ভিডিও পাঠাতেন প্রবাসী স্ত্রীর কাছে
অর্থের জন্য সন্তানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্যাতন বাবার
জুয়া এবং নেশার পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ এর বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে ১০ বছরের শিশুর প্রতি বাবার নৃশংস আচরণে। বাবা আব্দুল জলিল সৌদি প্রবাসী স্ত্রীর কাছ থেকে জুয়ার টাকা আদায় করতে নিজের ছেলেকে নির্মম নির্যাতন করতেন। স্ত্রী টাকা পাঠাতে দেরি করলেই ছেলেকে কখনো বালিশচাপা, কখনো গলায় রশি লাগিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতেন। আর ভিডিও করা শেষে ছেলেকে আধমরা অবস্থায় নামিয়ে আনতেন। পরে সেই ভিডিও তিনি পাঠিয়ে দিতেন সৌদি প্রবাসী স্ত্রী শারমীনের কাছে।
জুয়া ও নেশার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা না দিলে এভাবেই তিনি ছেলেকে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দিতেন। ভয়ে আব্দুল জলিলের তিন মেয়ে নানি এবং চাচার কাছে চলে যায়। আর ১০ বছর বয়সি ছেলেকে তিনি নিজের কাছে রেখে বদলে ফেলেন বাসা। ওই বাসার ঠিকানাও তিনি কাউকে দিতেন না। নতুন বাসায় ছেলের ওপর তিনি এভাবে চালাতেন নির্মম নির্যাতন। কোনো উপায় না দেখে আব্দুল জলিলের শাশুড়ি বকুল আক্তার গত বছর আদালতে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তের জন্য আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। মার্চে আব্দুল জলিলের স্ত্রী শারমীন আক্তারও সৌদি থেকে দেশে চলে আসেন। তিনি খোঁজখবর করেও ছেলের কোনো হদিস পাচ্ছিলেন না।
শারমীন আক্তার মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, তাদের বাড়ি শেরপুরে। তবে তিনি বাবা-মার সঙ্গে রামপুরা এলাকায় থাকতেন। আব্দুল জলিলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর তারা ডেমরা এলাকায় থাকতে শুরু করেন। তখন জলিলের ভাঙারির পাইকারি ব্যবসা ছিল। ব্যবসা ভালো হওয়ায় কিনেছিলেন জমি, দোকান ও ২০টির বেশি রিকশা। কিন্তু জুয়ার নেশায় জড়িয়ে সর্বহারা হয়ে যান জলিল। ধারদেনার কারণে উপায় না পেয়ে তারা রামপুরায় চলে আসেন। কিন্তু জুয়া এবং নেশার পাশাপাশি আব্দুল জলিলের পরনারীর প্রতি আসক্তি ছিল। শারমীনের দুই বোনও রেহাই পেতেন না আব্দুল জলিলের হাত থেকে। এ নিয়ে রামপুরায়ও নানা ঝামেলা হয়। এ অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে শারমীন আক্তার, দুবাই, ওমান, কাতারে প্রায় ৬ বছর গৃহকর্মীর কাজ করেন। যে টাকা উপার্জন করেছেন, সব টাকা জুয়া এবং নেশায় উড়িয়েছেন জলিল।
পিবিআই অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণের এএসপি সাগর সরকার যুগান্তরকে বলেন, তদন্তে নেমে যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচা এলাকা থেকে রোববার আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। এবং শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। শিশুটি পুলিশ এবং আদালতের কাছে তার বাবার ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে। সাগর সরকার বলেন, জুয়া এবং মাদক যে মানুষের জীবনে কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে এ ঘটনা এর একটি বড় উদাহরণ।
অর্থের জন্য সন্তানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্যাতন বাবার
ভিডিও পাঠাতেন প্রবাসী স্ত্রীর কাছে
ইকবাল হাসান ফরিদ
০৮ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
জুয়া এবং নেশার পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ এর বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে ১০ বছরের শিশুর প্রতি বাবার নৃশংস আচরণে। বাবা আব্দুল জলিল সৌদি প্রবাসী স্ত্রীর কাছ থেকে জুয়ার টাকা আদায় করতে নিজের ছেলেকে নির্মম নির্যাতন করতেন। স্ত্রী টাকা পাঠাতে দেরি করলেই ছেলেকে কখনো বালিশচাপা, কখনো গলায় রশি লাগিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতেন। আর ভিডিও করা শেষে ছেলেকে আধমরা অবস্থায় নামিয়ে আনতেন। পরে সেই ভিডিও তিনি পাঠিয়ে দিতেন সৌদি প্রবাসী স্ত্রী শারমীনের কাছে।
জুয়া ও নেশার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা না দিলে এভাবেই তিনি ছেলেকে মেরে ফেলবেন বলে হুমকি দিতেন। ভয়ে আব্দুল জলিলের তিন মেয়ে নানি এবং চাচার কাছে চলে যায়। আর ১০ বছর বয়সি ছেলেকে তিনি নিজের কাছে রেখে বদলে ফেলেন বাসা। ওই বাসার ঠিকানাও তিনি কাউকে দিতেন না। নতুন বাসায় ছেলের ওপর তিনি এভাবে চালাতেন নির্মম নির্যাতন। কোনো উপায় না দেখে আব্দুল জলিলের শাশুড়ি বকুল আক্তার গত বছর আদালতে মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তের জন্য আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন। মার্চে আব্দুল জলিলের স্ত্রী শারমীন আক্তারও সৌদি থেকে দেশে চলে আসেন। তিনি খোঁজখবর করেও ছেলের কোনো হদিস পাচ্ছিলেন না।
শারমীন আক্তার মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, তাদের বাড়ি শেরপুরে। তবে তিনি বাবা-মার সঙ্গে রামপুরা এলাকায় থাকতেন। আব্দুল জলিলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর তারা ডেমরা এলাকায় থাকতে শুরু করেন। তখন জলিলের ভাঙারির পাইকারি ব্যবসা ছিল। ব্যবসা ভালো হওয়ায় কিনেছিলেন জমি, দোকান ও ২০টির বেশি রিকশা। কিন্তু জুয়ার নেশায় জড়িয়ে সর্বহারা হয়ে যান জলিল। ধারদেনার কারণে উপায় না পেয়ে তারা রামপুরায় চলে আসেন। কিন্তু জুয়া এবং নেশার পাশাপাশি আব্দুল জলিলের পরনারীর প্রতি আসক্তি ছিল। শারমীনের দুই বোনও রেহাই পেতেন না আব্দুল জলিলের হাত থেকে। এ নিয়ে রামপুরায়ও নানা ঝামেলা হয়। এ অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে শারমীন আক্তার, দুবাই, ওমান, কাতারে প্রায় ৬ বছর গৃহকর্মীর কাজ করেন। যে টাকা উপার্জন করেছেন, সব টাকা জুয়া এবং নেশায় উড়িয়েছেন জলিল।
পিবিআই অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণের এএসপি সাগর সরকার যুগান্তরকে বলেন, তদন্তে নেমে যাত্রাবাড়ীর বিবির বাগিচা এলাকা থেকে রোববার আব্দুল জলিলকে গ্রেফতার করা হয়। এবং শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। শিশুটি পুলিশ এবং আদালতের কাছে তার বাবার ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে। সাগর সরকার বলেন, জুয়া এবং মাদক যে মানুষের জীবনে কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে এ ঘটনা এর একটি বড় উদাহরণ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023