ভারতীয় আলুর দৌরাত্ম্যে ন্যায্য দামবঞ্চিত কৃষক
পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্ত
পঞ্চগড় প্রতিনিধি
২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তে কয়েকদিন ধরেই জমে উঠেছে ভারতীয় আলুর রমরমা বাণিজ্য। এসব আলু অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসায় একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই ন্যায্য দাম থেকেও বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় আলুচাষিরা।
পঞ্চগড়ের সীমান্তগ্রাম ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া দিয়ে অবৈধভাবে আসছে ভারতের আলু। আর এসব আলু পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় স্থানীয় চোরাকারবারিদের মাধ্যমে এসব আলু কিনছেন বহিরাগত আলু ব্যবসায়ীরা। আর বিজিবির ক্যাম্পের সামনে দিয়েই এসব আলু পারাপার হলেও তাদের যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
জানা যায়, হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া ভারতের সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় এই চার গ্রামের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের কয়েকটি গ্রামের। ওই গ্রামগুলোর অবস্থান ভারতে হলেও তারকাঁটার বেড়া তাদের প্রতিবেশী গ্রামগুলো থেকে আলাদা করতে পারেনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি একে বাণিজ্যিক রুট হিসাবে ব্যবহার করছে। স্থানীয়রা জানান, ভারত থেকে মাত্র ৩ টাকা কেজিতে কেনা এসব আলু ১১ থেকে ১৩ টাকা দরে পাইকারি কিনছেন বহিরাগত ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় কয়েকজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধ পথে আসা আলু কম রেটে কেনা হচ্ছে। সেই মোতাবেক বিক্রিও হবে কম দামে। এতে দেশের আলুর চাহিদা অনেকটাই কমে আসবে এবং ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবেন চাষিরা। এসব আলু বৈধ পথে এলে সরকারও রাজস্ব পেত। আলুচাষি আব্দুল মতিন বলেন, এভাবে আলু আসতে থাকলে দেশীয় আলুচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবেন। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বিজিবিকে ম্যানেজ করেই সীমান্তে অবৈধ ব্যবসা চলছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দায়সারা দায়িত্ব দেখাতে তারা কিছু আলু জব্দ করেন।
এ ব্যাপারে বিজিবি ঘাগড়া ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ক্যাম্পের প্রধান নায়েক সুবেদার আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। উভয় দেশের জমিতেই আলু চাষ হচ্ছে। ফলে কোনটা ভারতের আর কোনটা বাংলাদেশের, সেটা বোঝা কঠিন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পঞ্চগড়ের ঘাগড়া সীমান্ত
ভারতীয় আলুর দৌরাত্ম্যে ন্যায্য দামবঞ্চিত কৃষক
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্তে কয়েকদিন ধরেই জমে উঠেছে ভারতীয় আলুর রমরমা বাণিজ্য। এসব আলু অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসায় একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনই ন্যায্য দাম থেকেও বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় আলুচাষিরা।
পঞ্চগড়ের সীমান্তগ্রাম ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া দিয়ে অবৈধভাবে আসছে ভারতের আলু। আর এসব আলু পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় স্থানীয় চোরাকারবারিদের মাধ্যমে এসব আলু কিনছেন বহিরাগত আলু ব্যবসায়ীরা। আর বিজিবির ক্যাম্পের সামনে দিয়েই এসব আলু পারাপার হলেও তাদের যেন কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
জানা যায়, হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের ঝুলিপাড়া, মমিনপাড়া, তিনঘড়িয়া পাড়া এবং বাঙ্গালপাড়া ভারতের সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় এই চার গ্রামের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে ভারতের কয়েকটি গ্রামের। ওই গ্রামগুলোর অবস্থান ভারতে হলেও তারকাঁটার বেড়া তাদের প্রতিবেশী গ্রামগুলো থেকে আলাদা করতে পারেনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি একে বাণিজ্যিক রুট হিসাবে ব্যবহার করছে। স্থানীয়রা জানান, ভারত থেকে মাত্র ৩ টাকা কেজিতে কেনা এসব আলু ১১ থেকে ১৩ টাকা দরে পাইকারি কিনছেন বহিরাগত ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় কয়েকজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, অবৈধ পথে আসা আলু কম রেটে কেনা হচ্ছে। সেই মোতাবেক বিক্রিও হবে কম দামে। এতে দেশের আলুর চাহিদা অনেকটাই কমে আসবে এবং ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবেন চাষিরা। এসব আলু বৈধ পথে এলে সরকারও রাজস্ব পেত। আলুচাষি আব্দুল মতিন বলেন, এভাবে আলু আসতে থাকলে দেশীয় আলুচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবেন। নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বিজিবিকে ম্যানেজ করেই সীমান্তে অবৈধ ব্যবসা চলছে। বিষয়টি জানাজানি হলে দায়সারা দায়িত্ব দেখাতে তারা কিছু আলু জব্দ করেন।
এ ব্যাপারে বিজিবি ঘাগড়া ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ক্যাম্পের প্রধান নায়েক সুবেদার আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। উভয় দেশের জমিতেই আলু চাষ হচ্ছে। ফলে কোনটা ভারতের আর কোনটা বাংলাদেশের, সেটা বোঝা কঠিন।