সহকারীর হাতে শুটিং ছেড়ে দিতেন না হুমায়ূন স্যার
হ্যালো...
হাসান সাইদুল
১৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ নিয়মিত নাটকে অভিনয় করছেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অনেক বছর ধরে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করেছেন এ অভিনেতা। আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে প্রয়াত এ লেখক ও নির্মাতা সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি।
* হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন। তার সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে হয়েছিল?
** হুমায়ূন স্যারের ছোট ভাই আহসান হাবিব আমার ক্লাসমেট। ১৯৭২ বা ৭৩ সালের দিকে তার সঙ্গে একদিন তার বাসায় যাই। সেখানেই তাকে দেখি। খুব বেশি কথা হয়নি, তবে পরিচয় হয়েছে। তারও অনেক পর ১৯৯১ সালে সম্ভবত বিটিভিতে আমার ডাক পড়ে। সেখানে ‘অচিন বৃক্ষ’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করি। এটি মূলত হুমায়ূন আহমেদের নাটক ছিল। তারপর থেকে স্যারের অনেক নাটকে অভিনয় করেছি।
* কাছ থেকে তাকে কেমন দেখেছেন?
** হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে অনেক কথা বলা যায়। বলে শেষ করা যাবে না। একজন সাদাসিধে মানুষ ছিলেন। পড়া আর শেখার মাঝেই ডুবে থাকতেন। জীবিত থাকা অবস্থায় আমি দেখেছি, তিনি দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন।
* হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আপনার বিশ্লেষণ কী?
** আমি আগেও বলেছি-হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। একজন বৃক্ষ মানব তিনি, জ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন। এ মানুষটি সব সময়ই শিখতেন। বৃক্ষ ভালোবাসতেন। সবুজের সঙ্গে প্রেম করতেন। তার ‘আজ রবিবার’ নাটকে আমার চরিত্রের নাম ছিল মতি। এ নাটকে অভিনয়ের পর থেকে তিনি আমাকে মতি বলেই সম্বোধন করতেন। তার অভিনয়ে মাত্রাজ্ঞান ছিল সীমাহীন। অসাধারণ সব নাটক উপহার দিয়ে গেছেন তিনি।
* মৃত্যুর বহু বছর পরও তার নির্মিত নাটকগুলো এখনো আধুনিক মনে হয়। এর ব্যাখ্যা কী?
** হুমায়ূন আহমেদ সব সময় নতুনের সঙ্গে থাকতেন। তরুণদের সঙ্গে মিশতেন। তরুণদের চাওয়াটাও বুঝতেন। সে জন্য সব সময় তিনি অনেকটা অ্যাডভান্স ছিলেন। তিনি প্রচলিত স্রোতে গা ভাসাননি। যা বিশ্বাস করতেন তাই বলতেন এবং নির্মাণ করতেন। তাই বলা চলে তার নির্মাণ এখনো আধুনিক।
* তিনি কী কখনো লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন বলতেন?
** না, এ সংলাপ খুব একটা শুনিনি। তিনি বলতেন ‘রেডি’ অথবা ‘চলেন যাই’। তার সহকারীরা বলতেন ‘ফাইভ, ফোর...অ্যাকশন’। তিনি পাশেই থাকতেন। স্যার কখনোই তার সহকারীদের কাছে শুটিং ছেড়ে দিতেন না। সব সময় বসে থাকতেন। এটি ছিল তার বড় গুণ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
হ্যালো...
সহকারীর হাতে শুটিং ছেড়ে দিতেন না হুমায়ূন স্যার
জনপ্রিয় অভিনেতা ফারুক আহমেদ নিয়মিত নাটকে অভিনয় করছেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অনেক বছর ধরে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করেছেন এ অভিনেতা। আজ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে প্রয়াত এ লেখক ও নির্মাতা সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি।
* হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে অনেক কাজ করেছেন। তার সঙ্গে আপনার পরিচয় কীভাবে হয়েছিল?
** হুমায়ূন স্যারের ছোট ভাই আহসান হাবিব আমার ক্লাসমেট। ১৯৭২ বা ৭৩ সালের দিকে তার সঙ্গে একদিন তার বাসায় যাই। সেখানেই তাকে দেখি। খুব বেশি কথা হয়নি, তবে পরিচয় হয়েছে। তারও অনেক পর ১৯৯১ সালে সম্ভবত বিটিভিতে আমার ডাক পড়ে। সেখানে ‘অচিন বৃক্ষ’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করি। এটি মূলত হুমায়ূন আহমেদের নাটক ছিল। তারপর থেকে স্যারের অনেক নাটকে অভিনয় করেছি।
* কাছ থেকে তাকে কেমন দেখেছেন?
** হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে অনেক কথা বলা যায়। বলে শেষ করা যাবে না। একজন সাদাসিধে মানুষ ছিলেন। পড়া আর শেখার মাঝেই ডুবে থাকতেন। জীবিত থাকা অবস্থায় আমি দেখেছি, তিনি দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন।
* হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে আপনার বিশ্লেষণ কী?
** আমি আগেও বলেছি-হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। একজন বৃক্ষ মানব তিনি, জ্ঞানের ভান্ডার ছিলেন। এ মানুষটি সব সময়ই শিখতেন। বৃক্ষ ভালোবাসতেন। সবুজের সঙ্গে প্রেম করতেন। তার ‘আজ রবিবার’ নাটকে আমার চরিত্রের নাম ছিল মতি। এ নাটকে অভিনয়ের পর থেকে তিনি আমাকে মতি বলেই সম্বোধন করতেন। তার অভিনয়ে মাত্রাজ্ঞান ছিল সীমাহীন। অসাধারণ সব নাটক উপহার দিয়ে গেছেন তিনি।
* মৃত্যুর বহু বছর পরও তার নির্মিত নাটকগুলো এখনো আধুনিক মনে হয়। এর ব্যাখ্যা কী?
** হুমায়ূন আহমেদ সব সময় নতুনের সঙ্গে থাকতেন। তরুণদের সঙ্গে মিশতেন। তরুণদের চাওয়াটাও বুঝতেন। সে জন্য সব সময় তিনি অনেকটা অ্যাডভান্স ছিলেন। তিনি প্রচলিত স্রোতে গা ভাসাননি। যা বিশ্বাস করতেন তাই বলতেন এবং নির্মাণ করতেন। তাই বলা চলে তার নির্মাণ এখনো আধুনিক।
* তিনি কী কখনো লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন বলতেন?
** না, এ সংলাপ খুব একটা শুনিনি। তিনি বলতেন ‘রেডি’ অথবা ‘চলেন যাই’। তার সহকারীরা বলতেন ‘ফাইভ, ফোর...অ্যাকশন’। তিনি পাশেই থাকতেন। স্যার কখনোই তার সহকারীদের কাছে শুটিং ছেড়ে দিতেন না। সব সময় বসে থাকতেন। এটি ছিল তার বড় গুণ।