পর্বতারোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু
সড়কব্যবস্থার এই হাল কি অপরিবর্তনীয়?
অনলাইন ডেস্ক
০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নার মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। শুক্রবার সকালে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনের লেক রোডে এক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। রেশমা লেক রোড ধরে গণভবনমুখী সড়ক দিয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে এগোচ্ছিলেন।
এ সময় চন্দ্রিমা উদ্যানে ঢোকার ব্রিজের সামনের সড়কে একটি মাইক্রোবাস তার বাইসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ছিটকে পড়ে যান রেমশা। পথচারীরা তাকে নিকটবর্তী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেশমা কোনো সাধারণ নারী ছিলেন না। তিনি একজন পর্বতারোহী এবং একবুক আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠবেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেওকারাডংয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার পর্বত অভিযান। এরপর ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে উচ্চতর পর্বতারোহণ কোর্স সম্পন্ন করার পর তিনি ভারতের লাদাখে অবস্থিত স্টক কাঙরি পর্বত এবং কাং ইয়াতসে-২ পর্বতে সফলভাবে আরোহণ করেন।
এ দুটি পর্বতেরই উচ্চতা ছয় হাজারের মিটারের বেশি। তবে রেশমার অভীষ্ট লক্ষ্য ছিল এভারেস্ট বিজয়ের। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন; কিন্তু ঘাতক মাইক্রোবাস তার সেই স্বপ্ন ধুলায় লুটিয়ে দেয়। এ এক বড় ট্র্যাজেডি যে, আমাদের এক নারী, যিনি একের পর এক উচ্চতা ভাঙছিলেন, তাকেই কিনা মাটিতে প্রাণ হারাতে হল! এভারেস্ট আরোহণ করার সময় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত, সে ক্ষেত্রে হয়তো আফসোসের তেমন কিছু থাকত না; কিন্তু রাজধানীর পিচঢালা পথে তার মৃত্যু মেনে নেয়া কষ্টকর। রেশমা শুধু একজন পর্বতারোহীই ছিলেন না, সাংস্কৃতিক জগতেও তিনি ছিলেন এক পরিচিত মুখ। আবৃত্তি, গান, পাঠচক্রে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। তার মৃত্যুতে জাতি তার এক যোগ্য নারীকে হারিয়েছে।
রেশমার মৃত্যু আমাদের সড়কব্যবস্থার এক দুঃখজনক চিত্র ফুটিয়ে তোলে। রাজধানীসহ দেশের সড়কগুলোয় প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় কখনও মৃত্যুবরণ করেন সাধারণ মানুষ, কখনও বা কীর্তিমান ব্যক্তি। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু থেকে আমাদের কবে মুক্তি মিলবে, তা কেউ বলতে পারে না। রেশমার মৃত্যু আমাদের তাগিদ দেয় সড়ক ব্যবস্থাপনার মান উন্নত করার। তা না হলে আমরা একের পর এক হারাতেই থাকব সাধারণ ও অসাধারণ সব মানুষ।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
পর্বতারোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু
সড়কব্যবস্থার এই হাল কি অপরিবর্তনীয়?
পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্নার মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। শুক্রবার সকালে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকার চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনের লেক রোডে এক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। রেশমা লেক রোড ধরে গণভবনমুখী সড়ক দিয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে এগোচ্ছিলেন।
এ সময় চন্দ্রিমা উদ্যানে ঢোকার ব্রিজের সামনের সড়কে একটি মাইক্রোবাস তার বাইসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ছিটকে পড়ে যান রেমশা। পথচারীরা তাকে নিকটবর্তী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেশমা কোনো সাধারণ নারী ছিলেন না। তিনি একজন পর্বতারোহী এবং একবুক আশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠবেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কেওকারাডংয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল তার পর্বত অভিযান। এরপর ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। এরপর ২০১৯ সালে উচ্চতর পর্বতারোহণ কোর্স সম্পন্ন করার পর তিনি ভারতের লাদাখে অবস্থিত স্টক কাঙরি পর্বত এবং কাং ইয়াতসে-২ পর্বতে সফলভাবে আরোহণ করেন।
এ দুটি পর্বতেরই উচ্চতা ছয় হাজারের মিটারের বেশি। তবে রেশমার অভীষ্ট লক্ষ্য ছিল এভারেস্ট বিজয়ের। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন; কিন্তু ঘাতক মাইক্রোবাস তার সেই স্বপ্ন ধুলায় লুটিয়ে দেয়। এ এক বড় ট্র্যাজেডি যে, আমাদের এক নারী, যিনি একের পর এক উচ্চতা ভাঙছিলেন, তাকেই কিনা মাটিতে প্রাণ হারাতে হল! এভারেস্ট আরোহণ করার সময় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত, সে ক্ষেত্রে হয়তো আফসোসের তেমন কিছু থাকত না; কিন্তু রাজধানীর পিচঢালা পথে তার মৃত্যু মেনে নেয়া কষ্টকর। রেশমা শুধু একজন পর্বতারোহীই ছিলেন না, সাংস্কৃতিক জগতেও তিনি ছিলেন এক পরিচিত মুখ। আবৃত্তি, গান, পাঠচক্রে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি। তার মৃত্যুতে জাতি তার এক যোগ্য নারীকে হারিয়েছে।
রেশমার মৃত্যু আমাদের সড়কব্যবস্থার এক দুঃখজনক চিত্র ফুটিয়ে তোলে। রাজধানীসহ দেশের সড়কগুলোয় প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় কখনও মৃত্যুবরণ করেন সাধারণ মানুষ, কখনও বা কীর্তিমান ব্যক্তি। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু থেকে আমাদের কবে মুক্তি মিলবে, তা কেউ বলতে পারে না। রেশমার মৃত্যু আমাদের তাগিদ দেয় সড়ক ব্যবস্থাপনার মান উন্নত করার। তা না হলে আমরা একের পর এক হারাতেই থাকব সাধারণ ও অসাধারণ সব মানুষ।