সব কাজ ৫ লাইসেন্সধারীর কব্জায়
jugantor
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড
সব কাজ ৫ লাইসেন্সধারীর কব্জায়

  বরগুনা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি  

২৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে বাগিয়ে নিচ্ছে পটুয়াখালীর পাঁচ লাইসেন্সধারী প্রতারক চক্র। ইতোমধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে পাউবোর শত শত কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এর সঙ্গে পাউবোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। বৃহস্পতিবার বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার মাঈন উদ্দিন আসাদ এমন অভিযোগ করেন। এর আগে এ ব্যাপারে তিনি বরগুনা আদালতে মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার আসাদ জানান, প্রতারক চক্রের মূলহোতা হলেন পটুয়াখালীর আখতারুজ্জামান হিরু, নূরে এলাহী আলম ইভান, মিজানুর আলম ওরফে স্বপন মৃধা ও রিয়াজ উদ্দিন। এ প্রতারক চক্রের রোষানলে পড়ে তিনিসহ একাধিক ঠিকাদার মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চক্রটি পাঁচটি লাইসেন্সের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ করে থাকে। মেসার্স আবুল কালাম আজাদ, এমডি মিজানুর আলম, মেসার্স মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মেসার্স রিয়াজ উদ্দিন ও মেসার্স আল মামুন এন্টারপ্রাইজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে দেশের শত শত কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রকৃত ঠিকাদাররা দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম পান্নাসহ (সদ্য বদলি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। লিখিত বক্তব্যে আসাদ বলেন, ইজিপি সিস্টেমে দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের অন্যতম যোগ্যতা হলো পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতার সনদ। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ বানিয়ে অসাধু কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে বড় বড় কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বেশ কিছু ভুয়া কাজের সনদ সাংবাদিকদের দেখান।

আসাদ আরও জানান, প্রভাবশালী প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্য আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। প্রত্যেকে কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন।

ঠিকাদার আসাদ আরও জানান, সরকারি অর্থের অপচয় ঠেকাতে চিহ্নিত প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্য, তাদের সহায়তাকারী পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) শাহজালালের বিরুদ্ধে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি মামলা করেছেন। ডিবি পুলিশকে আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বরগুনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) শাহজালাল জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার কাজ হলো সাইটে কাজ বাস্তবায়ন করা। আর যাদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে তারা আমার পরিচিত নন। পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, এখানে এক সপ্তাহ হলো এসেছি। তাই এ বিষয়ে না জেনে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। অভিযুক্ত ঠিকাদারদের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজই নিয়ন্ত্রণ করে না, তারা অবৈধ টাকার প্রভাব খাটিয়ে পটুয়াখালী জেলার রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে। চক্রটির অন্যতম হোতা স্বপন মৃধা পটুয়াখালী পৌরসভার সব ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। রিয়াজ মৃধা পটুয়াখালী বাসমালিক সমিতির সভাপতি। তার কারণে পটুয়াখালী জেলায় দূরপাল্লার কোনো পরিবহণ ঢুকতে পারে না। এতে পদ্মা সেতুর সুফল থেকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড

সব কাজ ৫ লাইসেন্সধারীর কব্জায়

 বরগুনা (দক্ষিণ) প্রতিনিধি 
২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বরগুনা ও পটুয়াখালী অঞ্চলের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে বাগিয়ে নিচ্ছে পটুয়াখালীর পাঁচ লাইসেন্সধারী প্রতারক চক্র। ইতোমধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে পাউবোর শত শত কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। এর সঙ্গে পাউবোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। বৃহস্পতিবার বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার মাঈন উদ্দিন আসাদ এমন অভিযোগ করেন। এর আগে এ ব্যাপারে তিনি বরগুনা আদালতে মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার আসাদ জানান, প্রতারক চক্রের মূলহোতা হলেন পটুয়াখালীর আখতারুজ্জামান হিরু, নূরে এলাহী আলম ইভান, মিজানুর আলম ওরফে স্বপন মৃধা ও রিয়াজ উদ্দিন। এ প্রতারক চক্রের রোষানলে পড়ে তিনিসহ একাধিক ঠিকাদার মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। প্রতিনিয়ত তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, চক্রটি পাঁচটি লাইসেন্সের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ করে থাকে। মেসার্স আবুল কালাম আজাদ, এমডি মিজানুর আলম, মেসার্স মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মেসার্স রিয়াজ উদ্দিন ও মেসার্স আল মামুন এন্টারপ্রাইজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে দেশের শত শত কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রকৃত ঠিকাদাররা দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম পান্নাসহ (সদ্য বদলি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। লিখিত বক্তব্যে আসাদ বলেন, ইজিপি সিস্টেমে দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের অন্যতম যোগ্যতা হলো পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতার সনদ। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ বানিয়ে অসাধু কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে বড় বড় কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বেশ কিছু ভুয়া কাজের সনদ সাংবাদিকদের দেখান।

আসাদ আরও জানান, প্রভাবশালী প্রতারক চক্রের প্রত্যেক সদস্য আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। প্রত্যেকে কোটি টাকার গাড়িতে চড়েন।

ঠিকাদার আসাদ আরও জানান, সরকারি অর্থের অপচয় ঠেকাতে চিহ্নিত প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্য, তাদের সহায়তাকারী পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) শাহজালালের বিরুদ্ধে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি মামলা করেছেন। ডিবি পুলিশকে আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বরগুনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) শাহজালাল জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার কাজ হলো সাইটে কাজ বাস্তবায়ন করা। আর যাদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে তারা আমার পরিচিত নন। পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, এখানে এক সপ্তাহ হলো এসেছি। তাই এ বিষয়ে না জেনে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। অভিযুক্ত ঠিকাদারদের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজই নিয়ন্ত্রণ করে না, তারা অবৈধ টাকার প্রভাব খাটিয়ে পটুয়াখালী জেলার রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে। চক্রটির অন্যতম হোতা স্বপন মৃধা পটুয়াখালী পৌরসভার সব ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। রিয়াজ মৃধা পটুয়াখালী বাসমালিক সমিতির সভাপতি। তার কারণে পটুয়াখালী জেলায় দূরপাল্লার কোনো পরিবহণ ঢুকতে পারে না। এতে পদ্মা সেতুর সুফল থেকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন