বরিশাল সিটি নির্বাচন
২৯ ভাগ প্রার্থী মাধ্যমিকের নিচে
বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৬৮ জন মেয়র ও কাউন্সিলের ২৯ ভাগই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করতে পারেনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে এবারে স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থীর হার কমেছে। ২০১৮ সালে স্বল্প শিক্ষিতের হার ছিল ৫৭ দশমিক ৩৫ ভাগ, যা এবার ৪৬ দশমিক ৭ ভাগ। প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। বুধবার দুপুরে কীর্তনখোলা মিলনায়তনে সুজন জেলা ও মহানগর কমিটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এবারের বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৬৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন প্রার্থী ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে ৩ জন নারী সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দিলীপ কুমার বলেন, এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীর হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০১৮ সালের ২৬ দশমিক ৪৭ ভাগ থেকে ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই হার দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ১৩ ভাগ। বরিশাল সিটিতে ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য লক্ষ করা যাচ্ছে।
এই প্রবণতা নির্বাচনে অর্থের ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষণ বলে অনেকে মনে করেন। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ীদের আধিক্য এবং অন্যান্য পেশার প্রতিনিধিত্ব হ্রাস পাওয়া ইতিবাচক নয়। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্যও মঙ্গলজনক নয়। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফৌজদারি মামলাসংশ্লিষ্ট প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্প আয়ের প্রার্থীর হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৭৫ ভাগ। এই নির্বাচনে তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৬৫ দশমিক ৮৭ ভাগ। অন্যদিকে ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় কম সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৫৮ দশমিক ৮ ভাগ প্রার্থী ছিলেন ৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক। এবারের এই হার ২৯ দশমিক ৩৪ ভাগ। অন্যদিকে বিগত নির্বাচনে কোটিপতির হার ৮ দশমিক ৮ ভাগ থাকলেও এবারের নির্বাচনে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৩৭ ভাগ। বিশ্লেষণে বলা যায়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্বল্প সম্পদের মালিকদের হার যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনই অধিক সম্পদের মালিকদের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর প্রার্থীদের সম্পদের হিসাবের যে চিত্র উঠে এসেছে, তাকে কোনোভাবেই সম্পদের প্রকৃত চিত্র বলা যায় না। কেননা প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিটি সম্পদের মূল্য উল্লেখ করেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বরিশালে দায়দেনাগ্রস্ত প্রার্থীর হার বিগত নির্বাচনের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়দেনার হার ছিল ১১ দশমিক ৭৬ ভাগ। এবারের নির্বাচনে যা ১৬ দশমিক ৭৭ ভাগ। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে সর্বশেষ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৮০ টাকা কর প্রদান করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন। এছাড়া ১১৮ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৪৯ জন (৪১ দশমিক ৫৩ ভাগ) আয়কর প্রদান করেছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১১নং ওয়ার্ডের মজিবর রহমান ১৮ লাখ টাকার ওপরে আয়কর প্রদান করেছেন। ৪২ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে আয়কর প্রদান করেছেন ৮ জন ১৯ দশমিক ৫ ভাগ। এই ৮ জনের মধ্যে ৭ জনই ৮৭ দশমিক ৫০ ভাগ কর প্রদান করেন ৫ হাজার টাকা বা তার কম। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৩৮৬ টাকা কর প্রদান করেছেন ৫নং ওয়ার্ডের ইসরাত জাহান।
অধ্যাপক গাজী জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সুজন বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
২৯ ভাগ প্রার্থী মাধ্যমিকের নিচে
বরিশাল সিটি নির্বাচন
বরিশাল ব্যুরো
০৮ জুন ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১৬৮ জন মেয়র ও কাউন্সিলের ২৯ ভাগই মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করতে পারেনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে এবারে স্বল্পশিক্ষিত প্রার্থীর হার কমেছে। ২০১৮ সালে স্বল্প শিক্ষিতের হার ছিল ৫৭ দশমিক ৩৫ ভাগ, যা এবার ৪৬ দশমিক ৭ ভাগ। প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। বুধবার দুপুরে কীর্তনখোলা মিলনায়তনে সুজন জেলা ও মহানগর কমিটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, এবারের বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৬৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন প্রার্থী ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪২ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে ৩ জন নারী সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দিলীপ কুমার বলেন, এবার উচ্চশিক্ষিত প্রার্থীর হার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে ২০১৮ সালের ২৬ দশমিক ৪৭ ভাগ থেকে ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই হার দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ১৩ ভাগ। বরিশাল সিটিতে ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য লক্ষ করা যাচ্ছে।
এই প্রবণতা নির্বাচনে অর্থের ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষণ বলে অনেকে মনে করেন। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ব্যবসায়ীদের আধিক্য এবং অন্যান্য পেশার প্রতিনিধিত্ব হ্রাস পাওয়া ইতিবাচক নয়। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্যও মঙ্গলজনক নয়। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে ফৌজদারি মামলাসংশ্লিষ্ট প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় ২০২৩ সালের নির্বাচনে স্বল্প আয়ের প্রার্থীর হার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালে এই হার ছিল ৭৫ ভাগ। এই নির্বাচনে তা হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৬৫ দশমিক ৮৭ ভাগ। অন্যদিকে ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় কম সম্পদের মালিকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হ্রাস পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৫৮ দশমিক ৮ ভাগ প্রার্থী ছিলেন ৫ লাখ টাকার কম সম্পদের মালিক। এবারের এই হার ২৯ দশমিক ৩৪ ভাগ। অন্যদিকে বিগত নির্বাচনে কোটিপতির হার ৮ দশমিক ৮ ভাগ থাকলেও এবারের নির্বাচনে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৩৭ ভাগ। বিশ্লেষণে বলা যায়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্বল্প সম্পদের মালিকদের হার যেমন হ্রাস পাচ্ছে, তেমনই অধিক সম্পদের মালিকদের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর প্রার্থীদের সম্পদের হিসাবের যে চিত্র উঠে এসেছে, তাকে কোনোভাবেই সম্পদের প্রকৃত চিত্র বলা যায় না। কেননা প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিটি সম্পদের মূল্য উল্লেখ করেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বরিশালে দায়দেনাগ্রস্ত প্রার্থীর হার বিগত নির্বাচনের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়দেনার হার ছিল ১১ দশমিক ৭৬ ভাগ। এবারের নির্বাচনে যা ১৬ দশমিক ৭৭ ভাগ। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে সর্বশেষ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৭ লাখ ২৯ হাজার ৬৮০ টাকা কর প্রদান করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন। এছাড়া ১১৮ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৪৯ জন (৪১ দশমিক ৫৩ ভাগ) আয়কর প্রদান করেছেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১১নং ওয়ার্ডের মজিবর রহমান ১৮ লাখ টাকার ওপরে আয়কর প্রদান করেছেন। ৪২ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে আয়কর প্রদান করেছেন ৮ জন ১৯ দশমিক ৫ ভাগ। এই ৮ জনের মধ্যে ৭ জনই ৮৭ দশমিক ৫০ ভাগ কর প্রদান করেন ৫ হাজার টাকা বা তার কম। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৩৮৬ টাকা কর প্রদান করেছেন ৫নং ওয়ার্ডের ইসরাত জাহান।
অধ্যাপক গাজী জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সুজন বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023