ভোলাহাট থানার ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
সাময়িক বরখাস্ত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
২৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসির) বিরুদ্ধে এক নারী উদ্যোক্তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নাচোলের ভুক্তভোগী ওই নারী উদ্যোক্তা। এদিকে ওই নারী থানায় হট্টগোল করায় ওসি সেলিম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী উদোক্তা। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রায় দুবছর আগে একটি মামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পরিচয় হয় তৎকালীন নাচোল থানার ওসি সেলিম রেজার সঙ্গে। এরপর তাদের সখ্য গড়ে ওঠে। মাঝে মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের আমবাগান এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তাদের দেখা হতো। এরপর সেলিম রেজা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মাঝপাড়ার বাসায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ ধর্ষণ করেন গত বছর ১৯ আগস্ট। এরপর সেলিম রেজা ভোলাহাট থানায় বদলি হলেও সম্পর্ক চালিয়ে যান। ঘটনাটি তার স্ত্রী জেনে গেলে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ভুক্তভোগীকে। এরপর সেলিম রেজা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ওই নারী আরও বলেন, তিনি প্রেমিক সেলিম রেজার সঙ্গে চলতি বছর ৬ জানুয়ারি ভোলাহাট থানায় যান দেখা করতে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে থানা হতে তাড়িয়ে দেন। এরপর আবারও ২২ জানুয়ারি বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় গেলে আবারও কয়েকজন পুলিশ সদস্য মারধর করে তাকে সারারাত আটকে রাখেন। ২৩ জানুয়ারি ৫৪ ধারায় পুলিশ একটি মামলা করে তাকে আদালতে পাঠায়। পুলিশের মামলায় সাত দিন কারাগারে থাকেন তিনি। সে সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ওসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ছবি, কথোপকথনসহ সব ডকুমেন্টস ডিলেট করে দেওয়া হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে থানায় গেলে ওসি মুচলেকা নিয়ে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম রেজা মোবাইল ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য ওই নারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। তার সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে পাঠানো একটি ভিডিও ফুটেজের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছি। ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই নারী ভোলাহাট থানায় হট্টগোল এবং চিৎকার চেঁচামেচি করছে। আমরা জেনেছি, ওই নারী এর আগেও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আর পরকীয়া বা থানায় নির্যাতনের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। তবে থানায় যেহেতু বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেজন্য ওসি সেলিম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগের আরও বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ভোলাহাট থানার ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
সাময়িক বরখাস্ত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসির) বিরুদ্ধে এক নারী উদ্যোক্তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নাচোলের ভুক্তভোগী ওই নারী উদ্যোক্তা। এদিকে ওই নারী থানায় হট্টগোল করায় ওসি সেলিম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী উদোক্তা। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রায় দুবছর আগে একটি মামলার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পরিচয় হয় তৎকালীন নাচোল থানার ওসি সেলিম রেজার সঙ্গে। এরপর তাদের সখ্য গড়ে ওঠে। মাঝে মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের আমবাগান এবং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে তাদের দেখা হতো। এরপর সেলিম রেজা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মাঝপাড়ার বাসায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। সর্বশেষ ধর্ষণ করেন গত বছর ১৯ আগস্ট। এরপর সেলিম রেজা ভোলাহাট থানায় বদলি হলেও সম্পর্ক চালিয়ে যান। ঘটনাটি তার স্ত্রী জেনে গেলে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাপ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ভুক্তভোগীকে। এরপর সেলিম রেজা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
ওই নারী আরও বলেন, তিনি প্রেমিক সেলিম রেজার সঙ্গে চলতি বছর ৬ জানুয়ারি ভোলাহাট থানায় যান দেখা করতে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে থানা হতে তাড়িয়ে দেন। এরপর আবারও ২২ জানুয়ারি বিয়ের দাবিতে ভোলাহাট থানায় গেলে আবারও কয়েকজন পুলিশ সদস্য মারধর করে তাকে সারারাত আটকে রাখেন। ২৩ জানুয়ারি ৫৪ ধারায় পুলিশ একটি মামলা করে তাকে আদালতে পাঠায়। পুলিশের মামলায় সাত দিন কারাগারে থাকেন তিনি। সে সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ওসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ছবি, কথোপকথনসহ সব ডকুমেন্টস ডিলেট করে দেওয়া হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে থানায় গেলে ওসি মুচলেকা নিয়ে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম রেজা মোবাইল ফোনে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য ওই নারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। তার সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে পাঠানো একটি ভিডিও ফুটেজের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেছি। ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই নারী ভোলাহাট থানায় হট্টগোল এবং চিৎকার চেঁচামেচি করছে। আমরা জেনেছি, ওই নারী এর আগেও অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আর পরকীয়া বা থানায় নির্যাতনের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। তবে থানায় যেহেতু বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেজন্য ওসি সেলিম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগের আরও বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।