Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

কাজী নূরুজ্জামান

Icon

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কাজী নূরুজ্জামানের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা খান সাহেব কাজী সদরুল ওলা এবং মাতা রতুবুন্নেসা। কাজী নূরুজ্জামান ১৯৩৯ সালে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪১ সালে আইএসসি পাশ করেন। একই কলেজে ১৯৪৩ সালে কেমিস্ট্রিতে অনার্স ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বার্মা এবং সুমাত্রায় মিত্রশক্তির পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৬ সালে জওহরলাল নেহেরুর আহ্বানে তিনি রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি থেকে আর্মিতে চাকরি স্থানান্তর করে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৪৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের রয়্যাল আর্টিলারি স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে কাশ্মীর যুদ্ধে ঝিলম সেক্টরে যোগদান করেন এবং একই সালে পাকিস্তানের নওশেরায় আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে প্রশিক্ষক নিয়োজিত হন। ১৯৫০ সালে তিনি অফিসার ট্রেনিং স্কুলের ইনস্ট্রাক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। কাজী নূরুজ্জামান ১৯৫৬ সালে মেজর পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ১৯৫৮ সালে স্টাফ কলেজ সম্পন্ন করেন। ১৯৬২ সালে তিনি প্রেষণে ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (ইপিআইডিসি) যোগ দেন। সেখানে পশ্চিম পাকিস্তানি আমলাদের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিলে ১৯৬৯ সালে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন এবং ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে কাজী নূরুজ্জামান ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক কাজী সফিউল্লাহর ব্যাটালিয়নে (ময়মনসিংহ) যোগ দেন। ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর ও তদূর্ধ্ব পদবির কর্মকর্তাদের প্রথম সভায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মে মাসে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচ ক্যাডেট নির্বাচনের জন্য গঠিত পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর সরাসরি নির্দেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ৭নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তিনি ৭নং সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব লাভ করেন। দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী ও পাবনা জেলা এ সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।

কাজী নূরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ক ও আহ্বায়ক হিসাবে গঠন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক কমিটি। তিনি স্বদেশ চিন্তা সংঘ, লেখক শিবির ও গণসংস্কৃতি ফ্রন্টের সদস্য ছিলেন। আশির দশকে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কাজী নূরুজ্জামানকে ‘বীরউত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। ঢাকা সিটি করপোরেশন তার নামে ঢাকার পান্থপথে একটি সড়কের নামকরণ করেছে বীরউত্তম কাজী নূরুজ্জামান সড়ক। ২০১১ সালের ৬ মে ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম