ফ্ল্যাট তুলছে প্রভাবশালী
পঞ্চগড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খাস জমি দখল
এস এ মাহমুদ সেলিম, পঞ্চগড়
২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পানিমাছপুকুরী আবাসন প্রকল্পের খাস জমি দখল করে গোপনে তোলা হচ্ছে ফ্ল্যাট। চারপাশে উঁচু বেড়া দিয়ে ভেতরে জোরেশোরে চলছে ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ।
ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এই ফ্ল্যাট তুলছেন।
এদিকে ওই ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। অপরদিকে প্রশাসন নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নোটিশ দিলেও মানছে না ওই ব্যক্তি। ওই আশ্রয়ণের একাধিক বাসিন্দা বলেছেন, রফিকুল কোটিপতি মানুষ। তারপরও তাকে সরকারিভাবে আশ্রয়ণে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আর তাই ঘর পাওয়ার পর এখন কৌশলে খাস জমি দখল করে ফ্ল্যাট তুলছে।
সরেজমিন ওই এলাকায় দেখা যায়, পানিমাছপুকুরী আশ্রয়ণের পূর্বপাড়ের প্রথম বাড়িই ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা গমির উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলামের। রফিকুল আশ্রয়ণের বরাদ্দ পাওয়া ঘরগুলো ঘেঁষেই তুলছেন ফ্ল্যাট বাড়ি। দৈর্ঘ্যে ৩৬ ফুট এবং প্রস্তে ৩২ ফুট। কাজও অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কেবল ছাদ ঢালাই বাকি। বাইরে থেকে কেউ যেন বুঝতে না পারে সেজন্য বাঁশের চাটাই দিয়ে উঁচু করে বেড়া দেয়া হয়েছে। ভেতরে চলছে মিস্ত্রিদের কর্মযজ্ঞ। চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে রফিকুলের পরিবারের লোকজন। বাইরের কেউ আসছে কি না নজর রাখাই তাদের কাজ। একটু উঁচুতে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় জায়গাটি আশ্রয়ণের খাস জমির মধ্যেই রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় রফিকুলের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা সরাসরি কেউ কথা বলতে রাজি হননি। জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই কাজে হাত লাগিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে পানিমাছপুকুরী আশ্রয়ণ প্রকল্প সমবায় সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হক বলেন, আশ্রয়ণের জমি মাপযোগ থেকে এখন পর্যন্ত আমরা জানি ওই জমিটুকু আশ্রয়ণের ভেতরের খাস জমি।
কিন্তু এখন রফিকুল হঠাৎ জমিটি তার কেনা দাবি করে ফ্ল্যাট তুলছে। প্রশাসনও বিষয়টি জানে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও ভেতরে ভেতরে কাজ চলছে সমানতালে।
এদিকে খাস জমি দখল প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কেনা জমিতেই আমি ফ্ল্যাট তুলছি। এটি খাস জমি নয়। আশ্রয়ণের খাস জমিসংলগ্ন আমি ১৫ শতক জমি কিনেছি। সেই জমিতেই ফ্ল্যাট তুলছি।
পঞ্চগড় সদর এসিল্যান্ড অফিস থেকে আমাকে নোটিশ করেছে। নোটিশ পেয়ে আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। এছাড়া জমিটির সব কাগজপত্র আমি এসিল্যান্ড অফিসে জমা দিয়েছি।
অপরদিকে হাফিজাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মুছা কলিমুল্ল্যাহ বলেন, তারা গোপনে কাজ শুরু করেছে। আমরা বিষয়টি জানতাম না। যখন অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে তখন আমরা জেনেছি।
প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জমি যেহেতু সরকারের তাই বিষয়টি প্রশাসনই দেখবে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বলেন, খাস জমির ওপর ওই ফ্ল্যাটটি নির্মিত হচ্ছে।
