রায়পুরে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ
হবিগঞ্জে নবজাতকের মৃত্যু
হবিগঞ্জ ও রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
০৮ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
হবিগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে পুরোদমে শীত শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। আর আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু।
ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু আসতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত কারণে শুক্রবার এক নবজাতক মারা গেছে। মৃত রিফাত মিয়া বাহুবল উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আমির আলীর ২৫ দিনের শিশুপুত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে জেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়লেও অক্সিজেন, খাবার স্যালাইনসহ ওষুধ সংকট রয়েছে। শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে প্রচণ্ড ভিড়।
মেঝেতে অনেক বিছানা। শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরা রয়েছেন। ওয়ার্ডের একটি কোণে যন্ত্রের সাহায্যে নবজাতকদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিরাময়ে উত্তাপ দেয়া হয়। ২-৩ জন শিক্ষানবিশ নার্স একটি শিশুকে এ যন্ত্রের সাহায্যে সেবা দিয়ে থাকেন।
অথচ অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় ১০-১২টি শিশুকে। কয়েকজন অভিভাবক বলেন, শহরে শিশুদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা তেমন একটা নেই। সদর আধুনিক হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। তাই বাধ্য হয়েই শিশুদের মেঝেতে রাখতে হচ্ছে।
তাছাড়া নার্সরা পালা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়া অক্সিজেন না থাকায় শিশুরা ভোগান্তিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম আরা জানান, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে গড়ে রোগী থাকেন ৪শ’ থেকে ৫শ’। তাই শয্যার সংকুলান বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
রোগীর চাপে ডাক্তার, নার্সদেরও হিমশিম খেতে হয়। তবে সব ব্যাপারেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ঠাণ্ডায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বেড়ে চলছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। ৭ দিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রায় দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। রায়পুরের ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ঠাণ্ডার কারণে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ভিড় করছেন।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে ৬০-৭০ শিশু চিকিৎসা নেয়ার জন্য এসেছে। এর মধ্যে ১৫-২০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এদিকে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক রোগী। এর মধ্যে শতাধিক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোগীর অনুপাতে হাসপাতালে বেড না থাকায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালের মেঝেতে অবস্থান নিয়েছেন রোগীরা।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তির পর হাসপাতাল থেকে তাদের খাবার স্যালাইন ও সামান্য কিছু ওষুধ দেয়া ছাড়া বাকি ওষুধ বাইর থেকে কিনতে হয়।
এছাড়া তেমন চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার বাহারুল আলম জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ থাকলেও জনবল সংকটের কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
রায়পুরে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ
হবিগঞ্জে নবজাতকের মৃত্যু
হবিগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে পুরোদমে শীত শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। আর আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু।
ইতোমধ্যে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু আসতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে ঠাণ্ডাজনিত কারণে শুক্রবার এক নবজাতক মারা গেছে। মৃত রিফাত মিয়া বাহুবল উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আমির আলীর ২৫ দিনের শিশুপুত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে জেলায় শীত অনুভূত হচ্ছে। ফলে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়লেও অক্সিজেন, খাবার স্যালাইনসহ ওষুধ সংকট রয়েছে। শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে প্রচণ্ড ভিড়।
মেঝেতে অনেক বিছানা। শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরা রয়েছেন। ওয়ার্ডের একটি কোণে যন্ত্রের সাহায্যে নবজাতকদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিরাময়ে উত্তাপ দেয়া হয়। ২-৩ জন শিক্ষানবিশ নার্স একটি শিশুকে এ যন্ত্রের সাহায্যে সেবা দিয়ে থাকেন।
অথচ অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায় ১০-১২টি শিশুকে। কয়েকজন অভিভাবক বলেন, শহরে শিশুদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা তেমন একটা নেই। সদর আধুনিক হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। তাই বাধ্য হয়েই শিশুদের মেঝেতে রাখতে হচ্ছে।
তাছাড়া নার্সরা পালা করে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এছাড়া অক্সিজেন না থাকায় শিশুরা ভোগান্তিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম আরা জানান, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এখানে গড়ে রোগী থাকেন ৪শ’ থেকে ৫শ’। তাই শয্যার সংকুলান বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
রোগীর চাপে ডাক্তার, নার্সদেরও হিমশিম খেতে হয়। তবে সব ব্যাপারেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ঠাণ্ডায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বেড়ে চলছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা। ৭ দিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রায় দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। রায়পুরের ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ঠাণ্ডার কারণে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীরা চিকিৎসার জন্য ভিড় করছেন।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে ৬০-৭০ শিশু চিকিৎসা নেয়ার জন্য এসেছে। এর মধ্যে ১৫-২০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এদিকে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক রোগী। এর মধ্যে শতাধিক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রোগীর অনুপাতে হাসপাতালে বেড না থাকায় চিকিৎসা নিতে হাসপাতালের মেঝেতে অবস্থান নিয়েছেন রোগীরা।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তির পর হাসপাতাল থেকে তাদের খাবার স্যালাইন ও সামান্য কিছু ওষুধ দেয়া ছাড়া বাকি ওষুধ বাইর থেকে কিনতে হয়।
এছাড়া তেমন চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার বাহারুল আলম জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ থাকলেও জনবল সংকটের কারণে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।