কিশোরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ
jugantor
কিশোরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ

  কিশোরগঞ্জ ব্যুরো  

২১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

কিশোরগঞ্জের মানিকখালি ও সরারচর স্টেশনের মধ্যবর্তী জায়গায় থামিয়ে যাত্রী না তোলায় বারুণী মেলায় আসা দর্শনার্থীদের একটা অংশ চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ করে। এতে ট্রেনের সহকারী চালকসহ অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন। রোববার রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।

পাথরের আঘাতে ট্রেনের সহকারী চালক মো. কাওছার হোসেন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। চলন্ত ট্রেনে হামলার ভিডিও এবং ছবিসহ তার পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। ট্রেনের লুকিং গ্লাসসহ অনেক জানালার কাঁচও ভেঙে যায়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানা যায়, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম মণ্ডলভোগ। সেখানেই রাত সাড়ে ১১টার দিকে চলন্ত ট্রেনে পাথর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় যাত্রীসাধারণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে এ সময় দিগ¦দিক ছোটাছুটি করতে গিয়ে এবং পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন।

চান্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান জানান, প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রথম রোববার আবদুর রহমান নামে এক কামেল পীরের মাজারকে কেন্দ্র করে একদিনের বড় বারুণী মেলা বসে মণ্ডলভোগ গ্রামে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। তিনি বলেন, শুনেছি রাতে এসব দর্শনার্থীর একাংশ এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে চেয়েছিলেন। তাদের না তোলায় উত্তেজিত হয়ে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করেন তারা।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নির্বিচার এই পাথর হামলায় ট্রেনের সহকারী চালকসহ অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন। রাতে তারা যার যার গন্তব্যে চলে যাওয়ায় তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি (জিআরপি) একেএম আমিনুল হক যুগান্তরকে জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেছেন। আশপাশের লোকজন তাকে জানান, মণ্ডলভোগ মেলা চলাকালে দীর্ঘদিন ধরে রাতের ট্রেন ওই এলাকা অতিক্রমকালে গতি কমিয়ে দর্শনার্থীদের তোলার রেওয়াজ ছিল। ওই কারণে অপেক্ষমান অনেক যাত্রী হাত উঁচিয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে তাদের তোলার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু সেখানে ট্রেন থামার কিংবা গতি কমানোর কোনো নির্দেশনা না থাকায় ট্রেনটি তাদের ইঙ্গিত আমলে নেয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু দর্শনার্থী পাথর নিক্ষেপ শুরু করেন। অনেক চেষ্টা করেও এসব দর্শনার্থীদের নাম-পরিচয় ও ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

তিনি জানান, পাথর হামলায় যাত্রীদের ক্ষয়ক্ষতি বা কতজন আহত হয়েছেন এ বিষয়ে তথ্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় রিজিওনাল ম্যানেজারের (ডিআরএম) কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে স্টেশন মাস্টার ইউসুফ হোসেনকে ফোন দিলে তিনি ছুটিতে থাকায় বিস্তারিত জানেননি বলে দাবি করেন।

কিশোরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ

 কিশোরগঞ্জ ব্যুরো 
২১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

কিশোরগঞ্জের মানিকখালি ও সরারচর স্টেশনের মধ্যবর্তী জায়গায় থামিয়ে যাত্রী না তোলায় বারুণী মেলায় আসা দর্শনার্থীদের একটা অংশ চলন্ত ট্রেনে বৃষ্টির মতো পাথর নিক্ষেপ করে। এতে ট্রেনের সহকারী চালকসহ অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন। রোববার রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে।

পাথরের আঘাতে ট্রেনের সহকারী চালক মো. কাওছার হোসেন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। চলন্ত ট্রেনে হামলার ভিডিও এবং ছবিসহ তার পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে। ট্রেনের লুকিং গ্লাসসহ অনেক জানালার কাঁচও ভেঙে যায়। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানা যায়, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম মণ্ডলভোগ। সেখানেই রাত সাড়ে ১১টার দিকে চলন্ত ট্রেনে পাথর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় যাত্রীসাধারণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে এ সময় দিগ¦দিক ছোটাছুটি করতে গিয়ে এবং পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন।

চান্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান জানান, প্রতি বছর চৈত্র মাসের প্রথম রোববার আবদুর রহমান নামে এক কামেল পীরের মাজারকে কেন্দ্র করে একদিনের বড় বারুণী মেলা বসে মণ্ডলভোগ গ্রামে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। তিনি বলেন, শুনেছি রাতে এসব দর্শনার্থীর একাংশ এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠতে চেয়েছিলেন। তাদের না তোলায় উত্তেজিত হয়ে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করেন তারা।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নির্বিচার এই পাথর হামলায় ট্রেনের সহকারী চালকসহ অন্তত ৩০ যাত্রী আহত হয়েছেন। রাতে তারা যার যার গন্তব্যে চলে যাওয়ায় তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ওসি (জিআরপি) একেএম আমিনুল হক যুগান্তরকে জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেছেন। আশপাশের লোকজন তাকে জানান, মণ্ডলভোগ মেলা চলাকালে দীর্ঘদিন ধরে রাতের ট্রেন ওই এলাকা অতিক্রমকালে গতি কমিয়ে দর্শনার্থীদের তোলার রেওয়াজ ছিল। ওই কারণে অপেক্ষমান অনেক যাত্রী হাত উঁচিয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে তাদের তোলার ইঙ্গিত দেন। কিন্তু সেখানে ট্রেন থামার কিংবা গতি কমানোর কোনো নির্দেশনা না থাকায় ট্রেনটি তাদের ইঙ্গিত আমলে নেয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু দর্শনার্থী পাথর নিক্ষেপ শুরু করেন। অনেক চেষ্টা করেও এসব দর্শনার্থীদের নাম-পরিচয় ও ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।

তিনি জানান, পাথর হামলায় যাত্রীদের ক্ষয়ক্ষতি বা কতজন আহত হয়েছেন এ বিষয়ে তথ্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঘটনা তদন্তে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় রিজিওনাল ম্যানেজারের (ডিআরএম) কার্যালয় থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে স্টেশন মাস্টার ইউসুফ হোসেনকে ফোন দিলে তিনি ছুটিতে থাকায় বিস্তারিত জানেননি বলে দাবি করেন।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন