কিশোর গ্যাংয়ের ককটেলবাজিতে শহরে আতঙ্ক
jugantor
কিশোর গ্যাংয়ের ককটেলবাজিতে শহরে আতঙ্ক

  মনোয়ার হোসেন জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ  

২৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

জেলা শহরে ককটেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘কিশোর গ্যাং’। চাঁদাবাজি, প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ, আধিপত্য বিস্তার-এসব নানা ক্ষেত্রে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীরা। পুলিশ প্রশাসন বলছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছোটখাটো ঘটনাতেই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় সন্ত্রাসীরা। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এদের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে। তাই এদেরকে রুখতে এখনই সক্রিয় হয়েছেন তারা।

গত তিন দিন ধরে শহরের নিমতলা মোড়, কলোনিপাড়া মোড়, ফকিরপাড়া, আরামবাগ এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। রোববার রাতে শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় হঠাৎই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েকজন কিশোর ৮টি ককটেল রাস্তায় নিক্ষেপ করে। এ সময় চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। অবিস্ফোরিত চারটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ম্যাথরপাড়ার দিক থেকে ১০-১২ জন কিশোর ককটেলগুলো নিক্ষেপ করে। এরপর শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ বলছে, দুই পাড়ার মধ্যে বিরোধের জেরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যারা ককটেল মেরেছে তারা সবাই কিশোর বয়সী।

এর আগে গত ২৪ মার্চ রাতে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাইনাপাড়া এলাকায় দুপক্ষের বিরোধে ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়।

এর আগে ৭ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামাল উদ্দিন নাসের নামে এক ঠিকাদারের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ নয়ন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নয়ন দলবল নিয়ে ঠিকাদারের ব্যবস্থাপককে মারধর, ককটেল বিস্ফোরণ ও সাড়ে চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

এছাড়া গত ১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপনির্বাচনে অন্তত ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় আজ্ঞাত ১০০ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে র‌্যাব। ভারত থেকে চোরাইপথে আসা বিস্ফোরক দিয়ে এসব ককটেল বানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, গত তিন বছরে ককটেল বিস্ফোরণে সাতজন মারা গেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন শতাধিক। ভারত থেকে আসা বিস্ফোরকের রসদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব ককটেল। পুলিশের একটি সূত্র বলছেন, সন্ত্রাসীরা ককটেলকে চাঁদাবাজির অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। তাজা ককটেল ব্যবসায়ীর টেবিলে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটলের ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করতে এলাকার সন্ত্রাসীরা ককটেলকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। সামনে নির্বাচন, তাই এটি পুলিশেরও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ককটেলবাজ ও ককটেল তৈরির কারিগরদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিশোর গ্যাংয়ের ককটেলবাজিতে শহরে আতঙ্ক

 মনোয়ার হোসেন জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ 
২৯ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

জেলা শহরে ককটেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘কিশোর গ্যাং’। চাঁদাবাজি, প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ, আধিপত্য বিস্তার-এসব নানা ক্ষেত্রে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসীরা। পুলিশ প্রশাসন বলছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছোটখাটো ঘটনাতেই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় সন্ত্রাসীরা। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এদের তৎপরতা আরও বাড়তে পারে। তাই এদেরকে রুখতে এখনই সক্রিয় হয়েছেন তারা।

গত তিন দিন ধরে শহরের নিমতলা মোড়, কলোনিপাড়া মোড়, ফকিরপাড়া, আরামবাগ এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা। রোববার রাতে শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় হঠাৎই ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েকজন কিশোর ৮টি ককটেল রাস্তায় নিক্ষেপ করে। এ সময় চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। অবিস্ফোরিত চারটি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ম্যাথরপাড়ার দিক থেকে ১০-১২ জন কিশোর ককটেলগুলো নিক্ষেপ করে। এরপর শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ বলছে, দুই পাড়ার মধ্যে বিরোধের জেরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যারা ককটেল মেরেছে তারা সবাই কিশোর বয়সী।

এর আগে গত ২৪ মার্চ রাতে সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাইনাপাড়া এলাকায় দুপক্ষের বিরোধে ১০-১২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন আহত হয়।

এর আগে ৭ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জে জামাল উদ্দিন নাসের নামে এক ঠিকাদারের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ নয়ন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নয়ন দলবল নিয়ে ঠিকাদারের ব্যবস্থাপককে মারধর, ককটেল বিস্ফোরণ ও সাড়ে চার লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

এছাড়া গত ১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপনির্বাচনে অন্তত ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একটি তাজা ককটেল উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় আজ্ঞাত ১০০ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে র‌্যাব। ভারত থেকে চোরাইপথে আসা বিস্ফোরক দিয়ে এসব ককটেল বানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, গত তিন বছরে ককটেল বিস্ফোরণে সাতজন মারা গেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন শতাধিক। ভারত থেকে আসা বিস্ফোরকের রসদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব ককটেল। পুলিশের একটি সূত্র বলছেন, সন্ত্রাসীরা ককটেলকে চাঁদাবাজির অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। তাজা ককটেল ব্যবসায়ীর টেবিলে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটলের ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করতে এলাকার সন্ত্রাসীরা ককটেলকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। সামনে নির্বাচন, তাই এটি পুলিশেরও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ককটেলবাজ ও ককটেল তৈরির কারিগরদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন