বুড়িচংয়ে মায়ের পাশে পড়ে ছিল মেয়ের লাশও

হোমনায় এক রশিতে মা-ছেলের লাশ
 কুমিল্লা ব্যুরো, বুড়িচং ও হোমনা প্রতিনিধি 
০৯ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার গোপীনাথপুরে নিজ ঘর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া হোমনায় উপজেলার ভাসানিয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া থেকে একই রশিতে মা ও ছেলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ দুটি ঘটনা ঘটে। চারটি লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুড়িচংয়ের ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুল হক বলেন- গোপীনাথপুরের শাহজাহানের ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী আবুল কালামের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে একই উপজেলার বারেশ্বর গ্রামের মো. মোস্তাফার মেয়ে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। পাঁচ মাস আগে আবুল কালাম ছুটি শেষ করে সিঙ্গাপুর যান। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য আবদুল হক আরও জানান, জান্নাত আক্তার ও তার চার বছরের শিশুসন্তান হাজেরা বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় শাশুড়ি ঘরের দরজায় ডাকতে থাকেন। দীর্ঘক্ষণ কোনো শব্দ না পেয়ে বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনেন। স্থানীয়া ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে লাশ দুটি দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন।

বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, সকাল ১০টায় পুলিশ গিয়ে দেখে ঘরের বিছানায় একটি শিশুর লাশ পরে আছে। পাশেই ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলন্ত ছিল শিশুর মা। তিনি আরও বলেন, শিশুটির গলায় তার প্যাঁচানো ছিল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঝগড়া করে শিশু সন্তানকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছে। জান্নাতের মা-বাবা ও পরিবারের দাবি- স্বামী ও তার শ্বশুড় বাড়ির লোকজন জান্নাতকে নির্যাতন করতেন। তিনি তাদের নির্যাতন সইতে না পেরে সন্তানকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেন। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে মা ওই শিশুকে হত্যা করে। পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। পারিবারিক কলহের জেরে এমনটা হতে পারে। এছাড়া হোমনায় ঝুলন্ত লাশগুলো ফকিরপাড়ার জজ মিয়ার ছেলে বাবু মিয়ার স্ত্রী সাজিদা আক্তার ও তাদের তিন বছর বয়সি ছেলে মো. আব্দুল্লাহর। হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একই রশি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করেছে। তাদের মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, মারা যাওয়া সাজিদার স্বামী বাবু ও তার মা রফিজা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। বাবু বলছে, তাদের আগে ঝগড়া হয়েছে। এখন কোনো ঝগড়া নেই। তাহলে কেন এমন ঘটনা ঘটল তা জানতে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন