Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

মওলানা আবুল কালাম আজাদ

Icon

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মওলানা আবুল কালাম আজাদ ছিলেন মুসলিম চিন্তাবিদ। তিনি ১৮৮৮ সালের ১১ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ছিলেন একজন আরব এবং পিতা মওলানা খায়রউদ্দীন ছিলেন আফগান বংশোদ্ভূত বাঙালি মুসলমান। ধর্মের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী পারিবারিক পটভূমির কারণে প্রচলিত ধারায় ইসলামি শিক্ষার চর্চা করা ছাড়া তার অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। প্রাতিষ্ঠানিক আধুনিক শিক্ষা লাভ না করলেও ব্যক্তিগতভাবে অধ্যয়ন ও ব্যাপক পাঠাভ্যাসের মাধ্যমে তিনি উর্দু, ফারসি, হিন্দি ও ইংরেজিতে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তিনি নিজ চেষ্টায় শিক্ষিত হওয়ার পথ অনুসরণ করেন এবং বিশ্ব ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞানের অধিকারী হন।

তার পূর্বপুরুষদের অধিকাংশই ধর্মবেত্তা ছিলেন। খুব অল্প বয়সেই তিনি রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। জামালউদ্দীন আফগানির প্যান ইসলামি মতবাদ ও স্যার সৈয়দ আহমদ খানের আলীগড় চিন্তাধারার প্রতি তিনি বিশেষভাবে মনোযোগী হয়ে ওঠেন। প্যান ইসলামি চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বিভিন্ন দেশে সফর করেন। জীবন ও রাজনীতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ নতুন উপলব্ধি নিয়ে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন।

বিদেশ থেকে ফিরে এসে আজাদ পূর্ব ভারতের দুজন নেতৃস্থানীয় বিপ্লবী শ্রীঅরবিন্দ ঘোষ ও শ্রীশ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ব্রিটিশ শাসনবিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। প্রকৃতপক্ষে একদিকে তিনি ছিলেন একজন গোপন বিপ্লবী এবং অন্যদিকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রকাশ্য কর্মী। তিনি যুক্তি প্রদর্শন করেন, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তি হবে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য, আর সে ঐক্যের ভিত্তিমূল হবে রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সেক্যুলার ধারণা।

১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত আজাদের উর্দু সাপ্তাহিক সংবাদপত্র আল-হেলাল প্রকাশ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অপকর্মের আক্রমণাত্মক সমালোচনা করে। এ পত্রিকা কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী মতামত প্রকাশে একটি শক্তিশালী বিপ্লবী মুখপত্রে পরিণত হয়। সম্প্রদায়ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সৃষ্ট শত্রুতার পর হিন্দু-মুসলমান ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আল-হেলাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকার আল-হেলাল সাপ্তাহিকীকে বিপজ্জনক মতামত প্রচারে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং সে কারণে ১৯১৪ সালে পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আজাদ তখন আল-বালাগ নামে অপর একটি সাপ্তাহিকী প্রকাশ করেন। এ পত্রিকারও উদ্দেশ্য ছিল অভিন্ন অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের ভিত্তিতে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও বিপ্লবী ধ্যান-ধারণা প্রচার করা। ১৯১৬ সালে সরকার এ পত্রিকাও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং আজাদকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে রাঁচিতে অন্তরীণ করে রাখে। সেখান থেকে তিনি ১৯২০ সালে মুক্তি পান। তিনি লেখক হিসাবে ‘আজাদ’ নাম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মারা যান।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম