চালকদের ডোপ টেস্ট
মহাসড়কগুলোতেও এ কার্যক্রম চালু করতে হবে
সম্পাদকীয়
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মাদকাসক্ত চালকদের ধরতে ঢাকার সড়কে ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যৌথসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে।
উদ্যোগটি ভালো সন্দেহ নেই; তবে সড়ক দুর্ঘটনা যেহেতু শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ নয়, সারা দেশেই এটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেহেতু এ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে দেশের সব মহাসড়কে চালু করা উচিত বলে মনে করি আমরা।
সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ চালকের মাদকাসক্তি। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর মতে, রাজধানীর ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাস চালকই মাদকাসক্ত।
মাদকাসক্ত চালকদের বাস চালানো প্রতিরোধ করা জরুরি বটে। এ লক্ষ্যেই সড়কে চালকদের মূত্র পরীক্ষা বা ডোপ টেস্ট করা হবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে।
পরীক্ষায় মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে ওই চালকের লাইসেন্স বাতিল করা হবে এবং তাকে সরাসরি জেলে পাঠানো হবে। কাজেই চালকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিতে মালিকদের এখনই তৎপর হতে হবে।
ডোপ টেস্টের পাশাপাশি দুর্ঘটনার অন্য কারণগুলোও দূর করা প্রয়োজন। রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ চুক্তিতে বাস চালানো। মালিকদের এ প্রবণতার কারণে চালকরা সবসময় ‘টার্গেটের’ চাপে থাকেন। এর ফলে সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিযোগিতা।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বেপরোয়া প্রতিযোগিতার কারণে। সরকার ইতিপূর্বে চুক্তিতে বাস চালানো বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেন বাস্তবায়িত হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়।
চুক্তিতে বাস চালানোর প্রবণতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে মনে করি আমরা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গত বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
নির্দেশনাগুলো হল- দূরপাল্লার গাড়িতে বিকল্প চালক রাখা, একজন চালকের পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানো, চালক ও তার সহকারীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর সড়কের পাশে সার্ভিস সেন্টার বা বিশ্রামাগার তৈরি করা, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা বা সিগন্যাল মেনে পথচারী পারাপারে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবহার এবং চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধা নিশ্চিত করা। এসব নির্দেশনার বাস্তবায়নেও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
চালকদের ডোপ টেস্ট
মহাসড়কগুলোতেও এ কার্যক্রম চালু করতে হবে
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মাদকাসক্ত চালকদের ধরতে ঢাকার সড়কে ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যৌথসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর হবে।
উদ্যোগটি ভালো সন্দেহ নেই; তবে সড়ক দুর্ঘটনা যেহেতু শুধু রাজধানীতে সীমাবদ্ধ নয়, সারা দেশেই এটি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেহেতু এ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে দেশের সব মহাসড়কে চালু করা উচিত বলে মনে করি আমরা।
সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ চালকের মাদকাসক্তি। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর মতে, রাজধানীর ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাস চালকই মাদকাসক্ত।
মাদকাসক্ত চালকদের বাস চালানো প্রতিরোধ করা জরুরি বটে। এ লক্ষ্যেই সড়কে চালকদের মূত্র পরীক্ষা বা ডোপ টেস্ট করা হবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে।
পরীক্ষায় মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে ওই চালকের লাইসেন্স বাতিল করা হবে এবং তাকে সরাসরি জেলে পাঠানো হবে। কাজেই চালকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিতে মালিকদের এখনই তৎপর হতে হবে।
ডোপ টেস্টের পাশাপাশি দুর্ঘটনার অন্য কারণগুলোও দূর করা প্রয়োজন। রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ চুক্তিতে বাস চালানো। মালিকদের এ প্রবণতার কারণে চালকরা সবসময় ‘টার্গেটের’ চাপে থাকেন। এর ফলে সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিযোগিতা।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বেপরোয়া প্রতিযোগিতার কারণে। সরকার ইতিপূর্বে চুক্তিতে বাস চালানো বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেন বাস্তবায়িত হয়নি তা আমাদের বোধগম্য নয়।
চুক্তিতে বাস চালানোর প্রবণতা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে মনে করি আমরা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গত বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ ছয় দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
নির্দেশনাগুলো হল- দূরপাল্লার গাড়িতে বিকল্প চালক রাখা, একজন চালকের পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি না চালানো, চালক ও তার সহকারীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর সড়কের পাশে সার্ভিস সেন্টার বা বিশ্রামাগার তৈরি করা, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে রাস্তা পারাপার বন্ধ করা বা সিগন্যাল মেনে পথচারী পারাপারে জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবহার এবং চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধা নিশ্চিত করা। এসব নির্দেশনার বাস্তবায়নেও নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।