নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষার সিদ্ধান্তে অনড় ইবি
jugantor
নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষার সিদ্ধান্তে অনড় ইবি

  ইবি প্রতিনিধি  

২২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সমন্বয়হীনতা, বিড়ম্বনা, ভোগান্তি ও নানা অসন্তোষের অভিযোগ এনে গুচ্ছের বাইরে গিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) একাডেমিক কাউন্সিল। তবে এ সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করে ফের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার দুপুরে ইউজিসির আয়োজিত গুচ্ছভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সভায় এ আহ্বান করা হয়। একইসঙ্গে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে ইউজিসি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে ইউজিসি ও ইবি পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ক্যাম্পাসে ফিরলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন বলে জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম শিক্ষকদের মতামতের বাইরে কিছু করবেন না বলেও জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইউজিসির সভায় তুলে ধরেছি। তারা বলেছে, ‘এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। যারা গুচ্ছে ছিল কোনোক্রমেই তাদের গুচ্ছের বাইরে যাওয়া যাবে না।’ এটি আমাদের শিক্ষকদের জানাব। যেহেতু তারাই পরীক্ষা নেবেন তাই তাদের মতামতের বাইরে আমি কিছু করতে পারি না। তবে সরকার বা ইউজিসি বাধ্যবাধকতা রাখলে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ আমাদের নিয়ন্ত্রণ, টাকা-পয়সা সব তো তারা দেয়।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আমরা এখনো নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছি। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব একটা আইনে চলে। ইউজিসি যেমন একটা নিয়মের মধ্যে চলে ইবিও তেমন।

জানা যায়, সভায় ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম, প্রফেসর মো. আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ জন্দ, প্রফেসর ড. আবু তাহেরসহ গুচ্ছভুক্ত ১৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউসিজি সচিব ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক জামিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ইবিকে গুচ্ছেই থাকতে হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির বিদ্যমান সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভর্তিতে বিগত বছরের জটিলতাগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এবং ভর্তি কীভাবে আরও সহজ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। আগামী বছর থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইউনিক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২২ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে। এখন তারা নিজেরা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। রোববার বিশ্ববিদ্যলয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইবির একাডেমিক কাউন্সিল। এর আগে গত বছর শিক্ষক সমিতি নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তারা সরকারের উচ্চ মহলের চাপে ও শর্তসাপক্ষে গুচ্ছে অংশ নেয়।

নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষার সিদ্ধান্তে অনড় ইবি

 ইবি প্রতিনিধি 
২২ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

সমন্বয়হীনতা, বিড়ম্বনা, ভোগান্তি ও নানা অসন্তোষের অভিযোগ এনে গুচ্ছের বাইরে গিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) একাডেমিক কাউন্সিল। তবে এ সিদ্ধান্তের তোয়াক্কা না করে ফের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গুচ্ছে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার দুপুরে ইউজিসির আয়োজিত গুচ্ছভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সভায় এ আহ্বান করা হয়। একইসঙ্গে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে ইউজিসি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়েছে। এ নিয়ে ইউজিসি ও ইবি পরস্পর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ক্যাম্পাসে ফিরলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন বলে জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম শিক্ষকদের মতামতের বাইরে কিছু করবেন না বলেও জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইউজিসির সভায় তুলে ধরেছি। তারা বলেছে, ‘এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। যারা গুচ্ছে ছিল কোনোক্রমেই তাদের গুচ্ছের বাইরে যাওয়া যাবে না।’ এটি আমাদের শিক্ষকদের জানাব। যেহেতু তারাই পরীক্ষা নেবেন তাই তাদের মতামতের বাইরে আমি কিছু করতে পারি না। তবে সরকার বা ইউজিসি বাধ্যবাধকতা রাখলে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ আমাদের নিয়ন্ত্রণ, টাকা-পয়সা সব তো তারা দেয়।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আমরা এখনো নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছি। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব একটা আইনে চলে। ইউজিসি যেমন একটা নিয়মের মধ্যে চলে ইবিও তেমন।

জানা যায়, সভায় ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম, প্রফেসর মো. আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ জন্দ, প্রফেসর ড. আবু তাহেরসহ গুচ্ছভুক্ত ১৭ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউসিজি সচিব ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক জামিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ইবিকে গুচ্ছেই থাকতে হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সভায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির বিদ্যমান সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। ভর্তিতে বিগত বছরের জটিলতাগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় এবং ভর্তি কীভাবে আরও সহজ ও শিক্ষার্থীবান্ধব করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। আগামী বছর থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইউনিক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২২ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে। এখন তারা নিজেরা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। রোববার বিশ্ববিদ্যলয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় ইবির একাডেমিক কাউন্সিল। এর আগে গত বছর শিক্ষক সমিতি নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তারা সরকারের উচ্চ মহলের চাপে ও শর্তসাপক্ষে গুচ্ছে অংশ নেয়।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন