তিন দিন আগেই খুনের হুমকি দেওয়া হয়
তিতাসে যুবলীগ নেতা জহির হত্যা
আবুল খায়ের কুমিল্লা
০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
তিতাসে যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে খুনের প্রস্তুতি নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে পুলিশের সামনে থেকে সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলামের বাহিনীর সদস্যরা জহিরকে তুলে নিয়ে যায় এবং কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। জহির হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
যুবলীগ নেতা জহিরের বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার আমার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আহমেদ ও সাবেক ইউপি মেম্বার সাইফুল আমার ছেলেকে হত্যা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, মঙ্গলবার বাবুল চেয়ারম্যানের নির্দেশেই সাইফুলের নেতৃত্বে জিয়ারকান্দি এলাকার সন্ত্রাসী শাকিল, সুজন, স্বপন, রাসেল, মোখলেছ, ফারুক, মনির, নুরনবীসহ ২০-৩০ জন সন্ত্রাসী আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বাবুল চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ করে তিনি বলেন, পুলিশ ইচ্ছা করলে আমার ছেলেকে রক্ষা করতে পারত। কিন্তু তা না করে তারা নীরব ভূমিকা পালন করে। হত্যাকারীদের বিচার চাই, নেপথ্যে থাকা কুশীলবদেরও বিচার চাই।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল শিকদার ও বাবুল আহমেদ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাবুল চেয়ারম্যান বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর শুনে এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তবে পরিস্থিতি বেসামাল দেখে আমি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাই। তিনি বলেন, সাইফুল মেম্বার ও আবুল হোসেন মোল্লার পরিবারের মাঝে বিরোধ দীর্ঘদিনের।
এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি গ্রুপের মাঝে দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তিনি আরও বলেন, যুবলীগ নেতা জহির হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারাই থাকুক, তাদের খুঁজে বের করা হবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ইউনিয়নে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হিসাবে পরিচিত। বিএনপির সময় তিনি সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করতেন। ক্ষমতার পালাবদলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল শিকদারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তিনি আধিপত্য ধরে রাখেন। এরপর নৌকার মনোনয়নে বাবুল আহমেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তার ছত্রছায়ায় সাইফুল ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
তিতাসে যুবলীগ নেতা জহির হত্যা
তিন দিন আগেই খুনের হুমকি দেওয়া হয়
তিতাসে যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে খুনের প্রস্তুতি নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে পুলিশের সামনে থেকে সন্ত্রাসী সাইফুল ইসলামের বাহিনীর সদস্যরা জহিরকে তুলে নিয়ে যায় এবং কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। জহির হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
যুবলীগ নেতা জহিরের বাবা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার আমার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আহমেদ ও সাবেক ইউপি মেম্বার সাইফুল আমার ছেলেকে হত্যা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
আবুল হোসেন মোল্লা বলেন, মঙ্গলবার বাবুল চেয়ারম্যানের নির্দেশেই সাইফুলের নেতৃত্বে জিয়ারকান্দি এলাকার সন্ত্রাসী শাকিল, সুজন, স্বপন, রাসেল, মোখলেছ, ফারুক, মনির, নুরনবীসহ ২০-৩০ জন সন্ত্রাসী আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বাবুল চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ করে তিনি বলেন, পুলিশ ইচ্ছা করলে আমার ছেলেকে রক্ষা করতে পারত। কিন্তু তা না করে তারা নীরব ভূমিকা পালন করে। হত্যাকারীদের বিচার চাই, নেপথ্যে থাকা কুশীলবদেরও বিচার চাই।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে সোহেল শিকদার ও বাবুল আহমেদ বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাবুল চেয়ারম্যান বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর শুনে এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তবে পরিস্থিতি বেসামাল দেখে আমি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাই। তিনি বলেন, সাইফুল মেম্বার ও আবুল হোসেন মোল্লার পরিবারের মাঝে বিরোধ দীর্ঘদিনের।
এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি গ্রুপের মাঝে দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। তিনি আরও বলেন, যুবলীগ নেতা জহির হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারাই থাকুক, তাদের খুঁজে বের করা হবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ইউনিয়নে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ হিসাবে পরিচিত। বিএনপির সময় তিনি সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করতেন। ক্ষমতার পালাবদলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল শিকদারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তিনি আধিপত্য ধরে রাখেন। এরপর নৌকার মনোনয়নে বাবুল আহমেদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তার ছত্রছায়ায় সাইফুল ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।