দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রতিদিন উত্তোলন ২ কোটি ঘনফুট
মুরাদনগরে শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্র
আবুল খায়ের, কুমিল্লা
২৭ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কুমিল্লার মুরাদনগরে শ্রীকাইল-২ (মকলিশপুর) গ্যাস ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস। যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এখানকার গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহারের উপযোগী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে। অপরদিকে নিজেদের এলাকার গ্যাস আবাসিক এবং বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামেই নেই গ্যাস সংযোগ।
শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্রের ইনচার্জ প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মকলিশপুর এলাকায় ২০১৩ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রীকাইল-১ গ্যাস ক্ষেত্র উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রথম গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এ কূপের উপরের স্তর থেকে প্রতিদিন ৬০-৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হয়েছিল। এখন ওই স্তরটি বন্ধ করে নতুন স্তর থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। যার পরিমাণ দৈনিক ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) ঘনফুট)। আমাদের বিপুল পরিমাণ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে হয়। এই নতুন কূপের গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহার করা গেলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে।
প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, টানা ৫৫ দিন অনুসন্ধানের পর শ্রীকাইল গ্যাস ফিল্ডের ৪নং কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই স্তরে অন্তত ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি ঘনফুট গ্যাস থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে শ্রীকাইল অনুসন্ধান গ্যাস কূপ খনন প্রকল্প (সোনাকান্দা, মোহাম্মদপুর, ঘোড়াশাল) স্থানে ১নং কূপ খনন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে এই কূপ থেকে আর গ্যাস তোলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ১নং কূপের গ্যাস ক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের মকলিশপুরে ২০১৩ সালে শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্রের ৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়। ২০২০ সালের শুরুর দিকে পার্শ্ববর্তী নবীনগর উপজেলার (হাজীপুর, লাউর ফতেহপুর) শ্রীকাইল ইস্ট রূপকল্প-১ নতুন একটি গ্যাস ক্ষেত্রের উত্তোলন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি। প্রায় ৫ কিলোমিটার লাইন সংযোজন করলেই জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে শ্রীকাইল পূর্ব গ্যাস ক্ষেত্রটি সংযুক্ত হবে। এছাড়া শ্রীকাইল সরকারি কলেজের পূর্বে বিগত ৩ বছর আগে বাপেক্সের অনুসন্ধানে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কূপের চারপাশে বালু দিয়ে ভরাট করা ও সংযোগ সড়কের কাজ চলছে।
‘আমাদের গ্যাস আমাদের অধিকার’ সংগঠনের নেতা এমকেআই জাবেদ বলেন, আমাদের এলাকার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে এটা গর্বের বিষয়, কিন্তু এ গ্যাস আমাদের এলাকায় আবাসিক এবং বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে, এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হলে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। বেকার সমস্যার সমাধান হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
মুরাদনগরে শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্র
দেশীয় প্রযুক্তিতে প্রতিদিন উত্তোলন ২ কোটি ঘনফুট
কুমিল্লার মুরাদনগরে শ্রীকাইল-২ (মকলিশপুর) গ্যাস ক্ষেত্রে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন উত্তোলন করা হচ্ছে দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস। যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। মঙ্গলবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এখানকার গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহারের উপযোগী হতে পারে বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে। অপরদিকে নিজেদের এলাকার গ্যাস আবাসিক এবং বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামেই নেই গ্যাস সংযোগ।
শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্রের ইনচার্জ প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মকলিশপুর এলাকায় ২০১৩ সালের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রীকাইল-১ গ্যাস ক্ষেত্র উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রথম গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এ কূপের উপরের স্তর থেকে প্রতিদিন ৬০-৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হয়েছিল। এখন ওই স্তরটি বন্ধ করে নতুন স্তর থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়েছে। যার পরিমাণ দৈনিক ২০ মিলিয়ন (২ কোটি) ঘনফুট)। আমাদের বিপুল পরিমাণ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করতে হয়। এই নতুন কূপের গ্যাস এলএনজি খাতে ব্যবহার করা গেলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হবে।
প্রকৌশলী মো. শাহজাহান জানান, টানা ৫৫ দিন অনুসন্ধানের পর শ্রীকাইল গ্যাস ফিল্ডের ৪নং কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই স্তরে অন্তত ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি ঘনফুট গ্যাস থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে শ্রীকাইল অনুসন্ধান গ্যাস কূপ খনন প্রকল্প (সোনাকান্দা, মোহাম্মদপুর, ঘোড়াশাল) স্থানে ১নং কূপ খনন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে এই কূপ থেকে আর গ্যাস তোলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ১নং কূপের গ্যাস ক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের মকলিশপুরে ২০১৩ সালে শ্রীকাইল-২ গ্যাস ক্ষেত্রের ৩টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয়। ২০২০ সালের শুরুর দিকে পার্শ্ববর্তী নবীনগর উপজেলার (হাজীপুর, লাউর ফতেহপুর) শ্রীকাইল ইস্ট রূপকল্প-১ নতুন একটি গ্যাস ক্ষেত্রের উত্তোলন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সংযোগ লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি। প্রায় ৫ কিলোমিটার লাইন সংযোজন করলেই জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে শ্রীকাইল পূর্ব গ্যাস ক্ষেত্রটি সংযুক্ত হবে। এছাড়া শ্রীকাইল সরকারি কলেজের পূর্বে বিগত ৩ বছর আগে বাপেক্সের অনুসন্ধানে একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই কূপের চারপাশে বালু দিয়ে ভরাট করা ও সংযোগ সড়কের কাজ চলছে।
‘আমাদের গ্যাস আমাদের অধিকার’ সংগঠনের নেতা এমকেআই জাবেদ বলেন, আমাদের এলাকার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে এটা গর্বের বিষয়, কিন্তু এ গ্যাস আমাদের এলাকায় আবাসিক এবং বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে, এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করা হলে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। বেকার সমস্যার সমাধান হবে।