সেটি উচ্ছেদের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই সেটি উচ্ছেদ করা হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পঞ্চগড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের খাস জমি দখল
ফ্ল্যাট তুলছে প্রভাবশালী
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পানিমাছপুকুরী আবাসন প্রকল্পের খাস জমি দখল করে গোপনে তোলা হচ্ছে ফ্ল্যাট। চারপাশে উঁচু বেড়া দিয়ে ভেতরে জোরেশোরে চলছে ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ।
ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি এই ফ্ল্যাট তুলছেন।
এদিকে ওই ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না। অপরদিকে প্রশাসন নির্মাণ কাজ বন্ধ করার নোটিশ দিলেও মানছে না ওই ব্যক্তি। ওই আশ্রয়ণের একাধিক বাসিন্দা বলেছেন, রফিকুল কোটিপতি মানুষ। তারপরও তাকে সরকারিভাবে আশ্রয়ণে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আর তাই ঘর পাওয়ার পর এখন কৌশলে খাস জমি দখল করে ফ্ল্যাট তুলছে।
সরেজমিন ওই এলাকায় দেখা যায়, পানিমাছপুকুরী আশ্রয়ণের পূর্বপাড়ের প্রথম বাড়িই ওই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা গমির উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলামের। রফিকুল আশ্রয়ণের বরাদ্দ পাওয়া ঘরগুলো ঘেঁষেই তুলছেন ফ্ল্যাট বাড়ি। দৈর্ঘ্যে ৩৬ ফুট এবং প্রস্তে ৩২ ফুট। কাজও অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কেবল ছাদ ঢালাই বাকি। বাইরে থেকে কেউ যেন বুঝতে না পারে সেজন্য বাঁশের চাটাই দিয়ে উঁচু করে বেড়া দেয়া হয়েছে। ভেতরে চলছে মিস্ত্রিদের কর্মযজ্ঞ। চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে রফিকুলের পরিবারের লোকজন। বাইরের কেউ আসছে কি না নজর রাখাই তাদের কাজ। একটু উঁচুতে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় জায়গাটি আশ্রয়ণের খাস জমির মধ্যেই রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় রফিকুলের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা সরাসরি কেউ কথা বলতে রাজি হননি। জানা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করেই কাজে হাত লাগিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে পানিমাছপুকুরী আশ্রয়ণ প্রকল্প সমবায় সমিতির সভাপতি তোফাজ্জল হক বলেন, আশ্রয়ণের জমি মাপযোগ থেকে এখন পর্যন্ত আমরা জানি ওই জমিটুকু আশ্রয়ণের ভেতরের খাস জমি।
কিন্তু এখন রফিকুল হঠাৎ জমিটি তার কেনা দাবি করে ফ্ল্যাট তুলছে। প্রশাসনও বিষয়টি জানে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও ভেতরে ভেতরে কাজ চলছে সমানতালে।
এদিকে খাস জমি দখল প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার কেনা জমিতেই আমি ফ্ল্যাট তুলছি। এটি খাস জমি নয়। আশ্রয়ণের খাস জমিসংলগ্ন আমি ১৫ শতক জমি কিনেছি। সেই জমিতেই ফ্ল্যাট তুলছি।
পঞ্চগড় সদর এসিল্যান্ড অফিস থেকে আমাকে নোটিশ করেছে। নোটিশ পেয়ে আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। এছাড়া জমিটির সব কাগজপত্র আমি এসিল্যান্ড অফিসে জমা দিয়েছি।
অপরদিকে হাফিজাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মুছা কলিমুল্ল্যাহ বলেন, তারা গোপনে কাজ শুরু করেছে। আমরা বিষয়টি জানতাম না। যখন অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে তখন আমরা জেনেছি।
প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জমি যেহেতু সরকারের তাই বিষয়টি প্রশাসনই দেখবে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ হোসেন বলেন, খাস জমির ওপর ওই ফ্ল্যাটটি নির্মিত হচ্ছে।
সেটি উচ্ছেদের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলেই সেটি উচ্ছেদ করা হবে।