নিখোঁজ ইলিয়াসের সন্ধান জানে কি বিএনপি
jugantor
নেতাকর্মীদের কাছে তিনি জীবিত
নিখোঁজ ইলিয়াসের সন্ধান জানে কি বিএনপি
১১ বছর নিখোঁজ থাকলেও আছেন নতুন কমিটিতে

  সংগ্রাম সিংহ, সিলেট  

২২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

বহুল আলোচিত বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ১১ বছর ধরে নিখোঁজ থাকলেও রাখা হয়েছে সিলেট জেলা বিএনপির কমিটিতে। এবারও কমিটিতে প্রথম সদস্য রাখা হয়েছে তাকে। তিনি ২০১২ সালে ‘নিখোঁজের’ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। পরে সংগঠনের দুই ইউনিট থেকেই নাম বাদ দেওয়া সিলেট-২ আসনের সাবেক এ সংসদ-সদস্যকে ফের কমিটির ১ম সদস্য করায় রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত রোববার রাতে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৫১ সদস্যের এ কমিটিতে ইলিয়াস আলী ছাড়াও তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনাকে ২য় এবং ছেলে আবরার ইলিয়াসকে ১১ নম্বর সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। তাহসীনা রুশদীর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার দায়িত্বেও রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্র্মী অসংখ্য। সারাটা জীবন রাজনীতির পেছনে দৌড়েও কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন না। যেখানে দলের সক্রিয় নেতারাই পদ-পদবি পাচ্ছেন না সেখানে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ নেতাকে ফের কমিটিতে সদস্য করার পেছনে কোনো না কোনো রহস্য রয়েছে। তবে দলের দায়িত্বশীলদের দাবি, এটা নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। কমিটিতে রাখলেও ইলিয়াস আলী এখন কোথায়, কী তার পরিণতি-যদিও এ ব্যাপারে এখনো অন্ধকারেই আছেন দলের নেতারা। তবে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ইলিয়াস বেঁচে আছেন। গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এলে হয়তো সন্ধান মিলবে এ নিখোঁজ নেতার। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন যুগান্তরকে বলেন, দলের এত বড় এক নেতা চোখের সামনে নেই বলে তাকে কি কমিটি থেকে বাদ দেওয়া যায়? তার প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, আস্থা আছে বলেই আমরা কমিটিতে তাকে রেখেছি। তবে এখন তিনি কোথায়, কী অবস্থায় আছেন তা আমরা জানি না।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ইলিয়াস আলীর কোনো সন্ধান না পেলেও তিনি জীবিত আছেন এটা আমাদের সবার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রতিবছর তার সন্ধান চেয়ে স্মারকলিপি দিই, ‘গুম’ দিবস পালন করি। কারণ তার পরিণতি সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকার এখনো কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। ইলিয়াসের সঙ্গে তার গাড়িচালক আনসার আলীও নিখোঁজ হন। সেদিন মধ্যরাতে ঢাকার বনানীতে সড়কের পাশ থেকে তার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর তার সন্ধানের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিএনপি। সিলেটে এ দাবিতে হরতাল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণও হারান দলটির একাধিক কর্মী। এছাড়া ইলিয়াস আলীর সন্ধান চেয়ে বনানী থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বামীর সন্ধানে সহযোগিতা কামনাও করেন তিনি।

নেতাকর্মীদের কাছে তিনি জীবিত

নিখোঁজ ইলিয়াসের সন্ধান জানে কি বিএনপি

১১ বছর নিখোঁজ থাকলেও আছেন নতুন কমিটিতে
 সংগ্রাম সিংহ, সিলেট 
২২ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

বহুল আলোচিত বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী ১১ বছর ধরে নিখোঁজ থাকলেও রাখা হয়েছে সিলেট জেলা বিএনপির কমিটিতে। এবারও কমিটিতে প্রথম সদস্য রাখা হয়েছে তাকে। তিনি ২০১২ সালে ‘নিখোঁজের’ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। পরে সংগঠনের দুই ইউনিট থেকেই নাম বাদ দেওয়া সিলেট-২ আসনের সাবেক এ সংসদ-সদস্যকে ফের কমিটির ১ম সদস্য করায় রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত রোববার রাতে জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৫১ সদস্যের এ কমিটিতে ইলিয়াস আলী ছাড়াও তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনাকে ২য় এবং ছেলে আবরার ইলিয়াসকে ১১ নম্বর সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। তাহসীনা রুশদীর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার দায়িত্বেও রয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্র্মী অসংখ্য। সারাটা জীবন রাজনীতির পেছনে দৌড়েও কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন না। যেখানে দলের সক্রিয় নেতারাই পদ-পদবি পাচ্ছেন না সেখানে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ নেতাকে ফের কমিটিতে সদস্য করার পেছনে কোনো না কোনো রহস্য রয়েছে। তবে দলের দায়িত্বশীলদের দাবি, এটা নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা। কমিটিতে রাখলেও ইলিয়াস আলী এখন কোথায়, কী তার পরিণতি-যদিও এ ব্যাপারে এখনো অন্ধকারেই আছেন দলের নেতারা। তবে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ইলিয়াস বেঁচে আছেন। গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এলে হয়তো সন্ধান মিলবে এ নিখোঁজ নেতার। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন যুগান্তরকে বলেন, দলের এত বড় এক নেতা চোখের সামনে নেই বলে তাকে কি কমিটি থেকে বাদ দেওয়া যায়? তার প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, আস্থা আছে বলেই আমরা কমিটিতে তাকে রেখেছি। তবে এখন তিনি কোথায়, কী অবস্থায় আছেন তা আমরা জানি না।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ইলিয়াস আলীর কোনো সন্ধান না পেলেও তিনি জীবিত আছেন এটা আমাদের সবার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রতিবছর তার সন্ধান চেয়ে স্মারকলিপি দিই, ‘গুম’ দিবস পালন করি। কারণ তার পরিণতি সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সরকার এখনো কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী। ইলিয়াসের সঙ্গে তার গাড়িচালক আনসার আলীও নিখোঁজ হন। সেদিন মধ্যরাতে ঢাকার বনানীতে সড়কের পাশ থেকে তার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর তার সন্ধানের দাবিতে আন্দোলনে নামে বিএনপি। সিলেটে এ দাবিতে হরতাল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণও হারান দলটির একাধিক কর্মী। এছাড়া ইলিয়াস আলীর সন্ধান চেয়ে বনানী থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বামীর সন্ধানে সহযোগিতা কামনাও করেন তিনি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন