কুলাউড়ায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কুলাউড়া উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে কেউ প্রথম গেলে চোখ ছানাবড়া হওয়ারই কথা। এটা সাধারণ হাসপাতাল না শিশু হাসপাতাল বোঝার উপায় নেই। মহিলা কিংবা পুরুষ ওয়ার্ড সবক’টি বেডে শিশু নিয়ে শুয়ে আছেন মায়েরা। পাশে বাবা কিংবা পরিবারের অন্য লোকজনকে পায়চারি করতে দেখা যায়। নিউমোনিয়া রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে ভর্তিকৃত শিশুদের কারণে প্রায় আড়াই মাস থেকে ধরে দুর্ঘটনা কিংবা মারামারি করে হাসপাতালে আসা রোগীদের বাধ্য মৌলভীবাজর সদর কিংবা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর সরেজমিন কুলাউড়া হাসপাতালে গেলে সবক’টি বেডে শিশু রোগী ভর্তি দেখা যায়। কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভর্তিকৃত প্রায় সব রোগীই শিশু এবং এরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে গত জুলাই মাসে কুলাউড়া হাসপাতালে শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১২০১ জন শিশু চিকিৎসা গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৫৭৩ জন ছেলে এবং ৬২৮ জন মেয়ে শিশু। আগস্ট মাসে চিকিৎসা নেয় ছেলে ৬২১ জন এবং মেয়ে ৫৩৫ জন। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৩ শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত নিউমোনিয়ায় কোনো শিশুমৃত্যুর রেকর্ড হাসপাতালে নেই।
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের গৌড়করণ গ্রামের জাহেদ আলীর স্ত্রী নিউমোনিয়া আক্রান্ত দুই শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন কুলাউড়া হাসপাতালে। হাসপাতালে সিট খালি নেই দেখে ওষুধ কিনে দুই শিশুর কেনোলা লাগিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আবহাওয়া অতিরিক্ত গরম হওয়ায় গরমে সৃষ্ট ঘাম থেকে ঠাণ্ডা লেগে শিশুর নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি এই জাতের রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, মূলত আবহাওয়াজনিত কারণে বেশি হচ্ছে। আর যেসব শিশু পুরো কোর্স টিকা সময়মতো গ্রহণ করে না, তারাই আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়া ছাড়াও ব্রংকিউলাইটিস ভাইরাসজনিত রোগও আছে। আমরা নিউমোনিয়া হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে অভিভাবকদের সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
কুলাউড়ায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ
কুলাউড়া উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে কেউ প্রথম গেলে চোখ ছানাবড়া হওয়ারই কথা। এটা সাধারণ হাসপাতাল না শিশু হাসপাতাল বোঝার উপায় নেই। মহিলা কিংবা পুরুষ ওয়ার্ড সবক’টি বেডে শিশু নিয়ে শুয়ে আছেন মায়েরা। পাশে বাবা কিংবা পরিবারের অন্য লোকজনকে পায়চারি করতে দেখা যায়। নিউমোনিয়া রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
এদিকে ভর্তিকৃত শিশুদের কারণে প্রায় আড়াই মাস থেকে ধরে দুর্ঘটনা কিংবা মারামারি করে হাসপাতালে আসা রোগীদের বাধ্য মৌলভীবাজর সদর কিংবা সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করতে হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর সরেজমিন কুলাউড়া হাসপাতালে গেলে সবক’টি বেডে শিশু রোগী ভর্তি দেখা যায়। কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভর্তিকৃত প্রায় সব রোগীই শিশু এবং এরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালের রেকর্ড অনুসারে গত জুলাই মাসে কুলাউড়া হাসপাতালে শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১২০১ জন শিশু চিকিৎসা গ্রহণ করে। এর মধ্যে ৫৭৩ জন ছেলে এবং ৬২৮ জন মেয়ে শিশু। আগস্ট মাসে চিকিৎসা নেয় ছেলে ৬২১ জন এবং মেয়ে ৫৩৫ জন। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩৩ শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত নিউমোনিয়ায় কোনো শিশুমৃত্যুর রেকর্ড হাসপাতালে নেই।
১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের গৌড়করণ গ্রামের জাহেদ আলীর স্ত্রী নিউমোনিয়া আক্রান্ত দুই শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন কুলাউড়া হাসপাতালে। হাসপাতালে সিট খালি নেই দেখে ওষুধ কিনে দুই শিশুর কেনোলা লাগিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আবহাওয়া অতিরিক্ত গরম হওয়ায় গরমে সৃষ্ট ঘাম থেকে ঠাণ্ডা লেগে শিশুর নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি এই জাতের রোগ বেশি দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা সচেতন হলে শিশুদের রক্ষা করা সম্ভব।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, মূলত আবহাওয়াজনিত কারণে বেশি হচ্ছে। আর যেসব শিশু পুরো কোর্স টিকা সময়মতো গ্রহণ করে না, তারাই আক্রান্ত হয়। নিউমোনিয়া ছাড়াও ব্রংকিউলাইটিস ভাইরাসজনিত রোগও আছে। আমরা নিউমোনিয়া হিসেবে চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এই রোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে হলে অভিভাবকদের সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি।