রানিং স্টাফদের ট্রেন না চালানোর হুঁশিয়ারি
‘মাইলেজ’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি
৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ধর্মঘট শুরু * আশা করছি সমাধান হবে -রেলপথ সচিব
যুগান্তর প্রতিবেদন
২১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
‘মাইলেজ’ সুবিধার দাবিতে আন্দোলনরত রেলওয়ের রানিং স্টাফরা এবার ট্রেন না চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মাইলেজ প্রথা বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে তারা ৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ট্রেন চালাবেন না। তারা জানান-রেলপথমন্ত্রী, সচিব, রেলওয়ে মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করা হয়নি। এজন্য বাধ্য হয়ে তারা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন। তবে রেলপথ সচিব বলেছেন, এ ব্যাপারে আমরা আন্তরিক। অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা বেতন ছাড়াও মূলত মাইলেজ সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু এক বছর ধরে তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ সুবিধা আদায়ে ক্ষুব্ধ চালক ও গার্ডসহ রানিং স্টাফরা বছরব্যাপী আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। তাদের দাবি- মাইলেজ সুবিধা বাতিলের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করতে হবে। এক বছরে তারা পাঁচবার আলটিমেটাম দিলেও সংশ্লিষ্টরা তাতে কর্ণপাত করেননি। সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে এবং রেলপথ মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা বারবার কাজে ফিরে গেছেন। রেলওয়েতে প্রায় তিন হাজার রানিং স্টাফ রয়েছেন।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে মহাপরিচালক বরাবর বৃহস্পতিবার রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে- ন্যায্য দাবি পূরণে টালবাহানা করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হলে ৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে সব ধরনের ট্রেন পরিচালনা থেকে তারা বিরত থাকবেন। বৃহস্পতিবার সংগঠনের ঢাকা শাখার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জানান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। রানিং স্টাফরা কর্মবিরতি শুরু করবেন।
বৃহম্পতিবার সন্ধ্যায় রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর যুগান্তরকে জানান, রানিং স্টাফদের দাবি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের দাবি-যুক্তি এবং রেলওয়ের বক্তব্যসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি অতি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, রানিং স্টাফরা আমাদেরই লোক। তাদের সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, রেলে ১৬৪ বছর আগ থেকে মাইলেজ প্রথা চলে আসছে। মাইলেজের হিসাব হলো-প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের একটি বেসিকের সমপরিমাণ টাকা বেশি পাবেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের বেতন বিল হিসাব বিভাগ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখনও তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এ অবস্থায় ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা নিয়ে তাদের ট্রেন চালাতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনারও আশঙ্কাও রয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মাইলেজ সমাধানসহ প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে ট্রেন পরিচালনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বেসামরিক কর্মীদের মূল বেতনের অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার বিধান নেই বলে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রেলের রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা বাতিল করা হয়। এতে রানিং স্টাফরা ক্ষুব্ধ হন। তাদের বেতন নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। দাবি আদায়ে এর আগে রানিং স্টাফরা বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন, রেলওয়ে কারখানা, জিএম দপ্তরসহ রেল ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
‘মাইলেজ’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি
রানিং স্টাফদের ট্রেন না চালানোর হুঁশিয়ারি
৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ধর্মঘট শুরু * আশা করছি সমাধান হবে -রেলপথ সচিব
‘মাইলেজ’ সুবিধার দাবিতে আন্দোলনরত রেলওয়ের রানিং স্টাফরা এবার ট্রেন না চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মাইলেজ প্রথা বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে তারা ৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ট্রেন চালাবেন না। তারা জানান-রেলপথমন্ত্রী, সচিব, রেলওয়ে মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করা হয়নি। এজন্য বাধ্য হয়ে তারা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন। তবে রেলপথ সচিব বলেছেন, এ ব্যাপারে আমরা আন্তরিক। অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা বেতন ছাড়াও মূলত মাইলেজ সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু এক বছর ধরে তারা এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ সুবিধা আদায়ে ক্ষুব্ধ চালক ও গার্ডসহ রানিং স্টাফরা বছরব্যাপী আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। তাদের দাবি- মাইলেজ সুবিধা বাতিলের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করতে হবে। এক বছরে তারা পাঁচবার আলটিমেটাম দিলেও সংশ্লিষ্টরা তাতে কর্ণপাত করেননি। সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে এবং রেলপথ মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা বারবার কাজে ফিরে গেছেন। রেলওয়েতে প্রায় তিন হাজার রানিং স্টাফ রয়েছেন।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে মহাপরিচালক বরাবর বৃহস্পতিবার রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে- ন্যায্য দাবি পূরণে টালবাহানা করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হলে ৩১ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে সব ধরনের ট্রেন পরিচালনা থেকে তারা বিরত থাকবেন। বৃহস্পতিবার সংগঠনের ঢাকা শাখার সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম তালুকদার জানান, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। রানিং স্টাফরা কর্মবিরতি শুরু করবেন।
বৃহম্পতিবার সন্ধ্যায় রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর যুগান্তরকে জানান, রানিং স্টাফদের দাবি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের দাবি-যুক্তি এবং রেলওয়ের বক্তব্যসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি অতি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। তিনি আরও বলেন, রানিং স্টাফরা আমাদেরই লোক। তাদের সুযোগ-সুবিধা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, রেলে ১৬৪ বছর আগ থেকে মাইলেজ প্রথা চলে আসছে। মাইলেজের হিসাব হলো-প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের একটি বেসিকের সমপরিমাণ টাকা বেশি পাবেন। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের বেতন বিল হিসাব বিভাগ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখনও তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এ অবস্থায় ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা নিয়ে তাদের ট্রেন চালাতে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনারও আশঙ্কাও রয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মাইলেজ সমাধানসহ প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে ট্রেন পরিচালনা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। বেসামরিক কর্মীদের মূল বেতনের অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার বিধান নেই বলে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রেলের রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা বাতিল করা হয়। এতে রানিং স্টাফরা ক্ষুব্ধ হন। তাদের বেতন নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়েছে। দাবি আদায়ে এর আগে রানিং স্টাফরা বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশন, রেলওয়ে কারখানা, জিএম দপ্তরসহ রেল ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।