নাগরপুরে সিলমারা ৩০০ ব্যালট ও দুটি মুড়ি বই উদ্ধার
পুনর্নির্বাচনের দাবি
যুগান্তর প্রতিবেদন, টাঙ্গাইল
০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জেলার নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভোটের একদিন পর কেন্দ্রের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয় ২টি ব্যালট পেপারের মুড়ি বই। আর নির্বাচনের চার দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে তিন শতাধিক সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর (ঘোড়া প্রতীক) এবং পাঁচজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী ওই তিনটি কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন। ওই তিন কেন্দ্র হচ্ছে ১নং ওয়ার্ডের কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩নং ওয়ার্ডের ষড়িষাজানি মাদ্রাসা এবং ৪নং ওয়ার্ডের সিংজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।
জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর নাগরপুর উপজেলার ৩নং গয়হাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সামছুল হক (নৌকা প্রতীক), বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান আসকর (ঘোড়া প্রতীক), স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির (আনারস) ও ইসলামিক আন্দোলনের মিজানুর রহমান (হাতপাখা)। তবে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর কিছুক্ষণ পরই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তার সহযোগীরা পরপর দুবারের নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকরের এজেন্টদের ওই তিন কেন্দ্র থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেন। পরে এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানালে বের করে দেওয়া এজেন্টদের পুনরায় কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাঁচ মিনিট দায়িত্ব পালন করার পর পুনরায় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে জোরপূর্বক সিল মেরে ব্যালট পেপারগুলো বাক্সে ফেলা হয়।
একই কায়দায় নৌকা প্রতীকের সমর্থক সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীরা ব্যালট পেপার বাইরে নিয়ে গিয়ে সিল মারার ব্যবস্থা করেন। এ নিয়ে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে কেন্দ্রের ভেতর তালাবদ্ধ করে রাখে প্রতিপক্ষ সাধারণ সদস্য প্রার্থীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ভোট শেষ হওয়ার পরদিন বিকালে ওই তিন কেন্দ্রের বাইরে পরে থাকা ব্যালট পেপারের মুড়ি বই এবং চার দিন পর সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়। পরাজিত প্রার্থীরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন পরাজিত প্রার্থীরা। ওই তিন কেন্দ্রে পুনরায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর ও পাঁচজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান জানান, ভোট গণনা শেষে ব্যালট পেপার এবং মুড়ি বইগুলো বস্তায় ভরে সিলগালা করে উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে রাখা হয়। সেই বস্তা পরে তার বা অন্য কারও খোলার এখতিয়ার নেই। তবে মুড়ি বই বা ব্যালট পেপার বাইরে থাকলে সেটির দায়ভার দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তার। এছাড়া কোনো প্রার্থী যদি পুনরায় নির্বাচন বা ভোট গণনা করার আবেদন করেন তাহলে তাকে প্রঙ্গাপন জারির ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে মামলা করতে হবে। এরপর আদালত যা সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
নাগরপুরে সিলমারা ৩০০ ব্যালট ও দুটি মুড়ি বই উদ্ধার
পুনর্নির্বাচনের দাবি
জেলার নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের তিনটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ভোটের একদিন পর কেন্দ্রের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয় ২টি ব্যালট পেপারের মুড়ি বই। আর নির্বাচনের চার দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে তিন শতাধিক সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর (ঘোড়া প্রতীক) এবং পাঁচজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী ওই তিনটি কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন। ওই তিন কেন্দ্র হচ্ছে ১নং ওয়ার্ডের কলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩নং ওয়ার্ডের ষড়িষাজানি মাদ্রাসা এবং ৪নং ওয়ার্ডের সিংজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র।
জানা গেছে, গত ২৮ নভেম্বর নাগরপুর উপজেলার ৩নং গয়হাটা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সামছুল হক (নৌকা প্রতীক), বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান আসকর (ঘোড়া প্রতীক), স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির (আনারস) ও ইসলামিক আন্দোলনের মিজানুর রহমান (হাতপাখা)। তবে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর কিছুক্ষণ পরই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তার সহযোগীরা পরপর দুবারের নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকরের এজেন্টদের ওই তিন কেন্দ্র থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দেন। পরে এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানালে বের করে দেওয়া এজেন্টদের পুনরায় কেন্দ্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাঁচ মিনিট দায়িত্ব পালন করার পর পুনরায় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে নৌকা প্রতীকে জোরপূর্বক সিল মেরে ব্যালট পেপারগুলো বাক্সে ফেলা হয়।
একই কায়দায় নৌকা প্রতীকের সমর্থক সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীরা ব্যালট পেপার বাইরে নিয়ে গিয়ে সিল মারার ব্যবস্থা করেন। এ নিয়ে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে কেন্দ্রের ভেতর তালাবদ্ধ করে রাখে প্রতিপক্ষ সাধারণ সদস্য প্রার্থীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ভোট শেষ হওয়ার পরদিন বিকালে ওই তিন কেন্দ্রের বাইরে পরে থাকা ব্যালট পেপারের মুড়ি বই এবং চার দিন পর সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়। পরাজিত প্রার্থীরা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন পরাজিত প্রার্থীরা। ওই তিন কেন্দ্রে পুনরায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর ও পাঁচজন সাধারণ সদস্য প্রার্থী।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এএইচএম কামরুল হাসান জানান, ভোট গণনা শেষে ব্যালট পেপার এবং মুড়ি বইগুলো বস্তায় ভরে সিলগালা করে উপজেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে রাখা হয়। সেই বস্তা পরে তার বা অন্য কারও খোলার এখতিয়ার নেই। তবে মুড়ি বই বা ব্যালট পেপার বাইরে থাকলে সেটির দায়ভার দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তার। এছাড়া কোনো প্রার্থী যদি পুনরায় নির্বাচন বা ভোট গণনা করার আবেদন করেন তাহলে তাকে প্রঙ্গাপন জারির ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে মামলা করতে হবে। এরপর আদালত যা সিদ্ধান্ত দেবেন তাই হবে।