দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ
টাঙ্গাইলে সমাবেশ করতে পারেনি গণতন্ত্র মঞ্চ

আওয়ামী লীগ একই জায়গায় শান্তি সমাবেশ আহ্বান করায় গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ টাঙ্গাইলে নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি। দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চের অংশ হিসাবে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বাসাইলের করাতিপাড়ায় রোববার বিকাল ৪টায় তাদের সমাবেশ করার কথা ছিল। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১৪ দফা দাবিতে দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মৎস্য ভবন পর্যন্ত র্যালি করে এ কর্মসূচি শুরু করেন মঞ্চের নেতাকর্মীরা। ৭ জুন রংপুরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চ শেষ হবে এবং সেখান থেকে আন্দোলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মৎস্য ভবন থেকে ৮-৭টি মাইক্রোবাস নিয়ে যাত্রা শুরু হয় গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ কর্মসূচি। এতে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ছাড়াও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ শহিদুল ইসলাম বাবুল, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ রয়েছেন।
১৪ দফা দাবিতে ডিসেম্বর থেকে গণতন্ত্র মঞ্চ গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রা করার পর ঢাকার বাইরে এটি তাদের প্রথম কর্মসূচি। ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুরে তারা প্রথম সমাবেশ করে গাজীপুর চৌরাস্তায়। এরপর বিকাল ৪টায় টাঙ্গাইলের করাতিপাড়া বাইপাস মোড়ে সমাবেশ করতে না পেরে রোডমার্চের বহর শহরের অদূরে সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা মাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে হইচই শুরু করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রোডমার্চের নেতারা মাজার এলাকা থেকে বের হয়ে বাইরে চলে আসেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ সময় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা রোডমার্চ করছি গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর-এসব বিষয়ে মানুষ যে ঐক্যবদ্ধ, সেটা সরকার বুঝতে পারছে। তাই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ভয় পেয়ে তারা নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। এখানে কর্মসূচি পালনে আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম-অন্যত্র তারা স্থান ঠিক করে দিক। পুলিশ সে বিষয়ে কোনো সহযোগিতা দেয়নি। দ্বিতীয় দিন আজ বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জে শহিদ মিনারসংলগ্ন মুক্তি সোপানে এবং বিকাল ৪টায় বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলায় সমাবেশ করার কথা রয়েছে। তৃতীয় দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বগুড়ার সাতমাথায়, বিকাল ৪টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে, শেষ দিন বুধবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট চত্বরে এবং বিকাল ৪টায় রংপুর টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাবেশের মধ্য দিয়ে চার দিনের রোডমার্চ শেষ হবে।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক রোডমার্চের কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রোডমার্চ সম্পন্ন করতে চাই। আশা করব, সরকার, সরকারি দল, প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের সহিংসতা, কোনো ধরনের উসকানি দেওয়া হবে না। যদি বাধা দেওয়া হয়, তার পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানের একটা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তার বক্তব্যে এটা পরিষ্কার বেরিয়ে এসেছে, তারা আরেকটা তামাশার নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, এটা বুঝতে পেরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই তারা নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি জারি করেছে। সরকারের থলের বিড়াল ইতোমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে। তারা বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছেন। গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে তারা দেশ ও জনগণকে বাজি ধরছেন। এ ধরনের দায়িত্বহীন ও গণবিরোধী সরকার জনগণ মেনে নেবে না।
ভারতের নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের যে মানচিত্র স্থাপন করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো বাংলাদেশ সরকার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেনি। নিন্দা জানায়নি। ভারতের এই তৎপরতা এই অঞ্চলের দেশগুলোর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে একটা উসকানি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
টাঙ্গাইলে সমাবেশ করতে পারেনি গণতন্ত্র মঞ্চ
দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ
যুগান্তর প্রতিবেদন
০৫ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ একই জায়গায় শান্তি সমাবেশ আহ্বান করায় গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ টাঙ্গাইলে নির্ধারিত সমাবেশ করতে পারেনি। দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চের অংশ হিসাবে ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বাসাইলের করাতিপাড়ায় রোববার বিকাল ৪টায় তাদের সমাবেশ করার কথা ছিল। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১৪ দফা দাবিতে দিনাজপুর অভিমুখে রোডমার্চ শুরু করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মৎস্য ভবন পর্যন্ত র্যালি করে এ কর্মসূচি শুরু করেন মঞ্চের নেতাকর্মীরা। ৭ জুন রংপুরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চ শেষ হবে এবং সেখান থেকে আন্দোলনে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মৎস্য ভবন থেকে ৮-৭টি মাইক্রোবাস নিয়ে যাত্রা শুরু হয় গণতন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চ কর্মসূচি। এতে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ছাড়াও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ শহিদুল ইসলাম বাবুল, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ রয়েছেন।
১৪ দফা দাবিতে ডিসেম্বর থেকে গণতন্ত্র মঞ্চ গণমিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রা করার পর ঢাকার বাইরে এটি তাদের প্রথম কর্মসূচি। ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুরে তারা প্রথম সমাবেশ করে গাজীপুর চৌরাস্তায়। এরপর বিকাল ৪টায় টাঙ্গাইলের করাতিপাড়া বাইপাস মোড়ে সমাবেশ করতে না পেরে রোডমার্চের বহর শহরের অদূরে সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা মাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে হইচই শুরু করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রোডমার্চের নেতারা মাজার এলাকা থেকে বের হয়ে বাইরে চলে আসেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এ সময় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা রোডমার্চ করছি গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর-এসব বিষয়ে মানুষ যে ঐক্যবদ্ধ, সেটা সরকার বুঝতে পারছে। তাই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ভয় পেয়ে তারা নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করছে। এখানে কর্মসূচি পালনে আমরা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম-অন্যত্র তারা স্থান ঠিক করে দিক। পুলিশ সে বিষয়ে কোনো সহযোগিতা দেয়নি। দ্বিতীয় দিন আজ বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জে শহিদ মিনারসংলগ্ন মুক্তি সোপানে এবং বিকাল ৪টায় বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলায় সমাবেশ করার কথা রয়েছে। তৃতীয় দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বগুড়ার সাতমাথায়, বিকাল ৪টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে, শেষ দিন বুধবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট চত্বরে এবং বিকাল ৪টায় রংপুর টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাবেশের মধ্য দিয়ে চার দিনের রোডমার্চ শেষ হবে।
এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক রোডমার্চের কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে রোডমার্চ সম্পন্ন করতে চাই। আশা করব, সরকার, সরকারি দল, প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের সহিংসতা, কোনো ধরনের উসকানি দেওয়া হবে না। যদি বাধা দেওয়া হয়, তার পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানের একটা বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। তার বক্তব্যে এটা পরিষ্কার বেরিয়ে এসেছে, তারা আরেকটা তামাশার নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, এটা বুঝতে পেরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই তারা নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি জারি করেছে। সরকারের থলের বিড়াল ইতোমধ্যে বেরিয়ে পড়েছে। তারা বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছেন। গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে তারা দেশ ও জনগণকে বাজি ধরছেন। এ ধরনের দায়িত্বহীন ও গণবিরোধী সরকার জনগণ মেনে নেবে না।
ভারতের নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের যে মানচিত্র স্থাপন করা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এখনো বাংলাদেশ সরকার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেনি। নিন্দা জানায়নি। ভারতের এই তৎপরতা এই অঞ্চলের দেশগুলোর স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে একটা উসকানি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023