নতুন কমিটির প্রথম সভায় যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে হেফাজত
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম
ফাইল ছবি
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের পর নেতাকর্মীদের চাপে শীর্ষ নেতারা অনেকটা নড়েচড়ে বসেছেন।
বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মামলায় জর্জড়িত নেতাদের মামলা থেকে অব্যাহতি এবং কারাবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে তারা একটা সুরাহা চান। যদিও বিষয়টি তারা এখনো প্রকাশ্যে নিয়ে আসেননি।
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নানা পরিকল্পনার বিষয়ে ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা বৃহস্পতিবারের সভার আগে এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি নন। তবে তারা কৌশলী হয়ে বলছেন, এখনই কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সরকারের মুখোমুখি হতে চায় না হেফাজত।
নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও কারাবন্দিদের মুক্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য শেষবারের মতো সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে চায় হেফাজত। এতে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার চাপ রয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
তবে হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কর্মসূচি নিয়ে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
হেফাজতে ইসলামের আমিরের পরিচালিত মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম পরিচিতি সভা ডাকা হয়েছে। ওইদিন সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী। ওই পরিচিতি সভায় হেফাজতের আমির মাওলানা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী সভাপতিত্ব করবেন বলে তিনি জানান।
সদ্য কারামুক্তি পাওয়া এবং হেফাজতে ইসলামের সহকারী মহাসচিব মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী বলেন, সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলা প্রত্যাহার ও নেতাকর্মীর মুক্তির বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এজন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে। এটা না হলে হেফাজত কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে বাধ্য হবে। তবে কর্মসূচি দেওয়ার আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগেই দেশের প্রতিটি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হেফাজতের অবস্থান শক্তিশালী করতে সংগঠন পুনর্গঠন পরবর্তী নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সভায় সংগঠনের হারানো জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই, এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত হবেন বলে জানা গেছে।
পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের সারাদেশের হেফাজত নেতাকর্মীরা আগামীকালের সভায় কী সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি আসছে সেদিকে চেয়ে আছেন।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর ইদরিস বলেন, নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সভায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে আলেম-ওলামা ও হেফাজত নেতাকর্মীদের মামলা থেকে অব্যাহতি ও কারামুক্ত করতে ঘোষিত কর্মসূচিতে দেশের ইসলামি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের যুক্ত করা হবে।
অদৃশ্য কারণে ২০২০ সালে বিলুপ্ত কমিটির সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে এ বছরের ৩১ আগস্ট হেফাজতে ইসলামের ৫৩ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদসহ ২০২ সদস্যের নাম প্রকাশ করে আরও ৯ জনের অন্তর্ভুক্তি সুযোগ রেখে ২১১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।