শতাধিক মসজিদের মাইকে মধ্যরাতে ‘ডাকাতি’ প্রচার
বরিশালসহ বাবুগঞ্জ ও উজিরপুরে আতঙ্ক
বরিশাল ব্যুরো
০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মধ্যরাতে বরিশাল নগরীসহ বাবুগঞ্জ ও উজিরপুর উপজেলার শতাধিক মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত’ প্রবেশের খবরে উৎকণ্ঠার মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে বুধবার ভোর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মসজিদের মাইকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে নগরী ছাড়াও বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা, দেহেরগতি, সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর, ষোলনা, লাকুটিয়া ও উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে অবস্থান নেন। ঘটনার পরপরই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারসহ মাইকিং করে গুজবের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ। এর আগে বাবুগঞ্জে ‘মিজান সুরভী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘মাধবপাশায় ডাকাত আনাগোনা দিচ্ছে’ শিরোনামে লাইভ ভিডিও করা হয়। পরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে লাইভ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর তা আইডি থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ফেসবুকে লাইভকারী মিজানের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শামসুল আলম জানিয়েছেন, রাত ২টার দিকে এলাকায় ডাকাত প্রবেশ করেছে বলে মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়। ‘অগণিত ডাকাত এলাকায় প্রবেশ করেছে, সকলে সতর্ক থাকুন’ এমন ঘোষণায় মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর আশপাশের মসজিদের মাইক থেকেও একই ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই স্থানীয়রা মিলে সারা রাত পাহারা দিয়েছি। বাবুগঞ্জের বাসিন্দা আবদুর রহমান জানান, গভীর রাতে ডাকাত ঢুকেছে-এমন খবর প্রচার হয়। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটাতে হয়। পরে জানতে পারলাম বিষয়টি গুজব ছিল। বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল জানান, এ ধরনের খবর তাদের কাছে নেই। বিষয়টি পুরোপুরি গুজব। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি আজিমুল করিম বলেন, নগরীতে ডাকাতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। আমরা শুনেছি, কেউ কেউ মসজিদে মাইকিং করেছে। এরপরই পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, সম্ভবত গুজব ছড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ বলেন, মাইকিং হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইকিংয়ের বিষয়টি পরিকল্পিত হতে পারে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ডাকাত প্রবেশের ঘোষণার কোনো ভিত্তি নেই। আতঙ্ক ছড়াতে একটি চক্র এ গুজব রটিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বরিশালসহ বাবুগঞ্জ ও উজিরপুরে আতঙ্ক
শতাধিক মসজিদের মাইকে মধ্যরাতে ‘ডাকাতি’ প্রচার
মধ্যরাতে বরিশাল নগরীসহ বাবুগঞ্জ ও উজিরপুর উপজেলার শতাধিক মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত’ প্রবেশের খবরে উৎকণ্ঠার মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে বুধবার ভোর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মসজিদের মাইকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে নগরী ছাড়াও বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা, দেহেরগতি, সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর, ষোলনা, লাকুটিয়া ও উজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে অবস্থান নেন। ঘটনার পরপরই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারসহ মাইকিং করে গুজবের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ। এর আগে বাবুগঞ্জে ‘মিজান সুরভী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ‘মাধবপাশায় ডাকাত আনাগোনা দিচ্ছে’ শিরোনামে লাইভ ভিডিও করা হয়। পরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে লাইভ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর তা আইডি থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ফেসবুকে লাইভকারী মিজানের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শামসুল আলম জানিয়েছেন, রাত ২টার দিকে এলাকায় ডাকাত প্রবেশ করেছে বলে মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়। ‘অগণিত ডাকাত এলাকায় প্রবেশ করেছে, সকলে সতর্ক থাকুন’ এমন ঘোষণায় মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর আশপাশের মসজিদের মাইক থেকেও একই ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপরই স্থানীয়রা মিলে সারা রাত পাহারা দিয়েছি। বাবুগঞ্জের বাসিন্দা আবদুর রহমান জানান, গভীর রাতে ডাকাত ঢুকেছে-এমন খবর প্রচার হয়। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে রাত কাটাতে হয়। পরে জানতে পারলাম বিষয়টি গুজব ছিল। বরিশাল নগরীর কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল জানান, এ ধরনের খবর তাদের কাছে নেই। বিষয়টি পুরোপুরি গুজব। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি আজিমুল করিম বলেন, নগরীতে ডাকাতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। আমরা শুনেছি, কেউ কেউ মসজিদে মাইকিং করেছে। এরপরই পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, সম্ভবত গুজব ছড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ বলেন, মাইকিং হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইকিংয়ের বিষয়টি পরিকল্পিত হতে পারে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ডাকাত প্রবেশের ঘোষণার কোনো ভিত্তি নেই। আতঙ্ক ছড়াতে একটি চক্র এ গুজব রটিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যারা এই গুজব ছড়িয়েছে তাদের চিহ্নিত করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।