চট্টগ্রাম ও দুই পার্বত্য জেলায় পরিবহণ ধর্মঘটে দুর্ভোগ
গাড়ি রিকুইজিশনের প্রতিবাদ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
০৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের ডাকা আকস্মিক ধর্মঘটে উত্তর চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। এতে হাজার হাজার যাত্রীকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভা উপলক্ষ্যে একসঙ্গে ৯০টি বাস রিকুইজিশন করে পুলিশ। এসব বাসে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাবেশের লোকজনও বহন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা।
পুলিশ কর্তৃক গণহারে বাস রিকুইজিশনের প্রতিবাদে এ ধর্মঘট ডাকা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন এ তিন জেলার হাজার হাজার যাত্রী। বাস-মালিক শ্রমিকদের অভিযোগ, কক্সবাজারে গত বুধবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভার জন্য পুলিশ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য দুই জেলা থেকে প্রায় ৯০টি বাস রিকুইজিশন করে। এসব বাসের শ্রমিকদের খাবার খরচ এবং ডিজেল খরচ দেওয়ার কথা থাকলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়েনি। ওইসব এলাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১২টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও গণপরিবহণ চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও দুই-তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুর আলম মঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজারের সমাবেশে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ প্রায় ৯০টি গাড়ি রিকুইজিশন করে নিয়ে যায়। শুধু ৩০ লিটার তেল দিয়ে এসব গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আমরা কথা বলার পর কক্সবাজার থেকে আসার সময় প্রতিটি গাড়িকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পথে কক্সবাজারের ঈদগাহ এলাকায় পুলিশ এসব গাড়ি ধরে টাকাগুলো নিয়ে যায়। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। তারা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয়। সকালে আমি এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বললে ৫ হাজার টাকা করে প্রতিটি গাড়িকে দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারা। এছাড়া হাটহাজারী থেকে রিকুইজিশন করা ২৪টি গাড়িকে আমি আমার পকেট থেকে অর্থ দিয়েছি। বেলা ১২টার দিকে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ গাড়িগুলো রিকুইজিশন করলেও এগুলো কক্সবাজারে পাবলিক কাজে ব্যবহার হয়েছে। সেখানে গাড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় খাবার ও তেল খরচ দেওয়া হয়নি।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রামের অক্সিজেন বাস টার্মিনালে উত্তর চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিগামী কয়েক হাজার যাত্রী আটকা পড়েন। তাদের অনেকেই ছিলেন চাকরিজীবী। তারা কর্মস্থলে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন। অনেক যাত্রীকে সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিতে দেখা যায়। বাস না থাকায় অটোরিকশাগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
গাড়ি রিকুইজিশনের প্রতিবাদ
চট্টগ্রাম ও দুই পার্বত্য জেলায় পরিবহণ ধর্মঘটে দুর্ভোগ
পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের ডাকা আকস্মিক ধর্মঘটে উত্তর চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। এতে হাজার হাজার যাত্রীকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভা উপলক্ষ্যে একসঙ্গে ৯০টি বাস রিকুইজিশন করে পুলিশ। এসব বাসে প্রশাসনের পাশাপাশি সমাবেশের লোকজনও বহন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন পরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা।
পুলিশ কর্তৃক গণহারে বাস রিকুইজিশনের প্রতিবাদে এ ধর্মঘট ডাকা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন এ তিন জেলার হাজার হাজার যাত্রী। বাস-মালিক শ্রমিকদের অভিযোগ, কক্সবাজারে গত বুধবার অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভার জন্য পুলিশ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য দুই জেলা থেকে প্রায় ৯০টি বাস রিকুইজিশন করে। এসব বাসের শ্রমিকদের খাবার খরচ এবং ডিজেল খরচ দেওয়ার কথা থাকলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা এবং খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়েনি। ওইসব এলাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১২টার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও গণপরিবহণ চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও দুই-তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের মহাসচিব মঞ্জুর আলম মঞ্জু যুগান্তরকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজারের সমাবেশে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ প্রায় ৯০টি গাড়ি রিকুইজিশন করে নিয়ে যায়। শুধু ৩০ লিটার তেল দিয়ে এসব গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আমরা কথা বলার পর কক্সবাজার থেকে আসার সময় প্রতিটি গাড়িকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পথে কক্সবাজারের ঈদগাহ এলাকায় পুলিশ এসব গাড়ি ধরে টাকাগুলো নিয়ে যায়। এ নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। তারা গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেয়। সকালে আমি এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বললে ৫ হাজার টাকা করে প্রতিটি গাড়িকে দেওয়ার আশ্বাস দেয় তারা। এছাড়া হাটহাজারী থেকে রিকুইজিশন করা ২৪টি গাড়িকে আমি আমার পকেট থেকে অর্থ দিয়েছি। বেলা ১২টার দিকে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ গাড়িগুলো রিকুইজিশন করলেও এগুলো কক্সবাজারে পাবলিক কাজে ব্যবহার হয়েছে। সেখানে গাড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে। তাদেরকে প্রয়োজনীয় খাবার ও তেল খরচ দেওয়া হয়নি।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রামের অক্সিজেন বাস টার্মিনালে উত্তর চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিগামী কয়েক হাজার যাত্রী আটকা পড়েন। তাদের অনেকেই ছিলেন চাকরিজীবী। তারা কর্মস্থলে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন। অনেক যাত্রীকে সিএনজি অটোরিকশাসহ ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যের উদ্দেশে রওয়ানা দিতে দেখা যায়। বাস না থাকায় অটোরিকশাগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।