যা বললেন খুলনার মেয়র প্রার্থী

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় আছি : মধু

 নুর ইসলাম রকি, খুলনা 
১১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনা সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু। তিনি বলেন, নির্বাচনের বাইরের পরিবেশ এক রকম এবং ভেতরেরটা অন্য রকম। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও প্রভাব বিস্তারে মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসতে ভয় পাচ্ছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলায় একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে ভোটের যে পরিবেশ তৈরি হয়, এবার সেই পরিবেশ নেই। ফলে এই নির্বাচন যে প্রশ্নবিদ্ধ তা শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছে। শনিবার নগরীর ডাকবাংলার মোড়ে জাতীয় পার্টির কার্যাঠয়ে যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে আপনার আশঙ্কার জায়গা কোনটি এমন প্রশ্নের জবাবে মধু বলেন, বাধা তো আছেই। বিএনপি তাদের নেতাকর্মীদের ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা দিচ্ছে। সাধারণ ভোটার যারা তারাও এতে প্রভাবিত হবে। দেশে একটি পক্ষ চাচ্ছে ভোটাররা কেন্দ্রে আসুক, অপরপক্ষ চাচ্ছে না আসুক। তাহলে কী দাঁড়াল? ভোটের পরিবেশটা কি সুন্দর রয়েছে? অথচ সেই পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল সরকারের। সেই কাজটা তারা করতে পারেনি। তিনি বলেন, দৌলতপুর থানা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেনকে মারধর করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মুহূর্তের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে শহরের অন্য প্রান্তে। এতে সাধারণ ভোটারের পাশাপাশি আমার অন্য কর্মী-সমর্থকরাও তো ভয় পাবে-এটাই স্বাভাবিক। মোট কথা সুষ্ঠু ভোটের যে পরিবেশ সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হতে যাচ্ছে-এমন আশঙ্কার কথা জানান শফিকুল ইসলাম মধু। তিনি বলেন, আগের মতো একজনের ভোট আরেকজনকে দিয়ে দেওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। আমি আশা করব নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তা হতে দেবে না।

জাতীয় পার্টির এ প্রার্থী বলেন, হঠাৎ করেই খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে বদলি করা হয়েছে। তিনি একটি অনুষ্ঠানে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, এখানে গণতন্ত্রের ‘গ’ও নেই। এরপর তাকে খুলনা থেকে বদলি করা হয়। তিনি বলেন, সরকারি দলের কথা না শুনলে, তার পক্ষে গান না গাইলে বদলি করে দেবেন, বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাবেন তা হতে পারে না। একজন সরকারি কর্মকর্তা জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেয় সে তো ন্যায়ের পক্ষে কাজ করবে।

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে তা হলে লাঙ্গল প্রতীকের জয় হবে। খুলনা সিটিতে সাড়ে ৫ লাখের মতো ভোট রয়েছে। এখানে ৩৫ শতাংশের মতো ভোট পড়বে কি না আমার সন্দেহ রয়েছে। সাধারণ মানুষ তো ভয় পাচ্ছে। তারপরও আমি মিডিয়ার মাধ্যমে ভোটারদের মেসেজ দিতে চাই যে, আপনারা ভোট কেন্দ্রে যান। সুষ্ঠু ভোট হলে, ভোটে প্রশাসন মাথা না ঢোকালে আমি বিজয়ী হব।

জনগণের জন্য আপনার মেসেজ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনার উন্নয়ন শুরু হয়েছে জাতীয় পার্টির আমল থেকে। খুলনার বড় বড় স্থাপনা যেমন-খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা ইউনিভার্সিটি, শহরে সোডিয়াম বাতি স্থাপন, খুলনার বড় বড় রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ সবকিছুর উন্নয়ন শুরু হয়েছে পল্লীবন্ধুর হাত ধরে। সুতরাং লাঙ্গল জিতলে জয় হবে জনগণের। উন্নয়ন বুঝে নিতে পারবে মানুষ।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন