আবদুল হামিদের দেশছাড়ার প্রসঙ্গে যা বললেন তারেক রহমান

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ০১:২৬ এএম

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে- নানা ইস্যু সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর একটা ক্ষেত্র হয়তো তৈরি করতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি স্বৈরাচার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণের অভিযোগও উঠেছে।
এ সময় তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিমানবন্দর দিয়ে দেশছাড়ার প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি (আবদুল হামিদ) বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছেড়েছেন। আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- সরকার নাকি তার দেশত্যাগের বিষয়ে কিছুই জানে না।
এছাড়া সম্প্রতি কিছু কর্মকাণ্ডে অন্তর্বর্তী সরকার ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা- তা নিয়ে জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ী বার্ক মিলনায়তনে ‘ইস্টার পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময়’ অনুষ্ঠানে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরাম।
এ সময় গুম হওয়া বিএনপি নেতা সাজিদুল ইসলাম সুমনের বাসায় পুলিশি অভিযান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিমানবন্দর দিয়ে দেশছাড়ার প্রসঙ্গে কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন র্যাব সদস্যরা ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা সাজিদুল ইসলাম সুমনকে গুম করে। আজ পর্যন্ত তার হদিস মেলেনি। স্বৈরাচারের শাসনকালে শুধু একজন সুমন নয়, সারা বাংলাদেশে এমন অসংখ্য সুমনদেরকে গুম-খুন-অপহরণ করা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে পলাতক স্বৈরাচারের সময় গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে সুমনের বোনের নেতৃত্বে ২০১৪ সালে গঠিত হয়েছিল সামাজিক একটি সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। অত্যন্ত আশ্চর্য ও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, গুম হওয়া সুমনকে ধরার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় তার বোনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। তারপরে প্রশাসন বলছে- সুমন সম্পর্কে জানতো না তারা। তর্কের খাতিরে আমরা ধরে নিলাম যে ঠিক আছে প্রশাসন সুমন সম্পর্কে হয়তো জানতো না। কিন্তু পলাতক স্বৈরাচার সরকারের সময় একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি (আবদুল হামিদ) বিমানবন্দর দিয়ে চলে গিয়েছে দেশ ছেড়ে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নাকি তার দেশত্যাগের বিষয়ে কিছুই জানে না।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যতজন মানুষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, প্রত্যেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার জানেটা কি? সঙ্গে এও অভিযোগ উঠেছে, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে সরকার একদিকে হয়তো বা পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের নিরাপদে দেশত্যাগে সুযোগ করে দিচ্ছে, অপরদিকে অত্যন্ত সুকৌশলে নানা ইস্যু সৃষ্টি করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদবিরোধী যে রাজনৈতিক দলগুলো আমরা যারা মাঠে ছিলাম, তাদের ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর একটা ক্ষেত্র হয়তো তৈরি করতে চাইছে। পলাতক স্বৈরাচারদের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও হয়তো তৈরি করতে চাইছে। এই বিষয়গুলো ঘুরে ফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জন গমেজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, আব্দুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ’র আর্চবিশপ বিজয় এনডি ক্রুজ, বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের মহাসচিব অনিল লিও কস্তা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।