ্রহণ করা গেলো না বলে দুঃখিত।’ সংবিধানে সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার নিয়ে আইন করার নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি।
একাদশ সংসদে হারুনই প্রথম এই নোটিশ আনলেন। সংসদে এমন কোনও নোটিশ এলে যদি তা গ্রহণ করা হয় তখন স্পিকার তা বিশেষ অধিকার কমিটিতে পাঠাতে পারেন। অবশ্য পরে আইন প্রণয়নের সময় ফ্লোর নিয়ে আলোচনায় হারুন তার বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের নোটিশের প্রসঙ্গ টেনে ওই নোটিশ সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানোর অনুরোধ করেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত জুন মাসে সংসদ অধিবেশনে মুজিব কোট পরে সংসদে যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমের আলোচনার বিষয় হন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ।
মুজিব কোট সাধারণত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরে থাকেন। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবের এ পোশাক পরা নিয়ে ওই সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা হয়।
পরে সংসদে মুজিব কোট পরে যাওয়ার খবর উড়িয়ে দিয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি ব্লু কালারের (নীল রঙ) কটি পরেছি। পাঞ্জাবির সঙ্গে এই কটি সবাই পরে থাকে। এটি নতুন কিছু নয়। মুজিব কোট হয় কালো রঙের। মুজিব কোর্ট তো পরেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন। আমি মুজিব কোট পরতে যাব কেন? আমি তো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গঠিত বিএনপি করি, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি’– যোগ করেন বিএনপির এ নেতা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যে আটজন নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হারুন অন্যতম। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন। বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্যে তার শপথ ঘিরে তখন বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত বিএনপি সংসদে যায়। বিএনপিকে সংসদে নেয়ার ক্ষেত্রে হারুনের ভূমিকা রয়েছে বলে দলটির ভেতরে-বাইরে আলোচনা আছে।
সংসদ নেতা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'আমার নেত্রী' বলেও সম্বোধন করেন তিনি।
আলোচিত ওই বক্তব্যে এমপি হারুন বলেন, 'আমার নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) অনুরোধ করব, অবিলম্বে বিষয়টা(খালেদার মুক্তি) কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা: বিএনপির এমপি হারুন
প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা বলে মন্তব্য করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদে নিজের দেয়া তিনটি নোটিশ বাতিলের পর তিনি ওই মন্তব্য করেন।
বিএনপির এমপি হারুন বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আপনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা নিয়ে কিছু বলছি না। এখানে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। তিনি আমাদের সবার নেতা। বিরোধী দলের সদস্যদেরও নেতা তিনি। আমি যে বিষয়গুলো এনেছি আপনি (স্পিকার) দয়া করে সেগুলো প্রধানমন্ত্রীকে দেবেন’।’
এর আগে নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কমিটিতে থাকতে না পেরে সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের নোটিশ দেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। একইসঙ্গে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদে নাম প্রস্তাব করতে না পারা এবং নির্বাচনী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে না পারার জন্যও বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের পৃথক দুটি নোটিশ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকের শুরুতেই নোটিশ তিনটি নাকচ করে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্পিকার বলেন, ‘নোটিশগুলো বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের অধিকারবিষয়ক নয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বিষয়টি সাম্প্রতিক নয়। তৃতীয়টিতে তারিখে গরমিল রয়েছে এবং সংসদের হস্তক্ষেপ করার মতো বিষয়ও নয়। নোটিশ গ্রহণ করা গেলো না বলে দুঃখিত।’ সংবিধানে সংসদ সদস্যদের বিশেষ অধিকার নিয়ে আইন করার নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি।
একাদশ সংসদে হারুনই প্রথম এই নোটিশ আনলেন। সংসদে এমন কোনও নোটিশ এলে যদি তা গ্রহণ করা হয় তখন স্পিকার তা বিশেষ অধিকার কমিটিতে পাঠাতে পারেন। অবশ্য পরে আইন প্রণয়নের সময় ফ্লোর নিয়ে আলোচনায় হারুন তার বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ণের নোটিশের প্রসঙ্গ টেনে ওই নোটিশ সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানোর অনুরোধ করেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত জুন মাসে সংসদ অধিবেশনে মুজিব কোট পরে সংসদে যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমের আলোচনার বিষয় হন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ।
মুজিব কোট সাধারণত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরে থাকেন। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবের এ পোশাক পরা নিয়ে ওই সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা হয়।
পরে সংসদে মুজিব কোট পরে যাওয়ার খবর উড়িয়ে দিয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমি ব্লু কালারের (নীল রঙ) কটি পরেছি। পাঞ্জাবির সঙ্গে এই কটি সবাই পরে থাকে। এটি নতুন কিছু নয়। মুজিব কোট হয় কালো রঙের। মুজিব কোর্ট তো পরেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন। আমি মুজিব কোট পরতে যাব কেন? আমি তো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গঠিত বিএনপি করি, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি’– যোগ করেন বিএনপির এ নেতা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যে আটজন নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হারুন অন্যতম। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন। বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের মধ্যে তার শপথ ঘিরে তখন বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত বিএনপি সংসদে যায়। বিএনপিকে সংসদে নেয়ার ক্ষেত্রে হারুনের ভূমিকা রয়েছে বলে দলটির ভেতরে-বাইরে আলোচনা আছে।
সংসদ নেতা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'আমার নেত্রী' বলেও সম্বোধন করেন তিনি।
আলোচিত ওই বক্তব্যে এমপি হারুন বলেন, 'আমার নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) অনুরোধ করব, অবিলম্বে বিষয়টা (খালেদার মুক্তি) কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।