Logo
Logo
×

স্মরণীয়-বরণীয়

খালেক নওয়াজ খান

Icon

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভাষাসৈনিক খালেক নওয়াজ খান ১৯২৬ সালের ২৬ মার্চ ময়মনসিংহের নান্দাইলের আচারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এলাহী নওয়াজ খান ছিলেন একজন সাব ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং মা আলতাফুন্নেছা ছিলেন গৃহিণী। খালেক নওয়াজ খান ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিস স্কুল এবং জলপাইগুড়ি স্কুলে তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। তিনি নান্দাইল চণ্ডীপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৪২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে স্নাতক এবং ১৯৫২ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।

খালেক নওয়াজ খান ছিলেন রাজনীতিক ও আইনজীবী। ছাত্রজীবনে ১৯৪৪ সালে তিনি বেকার হোস্টেল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি পূর্ব বাংলা আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি নির্বাচনে পূর্ব বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনকে পরাজিত করেন।

খালেক নওয়াজ খান ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ হরতালের অংশ হিসাবে পিকেটিং করতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। পিকেটিং করার জন্য সেদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৯ সালের এপ্রিলে আবার গ্রেফতার হন। খালেক নওয়াজ খান ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৫১ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে খালেক নওয়াজ খানের ডাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনিই ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। এ সভা থেকে আবদুল মতিনকে আহ্বায়ক করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদ’ গঠন করা হয়।

৩১ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে ঢাকা বার লাইব্রেরিতে যে সর্বদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, সেই বৈঠকে খালেক নওয়াজ খান উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য দেন। এ বৈঠকে কাজী গোলাম মাহবুবকে আহ্বায়ক করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। খালেক নওয়াজ খান ওই সংগ্রাম পরিষদেরও অন্যতম সদস্য ছিলেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী উত্তাল আন্দোলনে খালেক নওয়াজ খান অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের জন্য ১৯৫২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার নামে হুলিয়া জারি করে তৎকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে একটি আদেশ জারি করা হয়। পরে তিনি গ্রেফতারবরণ করেন। দীর্ঘ প্রায় এক বছর জেলে থাকার পর খালেক নওয়াজ খান ১৯৫৩ সালের জানুয়ারিতে মুক্তিলাভ করেন। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য ২০০৮ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়।

খালেক নওয়াজ খান ১৯৭১ সালের ২ অক্টোবর হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম