আন্তর্জাতিক নৌ দিবস উপলক্ষ্যে সেমিনার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ আইনের শাসনে বিশ্বাসী। তারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে সম্মান করে। সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। তাই এখন আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক নৌ দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। নৌ-বাণিজ্য খাতের পেশাজীবী ও অংশীজনদের নিয়ে নৌপরিবহণ অধিদপ্তর সেমিনারের আয়োজন করে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের এ বক্তব্য কনটেম্পট অব কোর্টের শামিল। এ বিষয়টি আদালত দেখবেন।’

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আরও কিছুদিন বাংলাদেশে থেকে তারপর এ বক্তব্য দেওয়া উচিত ছিল। তিনি আরও কিছুদিন থাকলে বুঝতে পারতেন মানবাধিকার পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। কারণ আমি বিশ্বাস করি জনগণের মানবাধিকার রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উন্নয়ন করেছেন।’

এর আগে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পণ্য পরিবহণের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতি হলো শিপিং। কেননা শিপিং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর করে। দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ নৌপথে পরিবহণ করা হয়।’

‘নিউ টেকনোলজিস ফর গ্রিনার শিপিং’- প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত সেমিনারে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, এবারের প্রতিপাদ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি টেকসই পরিবেশবান্ধব নৌ-বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিপাদ্যটিতে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে এসডিজি ১৩ ও ১৪ তথা জলবায়ু, মহাসাগর, সমুদ্র এবং সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহার, এসডিজি ৯ তথা শিল্প, উদ্ভাবন এবং অবকাঠামো উন্নয়ন এবং এসডিজি ১৭ তথা অংশীদারত্ব এবং বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ প্রতিটি সেক্টরে অসামান্য উন্নয়ন হয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে রপ্তানি ও আমদানিও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের প্রবৃদ্ধি জাতীয় প্রবৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণ। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায়, বহু বিলিয়ন ডলার মূল্যের একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নতুন জেটি এবং টার্মিনাল নির্মাণ, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ইত্যাদি। বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণের সম্ভাবনার কারণে বাংলাদেশকে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের রাষ্ট্রপরিচালনার পলিসিতে নাবিকদের এবং মেরিটাইম সম্পর্কিত অন্যান্য ক্ষেত্রের কর্মীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অগ্রাধিকার পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির বাংলদেশি গ্র্যাজুয়েটরা মেরিটাইম শিল্পের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে মেরিটাইম শিক্ষায় অবদান রাখছেন।

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, বুয়েটের অধ্যাপক মীর তারেক আলী, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর মো. নিজামুল হক, ব্যুরো ভেরিটাসের (বাংলাদেশ) কান্ট্রি ম্যানেজার মো. হারুনুর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তামিম। সেমিনারে বিষয়ভিত্তিক কারিগরি প্রবন্ধ উপস্থাপনার পাশাপাশি মেরিটাইমের পাঁচটি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য মেরিটাইম অংশীজনদের মধ্য থেকে এ বছরের সেরা পাঁচ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন