পুনর্নির্বাচন চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ বিএনপিপন্থিদের
jugantor
সুপ্রিমকোর্ট বার
পুনর্নির্বাচন চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ বিএনপিপন্থিদের

  যুগান্তর প্রতিবেদন  

২১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সুপ্রিমকোর্ট বারের পুনর্নির্বাচন এবং আইনজীবী-সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। সোমবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থি আইনজীবীরাও যোগ দেন। এ সময় আইনজীবীদের হাতে কালো পতাকা ছিল। সমাবেশে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পুলিশের হামলার নির্দেশদাতা উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন আইনজীবী নেতারা। মিছিল-সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট আব্দুল জাব্বার ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মিয়া প্রমুখ।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট থেকে কয়েকশ আইনজীবী বিক্ষোভ মিছিল করে হাইকোর্ট মাজার গেট দিয়ে রাজপথে প্রবেশ করেন। মিছিলটি কদম ফোয়ারা ও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে এলে আইনজীবীরা ফোয়ারার পাশে রাজপথে বসে পড়েন। এখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিমকোর্টে পুলিশ ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগপন্থিরা ভোট ডাকাতি করেছে। আগামীতে তারা বিচার বিভাগকেও ডাকাতি করবে। সুতরাং মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে এই হামলার বিচার করতেই হবে। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টে কলঙ্কজনক ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। সুপ্রিমকোর্টে কোনো নির্বাচন হয়নি। ভোটের নামে হঠাৎ করে পুলিশ কেন্দ্রে প্রবেশ করল। সাংবাদিক আইনজীবীদের পিটিয়ে আহত ও নিগৃহীত করা হলো। সবাইকে বের করে দিয়ে সরকার সমর্থকরা পুলিশের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখল করল। খোকন বলেন, এ ঘটনার জন্য আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে, অন্যথায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, চক্রান্ত হয়েছে। আইনজীবী সমাজ রাজপথে নেমে এসেছে। ন্যায়বিচার রাজপথে হবেই ইনশাআল্লাহ। অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, সুপ্রিমকোর্র্টে পুলিশ অযাচিতভাবে হামলা করেছে। আমাদের একটাই দাবি এই স্বৈরাচার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। আন্দোলন চালিয়ে যাব।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহ্য ফিরে আনতে হলে অবিলম্বে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে তারিখ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।

তিন মামলায় ১৩ আইনজীবীর আগাম জামিন : নির্বাচন ঘিরে ব্যালট ছিনতাই, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলার তিন মামলায় বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন, সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুসসহ ১৩ আইনজীবী আগাম জামিন পেয়েছেন। আগাম জামিন চেয়ে ১৩ আইনজীবীর করা পৃথক তিনটি আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আবেদনকারীরা জানান, আট সপ্তাহ বা পুলিশের প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত, যেটি আগে হয়, সেই সময় পর্যন্ত তাদের আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালতে জামিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূইয়া।

১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির নির্বাচন হয়। নির্বাচন ঘিরে ব্যালট পেপার চুরি, ছিঁড়ে ফেলা, ভাঙচুর ও নির্বাচনসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে শাহবাগ থানায় পৃথক মামলা হয়। ১৫ মার্চ পৃথক এই মামলা করেন সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান ও সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান। আর পুলিশের ওপর হামলা ও ভোটকেন্দ্রে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে পরদিন ১৬ মার্চ শাহবাগ থানায় অপর মামলাটি করা হয়। এই মামলার বাদী পুলিশ। তিনটির মধ্যে পুলিশের করা মামলায় দুজন প্রার্থীসহ ১৩ আইনজীবী আগাম জামিনের আবেদন জানান। আর অপর দুই মামলায় দুজন প্রার্থী আগাম জামিনের আবেদন জানান।

সুপ্রিমকোর্ট বার

পুনর্নির্বাচন চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ বিএনপিপন্থিদের

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
২১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সুপ্রিমকোর্ট বারের পুনর্নির্বাচন এবং আইনজীবী-সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। সোমবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থি আইনজীবীরাও যোগ দেন। এ সময় আইনজীবীদের হাতে কালো পতাকা ছিল। সমাবেশে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পুলিশের হামলার নির্দেশদাতা উল্লেখ করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন আইনজীবী নেতারা। মিছিল-সমাবেশে নেতৃত্ব দেন ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট আব্দুল জাব্বার ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মিয়া প্রমুখ।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট থেকে কয়েকশ আইনজীবী বিক্ষোভ মিছিল করে হাইকোর্ট মাজার গেট দিয়ে রাজপথে প্রবেশ করেন। মিছিলটি কদম ফোয়ারা ও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সামনে এলে আইনজীবীরা ফোয়ারার পাশে রাজপথে বসে পড়েন। এখানে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সুপ্রিমকোর্টে পুলিশ ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগপন্থিরা ভোট ডাকাতি করেছে। আগামীতে তারা বিচার বিভাগকেও ডাকাতি করবে। সুতরাং মাননীয় প্রধান বিচারপতিকে এই হামলার বিচার করতেই হবে। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টে কলঙ্কজনক ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। সুপ্রিমকোর্টে কোনো নির্বাচন হয়নি। ভোটের নামে হঠাৎ করে পুলিশ কেন্দ্রে প্রবেশ করল। সাংবাদিক আইনজীবীদের পিটিয়ে আহত ও নিগৃহীত করা হলো। সবাইকে বের করে দিয়ে সরকার সমর্থকরা পুলিশের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখল করল। খোকন বলেন, এ ঘটনার জন্য আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদত্যাগ করতে হবে। নতুন করে নির্বাচন দিতে হবে, অন্যথায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, চক্রান্ত হয়েছে। আইনজীবী সমাজ রাজপথে নেমে এসেছে। ন্যায়বিচার রাজপথে হবেই ইনশাআল্লাহ। অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, সুপ্রিমকোর্র্টে পুলিশ অযাচিতভাবে হামলা করেছে। আমাদের একটাই দাবি এই স্বৈরাচার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। আন্দোলন চালিয়ে যাব।

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহ্য ফিরে আনতে হলে অবিলম্বে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে তারিখ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।

তিন মামলায় ১৩ আইনজীবীর আগাম জামিন : নির্বাচন ঘিরে ব্যালট ছিনতাই, ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলার তিন মামলায় বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন, সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুসসহ ১৩ আইনজীবী আগাম জামিন পেয়েছেন। আগাম জামিন চেয়ে ১৩ আইনজীবীর করা পৃথক তিনটি আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আবেদনকারীরা জানান, আট সপ্তাহ বা পুলিশের প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত, যেটি আগে হয়, সেই সময় পর্যন্ত তাদের আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। আদালতে জামিন আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূইয়া।

১৫ ও ১৬ মার্চ সমিতির নির্বাচন হয়। নির্বাচন ঘিরে ব্যালট পেপার চুরি, ছিঁড়ে ফেলা, ভাঙচুর ও নির্বাচনসংক্রান্ত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে শাহবাগ থানায় পৃথক মামলা হয়। ১৫ মার্চ পৃথক এই মামলা করেন সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান ও সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান। আর পুলিশের ওপর হামলা ও ভোটকেন্দ্রে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে পরদিন ১৬ মার্চ শাহবাগ থানায় অপর মামলাটি করা হয়। এই মামলার বাদী পুলিশ। তিনটির মধ্যে পুলিশের করা মামলায় দুজন প্রার্থীসহ ১৩ আইনজীবী আগাম জামিনের আবেদন জানান। আর অপর দুই মামলায় দুজন প্রার্থী আগাম জামিনের আবেদন জানান।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন